Advertisement
E-Paper

‘সাত হাজার রেখো’, ছাত্রকে বার্তা নেতার

সোমবার সন্ধ্যায় এক ছাত্র পুলিশে অভিযোগ করেন, হোয়াটস অ্যাপে কলেজের ছাত্রনেতা রমজান খান বলেন, ‘দুশ্চিন্তার কারণ নেই। আমি আছি তো। ভর্তি ফি বাদে আরও সাত হাজার টাকা তৈরি রেখো।

সুব্রত সীট

শেষ আপডেট: ১৭ জুলাই ২০১৮ ০১:০১

দাবি মতো টাকা চেয়ে না পাওয়ায় মারধরের অভিযোগে গত শনিবারই শিলিগুড়িতে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের এক নেতাকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। এ ছাড়াও কলকাতা-সহ রাজ্যের নানা প্রান্তে ভর্তি-দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। বিষয়টি নিয়ে কড়া বার্তা দিতে দেখা গিয়েছে স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। কিন্তু তার পরেও সেই একই অভিযোগ উঠল দুর্গাপুরের মাইকেল মধুসূদন মেমোরিয়াল কলেজে।

সোমবার সন্ধ্যায় এক ছাত্র পুলিশে অভিযোগ করেন, হোয়াটস অ্যাপে কলেজের ছাত্রনেতা রমজান খান বলেন, ‘দুশ্চিন্তার কারণ নেই। আমি আছি তো। ভর্তি ফি বাদে আরও সাত হাজার টাকা তৈরি রেখো। ফোনে বলে দেব, কবে, কোথায় যেতে হবে। ভর্তি হয়ে যাবে। কাউকে কিছু বলো না। চ্যাট ডিলিট করে দিও।’ ওই ছাত্রের দাবি, তিনি পাঁচশো ও একশো টাকার নোটে সাত হাজার টাকা দেন। তবে টাকার নম্বর লিখে রেখেছিলেন তিনি।

যদিও দুর্গাপুরে বিভিন্ন কলেজের সামনে পুলিশের তরফে ভর্তি-দুর্নীতি রুখতে ফোন নম্বর ও হোয়াটস অ্যাপ নম্বর লেখা ফ্লেক্স লাগানো হয়েছে। সেই নম্বরেই এ দিন হোয়াটস অ্যাপে অভিযোগ করেন ওই ছাত্র।

তৃণমূল ছাত্র পরিষদের জেলা নেতা কৌশিক মণ্ডল বলেন, ‘‘ভর্তির নাম করে এক ছাত্রের বিরুদ্ধে সাত হাজার টাকা নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। পুলিশ ঘটনার তদন্ত করুক।’’ তার পরেও এমন ঘটনার অভিযোগের পরে এসএফআই-এর জেলা সম্পাদক তন্ময় চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘চৈত্রের সেলের মতো কলেজের গেটে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের কর্মীরা আসন বিক্রি করছেন। যাঁদের টাকা নেই তাঁরা পড়ার সুযোগ পাচ্ছেন না।’’

ওই পড়ুয়া জানান, কলেজে স্নাতকে ভর্তি হতে অনলাইন আবেদন করেছিলেন। কিন্তু নম্বর খুব বেশি না থাকায় ভর্তি হতে পারবেন কি না, তা নিয়ে চিন্তায় ছিলেন। তার পরে কলেজে গিয়ে আলাপ হয় রমজানের সঙ্গে। সেই সময়ে টাকার বিনিময়ে ভর্তির আশ্বাস দেওয়া হয় তাঁকে।

সোমবার কলেজে গিয়ে কলেজেরই পড়ুয়া রমজানের সঙ্গে যোগাযোগ করেন ওই ছাত্র। ওই ছাত্র জানান, তাঁকে অন্য এক জনের কাছে পাঠান রমজান। তাঁকেই সাত হাজার টাকা দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু তার পরে যাঁকে টাকা দেওয়া হয়েছিল বলে অভিযোগ, তাঁর সঙ্গে আর যোগাযোগ করা যায়নি। কিন্তু বিষয়টি নিয়ে জানাজানি হতেই অনেকেই কলেজ চত্বরে গিয়ে রমজানকে চেপে ধরেন। সেই সময়েই পকেট থেকে সাত হাজার টাকা বার করেন রমজান। তবে রমজান সেই সময়ে দাবি করেন, ‘‘ওই টাকা আমার এক বন্ধু নিজের বান্ধবীকে দেওয়ার জন্য আমায় দিয়েছে।’’ কয়েক জন সেই টাকার নম্বর পরীক্ষা করে দেখতে চান। তা দেখানও রমজান। ওই ছাত্রের দাবি, তিনি যে নোটগুলি দিয়েছিলেন, সেগুলির নম্বরের সঙ্গে রমজানের পকেট থেকে বেরনো টাকার নম্বর মিলে গিয়েছে। এ বিষয়ে কলেজে চাপানউতোর তৈরি হতেই রমজান অভিযোগ করেন, ‘‘আমায় ফাঁসানো হয়েছে। কলেজের কিছু পুরনো ছাত্র এই ঘটনায় জড়িত। তৃণমূল ছাত্র পরিষদের নাম করে তারা কলেজে নানা অনৈতিক কাজ করে। আমরা প্রতিবাদ করেছি। তাই এই বদলা।’’ ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ আসে। পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।

কলেজের অধ্যক্ষ গোলাম মহম্মদ হেলাল উদ্দীন বলেন, ‘‘ভর্তি প্রক্রিয়া অনলাইনেই হয়েছে। ঘটনা যদি কিছু ঘটে থাকে, পুলিশ তা খতিয়ে দেখবে। আমাদের কাছে অভিযোগ এলে আমরাও আলাদা ভাবে বিষয়টি খতিয়ে দেখব।’’ মহকুমাশাসক (দুর্গাপুর) শ্রীকান্ত পালি বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন।

TMC College
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy