Advertisement
০৩ মে ২০২৪
সুলতানপুরে খুনে ধৃত আরও এক

ঘটনাস্থলেই ছিলেন না, দাবি সাদেকের

মঙ্গলবার ফের ফোনে যোগাযোগ করা গেল কালনার সুলতানপুরে প্রধান-সহ দুই তৃণমূল কর্মী খুনে অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা সাদেক শেখের সঙ্গে। তাঁর দাবি, দু’পক্ষের রেষারেষিতে সে দিন হরিশঙ্করপুর মোড় অশান্ত হয়ে ওঠে ঠিকই। তবে তিনি ঘটনাস্থলে ছিলেনই না।

শনিবার সন্ধ্যায় এখানেই গুলি করা হয় দু’জনকে। নিজস্ব চিত্র

শনিবার সন্ধ্যায় এখানেই গুলি করা হয় দু’জনকে। নিজস্ব চিত্র

কেদারনাথ ভট্টাচার্য
কালনা শেষ আপডেট: ২৮ মার্চ ২০১৮ ০৩:১৬
Share: Save:

জোড়া খুনের মামলায় মূল অভিযুক্ত তিনি। পুলিশের খাতায় তিনি ফেরার। ঘটনার পরপর শনিবার রাতে তাঁর সঙ্গে ফোনে এক বার যোগাযোগ করা গিয়েছিল। তার পর থেকে ফোনেও পাওয়া যাচ্ছিল না তাঁকে। মঙ্গলবার ফের ফোনে যোগাযোগ করা গেল কালনার সুলতানপুরে প্রধান-সহ দুই তৃণমূল কর্মী খুনে অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা সাদেক শেখের সঙ্গে। তাঁর দাবি, দু’পক্ষের রেষারেষিতে সে দিন হরিশঙ্করপুর মোড় অশান্ত হয়ে ওঠে ঠিকই। তবে তিনি ঘটনাস্থলে ছিলেনই না।

সুলতানপুরের প্রধান সুকুর শেখ ও কালনা ১ পঞ্চায়েত সমিতির বন ও ভূমি কর্মাধ্যক্ষ সাদেকের গোষ্ঠীর মধ্যে কোন্দল চলছিল অনেক দিন ধরেই। দলীয় নেতৃত্ব নানা সময়ে উদ্যোগী হলেও তাতে রাশ পড়েনি। শনিবার বিকেলে সুলতানপুরে দুই গোষ্ঠী আলাদা ভাবে দু’টি বৈঠক করে বলে তৃণমূল সূত্রের খবর। বিকেলে হরিশঙ্করপুর মোড়ে সুকুর অনুগামীদের নিয়ে দোকানে চা খাওয়ার সময়ে চড়াও হয় কিছু দুষ্কৃতী। টাঙ্গির কোপ, গুলি করে খুন করা হয় সুকুর ও তাঁর অনুগামী বাপন শেখকে।

সুকুর ও বাপন, দু’জনের পরিবারের তরফেই পুলিশে যে অভিযোগ করা হয়েছে, তাতে মূল অভিযুক্ত হিসেবে নাম রয়েছে সাদেকের। সুকুরের ভাই মহম্মদ নাসের আলি শেখ পুলিশের কাছে অভিযোগ করেছেন, সাদেক ও মফিজুল শেখ নামে এক জন গুলি ছুড়ছিল সে দিন। সাদেক অবশ্য তা মানতে নারাজ।

সাদেক জানান, ঘটনার দিন তাঁরা পঞ্চায়েত ভবনের কাছে বেলেজলা এলাকায় একটি বৈঠক করেন। সেখানে পঞ্চায়েতের বাইরের নেতা হিসাবে হাজির ছিলেন জেলা পরিষদ সদস্য শান্তি চাল। প্রায় আড়াইশো কর্মী সেখানে জড়ো হন। বৈঠকে কারা ছিলেন, তা খাতায় লিখে রাখা হয়েছিল। সাদেকের দাবি, তিনি নিজে বৈঠকের শুরু থেকে হাজির ছিলেন না। পারিবারিক একটি বিয়ের অনুষ্ঠানের জন্য নানা কেনাকাটা সেরে বৈঠকে যোগ দেন। দোকানের সিসিটিভি ফুটেজ পরীক্ষা করলেই পুলিশ তাঁর কথার সত্যতা পাবে বলে মত সাদেকের।

সাদেকের দাবি, বৈঠক চলাকালীনই খবর আসে, বিকেল সাড়ে ৪টে থেকে ঘণ্টাখানেক বৈঠক চলে। তিনি ছিলেন শেষ মিনিট কুড়ি। অন্য পক্ষের লোকজন হরিশঙ্কর মোড়ে জড়ো হয়েছেন। এর পরেই তড়িঘড়ি বৈঠক শেষ করা হয়। সাদেক অভিযোগ করেন, বৈঠক থেকে ফেরা তাঁদের কিছু লোকজনের উপরে হরিশঙ্কর মোড়ে প্রথমে হামলা চালানো হয়। সে নিয়েই গণ্ডগোল বেধে যায়।

সাদেকের দাবি, তিনি বেলেজলা এলাকায় বৈঠক শেষে মেমারিতে এক আত্মীয়ের বাড়ি রওনা হন। পথে ময়নাগুড়ি এলাকায় খবর পান, হরিশঙ্করপুর মোড়ে গণ্ডগোল হয়েছে। তবে নিজে ঘটনাস্থলে না থাকায় কে বা কারা গুলি চালিয়েছে তা তাঁর জানা নেই বলে দাবি করেন সাদেক। বেলেজলায় বৈঠকের কারণ কী? সাদেকের বক্তব্য, ‘‘এলাকার কয়েকটি গ্রাম থেকে কিছু লোক বিজেপিতে ঝুঁকেছেন। তাদের আটকাতেই বৈঠক হচ্ছিল।’’ তাঁর আরও দাবি, ঘটনার পরে তিনি নিরাপত্তার অভাব বোধ করায় প্রকাশ্যে আসছেন না।

জোড়া খুনের ঘটনায় পুলিশ আরও এক জনকে গ্রেফতার করেছে। এ নিয়ে ধৃতের সংখ্যা দাঁড়াল পাঁচ। ধৃতের নাম আবদুল আলিম সেখ।তার বাড়ি রসুলপুর এলাকায়। এসডিপিও (কালনা) শান্তনু চৌধুরী বলেন, ‘‘বাকি অভিযুক্তেরা পলাতক। এলাকায় তল্লাশি চলছে।’’ প্রধানের মৃত্যুতে সুলতানপুর পঞ্চায়েতের প্রশাসনিক ক্ষমতা উপপ্রধানের হাতে দেওয়া হচ্ছে বলে মহকুমা প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

TMC Murder
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE