Advertisement
২১ মে ২০২৪

দুষ্কর্ম রুখতে ৪৫৮টি ক্যামেরা 

বর্ধমান শহর তো বটেই, জেলা জুড়েই বিক্ষিপ্ত ভাবে সিসিটিভি লাগিয়েছে পুরসভা, ব্যবসায়ীরা। কিন্তু সেই ক্যামেরাগুলি উন্নত মানের নয় বলে অনেক সময় ছবি দেখে দুষ্কৃতীদের চেনা মুশকিল হয়ে যায় পুলিশের। অথচ এমন অনেক ঘটনা রয়েছে যেখানে সিসিটিভি না থাকলে নাজেহাল হতে হয় তদন্তকারী অফিসারদের।

—প্রতীকী ছবি।

—প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বর্ধমান শেষ আপডেট: ২৫ নভেম্বর ২০১৮ ০৭:২০
Share: Save:

তখনও সন্ধে গড়িয়ে রাত হয়নি। বর্ধমানের মহারাজা উদয়চাঁদ মহিলা কলেজের সামনের গয়না প্রস্তুতকারক একটি দোকান থেকে বেরিয়ে মোটরবাইক নিয়ে মিঠাপুকুরের গলির দিকে চলে যায় দু’জন। ক্লোজড-সার্কিট টিভির (সিসিটিভি) ছবি অস্পষ্ট হওয়ায় বেশ কয়েক মাস কেটে গেলেও ওই দুই ‘ছিনতাইবাজে’র সন্ধান পায়নি পুলিশ।

বর্ধমান শহর তো বটেই, জেলা জুড়েই বিক্ষিপ্ত ভাবে সিসিটিভি লাগিয়েছে পুরসভা, ব্যবসায়ীরা। কিন্তু সেই ক্যামেরাগুলি উন্নত মানের নয় বলে অনেক সময় ছবি দেখে দুষ্কৃতীদের চেনা মুশকিল হয়ে যায় পুলিশের। অথচ এমন অনেক ঘটনা রয়েছে যেখানে সিসিটিভি না থাকলে নাজেহাল হতে হয় তদন্তকারী অফিসারদের। বিশেষ করে জাতীয় সড়ক, রাজ্য সড়ক-সহ বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ রাস্তায় সিসি ক্যামেরা না থাকলে দুর্ঘটনার পরবর্তী তদন্তে পুলিশকে অসুবিধার মুখে পড়তে হয়। ওই সব রাস্তায় অনেক সময় রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার হয়। পুলিশ ‘খুন’ বুঝতে পারলেও শেষ পর্যন্ত ঘটনার কিনারা হয় না। পুলিশের দাবি, এ ক্ষেত্রে সিসিটিভি অনেকটাই সুরাহা করতে পারে। নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করার জন্য এ বার তাই জেলা জুড়ে পূর্ণাঙ্গ ক্যামেরা-পরিকাঠামো (ইন্টেলিজেন্ট সার্ভেল্যান্স সিস্টেম) তৈরি করতে চলেছে জেলা পুলিশ।

জেলা পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায় বলেন, “পুলিশেরই একটি বিভাগ ক্যামেরা-পরিকাঠামো সংক্রান্ত বিষয়ে সরেজমিন তথ্য সংগ্রহ করে গিয়েছে।’’ সম্প্রতি পুলিশ সুপার দফতরে এ ব্যাপারে কন্ট্রোল রুমও খোলা হয়েছে। সেখান থেকেই ক্যামেরাগুলির উপর তদারকি করা হবে। জানা গিয়েছে, গোটা জেলায় ১১২টি পয়েন্টে ৪৫৮টি ক্যামেরা লাগানোর প্রস্তাব দিয়েছে পুলিশের আবাসন বিভাগ। তারাই ওই ক্যামেরাগুলি লাগানোর বরাত পেয়েছে। পুলিশ জানায়, প্রযুক্তির দিক দিয়ে উন্নত হওয়ায় এই নতুন ক্যামেরাগুলি দিয়ে যে কোনও অপরাধমূলক কাজের তদন্ত করতে সুবিধা হবে। জেলা পুলিশের এক কর্তা জানান, নতুন ক্যামেরাগুলিতে ফুটেজ অনেকদিন রাখা যাবে। তা ছাড়া ৪৫৮টি ক্যামেরার মধ্যে ২০৮টি ক্যামেরা ‘হাই ডেফিনেশন’। এর মধ্যে ১০১টি হল ‘নাইট ভিশন’ ক্যামেরা। ফলে রাতের ছবিও স্পষ্ট দেখা যাবে। জানা গিয়েছে, বর্ধমান শহরের ২৬টি জায়গায় ৮৮টি ক্যামেরা লাগানো হবে। দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ের উপর বেশ কয়েকটি ক্যামেরা লাগানো হবে। আবার শক্তিগড়ের আমড়ায় ল্যাংচা দোকানের সামনে ৬টি জায়গায় ১০টি ক্যামেরা থাকবে। এ ছাড়াও গলসিতে ৬টি জায়গায় ১৪টি ক্যামেরা, আউশগ্রামের ৭টি জায়গায় ১৪টি ক্যামেরা লাগানো হচ্ছে। বর্ধমান-কাটোয়া রোডের উপর ভাতারের বলগোনা, ছ’মাইল, ভাতার বাজারেও ১১টি ক্যামেরা বসবে। মেমারি থানার ৬টি জায়গার ১৮টি ক্যামেরা, কাটোয়া ও কালনায় ৬টি জায়গায় যথাক্রমে ২২টি ও ১৮টি ক্যামেরা বসবে। জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বর্ধমান সদর) প্রিয়ব্রত রায় বলেন, “এতে দুর্ঘটনাজনিত তদন্তের কাজ, অপরাধমূলক কাজের তদন্তে সুবিধা হবে। পাশাপাশি ট্র্যাফিক নিয়ন্ত্রণের কাজও সহজে হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

CCTV Crime Police
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE