Advertisement
E-Paper

হুমায়ুন একা নন, ভুয়ো আইপ্যাক কর্মী অঞ্জন টোপ দেন আসানসোলেরও একাধিক তৃণমূল নেতাকে!

আসানসোলের নেতা ভি শিবদাসন দাসু এবং প্রাক্তন বিধায়ক সোহরাব আলিকেও ‘লোভনীয়’ পদ পাইয়ে দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিলেন ধৃত অঞ্জন সরকার। কিন্তু নেতাদের দাবি, তাঁরা বিষয়টিতে আমল দেননি।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১২:২৮
ভুয়ো আইপ্যাক কর্মী ‘টোপ’ দিয়েছিলেন আসানসোলের তৃণমূল নেতাদেরও!

ভুয়ো আইপ্যাক কর্মী ‘টোপ’ দিয়েছিলেন আসানসোলের তৃণমূল নেতাদেরও! — গ্রাফিক: সনৎ সিংহ

মন্ত্রী হতে গিয়ে ৮৬ হাজার টাকা খুইয়েছেন মুর্শিদাবাদের ভরতপুরের তৃণমূল বিধায়ক হুমায়ুন কবীর। তাঁরই অভিযোগের ভিত্তিতে গ্রেফতার হয়েছেন ভুয়ো আইপ্যাক কর্মী অঞ্জন সরকার। আর তাঁর গ্রেফতারির খবর প্রকাশ্যে আসতেই অঞ্জনের আরও কীর্তি আসছে প্রকাশ্যে। শুধু মুর্শিদাবাদই নয়, নিজেকে ‘হর্তাকর্তা’ পরিচয় দিয়ে নানা পদ পাইয়ে দেওয়ার টোপ অঞ্জন দিয়েছিলেন আসানসোলের একাধিক তৃণমূল নেতাকেও। তবে, অঞ্জনের খপ্পরে পড়া নেতাদের সমস্বরে দাবি, হুমায়ুন টাকা দিয়ে ফেললেও, আসানসোলের কেউই অঞ্জনের পাতা ফাঁদে পা দিয়ে টাকা দেননি।

ভরতপুরের বিধায়ক হুমায়ুনই শুধু নন। অভিযোগ, আসানসোলের দাপুটে তৃণমূল নেতা তথা দলের রাজ্য সম্পাদক ভি শিবদাসন দাসু এবং প্রাক্তন বিধায়ক সোহরাব আলিকেও ফোন করে প্রলোভন দেখিয়েছিলেন অঞ্জন। বর্তমানে তাঁর বাড়ি উত্তর ২৪ পরগনার মধ্যমগ্রামে হলেও অঞ্জনের আদি বাড়ি ছিল আসানসোলের নিয়ামতপুরে। সেখানে এখনও তাঁর দাদা থাকেন। তবে দাদার সঙ্গে অঞ্জনের এখন সম্পর্ক নেই বলে স্থানীয় সূত্রে দাবি। আসানসোলে থাকাকালীন স্থানীয় একটি সংবাদমাধ্যমের সঙ্গেও তিনি জড়িত ছিলেন। শোনা যায়, কয়লা মাফিয়াদের সঙ্গেও সে সময় তাঁর ভাল যোগাযোগ তৈরি হয়। সূত্রের খবর, আসানসোল থেকে কলকাতায় গিয়ে একটি নিউজ চ্যানেল খুলেছিলেন অঞ্জন। দলীয় সহকর্মী হুমায়ুনের ঠকে যাওয়ার ঘটনা শুনে শিবদাসন বলেন, ‘‘আমাকেও কয়েক বার ফোন করে দলের অনেক বড় জায়গায় পদ দিয়ে দেবেন বলে দাবি করেছিলেন অঞ্জন। কিন্তু আমি কয়েক বার ফোন পাওয়ার পর তাঁকে স্পষ্ট জানাই, আর যেন তিনি ফোন করে আমাকে বিরক্ত না করেন।’’ কিন্তু শিবদাসনের দাবি, তাতেও না শোনায় তাঁকে জোর গলায় হুমকি দিয়ে বলেছিলেন, ‘‘যদি আর ফোন করেন তা হলে থানায় অভিযোগ জানাতে বাধ্য হব। এ কথা শুনে আমাকে আর ফোন করেননি অঞ্জন।’’

কয়েক মাস আগে প্রাক্তন বিধায়ক সোহরাব আলিও পেয়েছিলেন অঞ্জনের ফোন। তিনি বলেন, ‘‘কয়েক মাস আগে আমাকে ফোন করে বলেছিলেন, দলের জেলা সভাপতি করে দেওয়া হবে। তাতে কর্ণপাত করিনি।’’ সোহরাব তাঁকে বলেছিলেন, ‘‘এই ধরনের লোভ আমার নেই। আমি যেখানে আছি ভাল আছি। তাই এই ধরনের কথা আমাকে বলার প্রয়োজন নেই।’’

সোহরাবের বাড়িতে কয়েক মাস আগে আয়কর দফতর হানা হয়েছিল। তার কিছু দিন পরেই আবার সোহরাবের কাছে ফোন আসে অঞ্জনের। অঞ্জন সে বার সোহরাবকে বলেন, ‘‘আপনার পিছনে পড়ে গিয়েছে ইডি। যাতে আপনার কোনও ক্ষতি না হয়, তার সমস্ত ব্যবস্থা আমি করে দেব।’’ এ কথা শোনার পর সোহরাব তাঁকে ফোন করে বিরক্ত করতে বারণ করেন বলে দাবি। সোহবারের দাবি, তিনি অঞ্জনকে সেই সময় বলেছিলেন, ‘‘ইডি, সিবিআই— যাকে খুশি পাঠিয়ে দিন। কোনও সমস্যা নেই আমার। কিন্তু আপনি যদি আবার ফোন করেন বা এই ধরনের কথা বলে বিরক্ত করেন, তা হলে আমাকে থানায় আপনার বিরুদ্ধে অভিযোগ জানাতে হবে।’’ সোহরাবের দাবি, এ কথা শুনে অঞ্জন তাঁকে ফোন করে আর বিরক্ত করেননি।

অর্থাৎ শুধু মুর্শিদাবাদই নয়, রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে কোথাও আইপ্যাকের নামে, কোথাও সাংবাদিক পরিচয়ে, আবার কোথাও অন্য কোনও প্রভাবশালীর নাম ভাঙিয়ে নেতাদের ঠকানোর চেষ্টা করেছিলেন এই অঞ্জন। বর্তমানে তাঁকে হেফাজতে নিয়েছে মুর্শিদাবাদ জেলা পুলিশ। ২ মার্চ পর্যন্ত তাঁর পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক। পুলিশ তদন্ত করে দেখছে রাজ্যে আরও কোথাও এই ধরনের ঘটনা তিনি ঘটিয়েছেন কি না।

Humayun kabir TMC IPAC Prashant Kishor
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy