Advertisement
১৮ মে ২০২৪

রাস্তা তৈরিকে কেন্দ্র করে ফের কোন্দল মঙ্গলকোটে

সভা, পাল্টা সভার পরে এ বার রাস্তা তৈরি। মঙ্গলকোটে ফের প্রকাশ্যে চলে এল শাসকদলের গোষ্ঠীকোন্দল। একশো দিনের প্রকল্প ও চতুর্দশ অর্থ কমিশনের টাকায় ক্ষীরগ্রাম পঞ্চায়েতের কুরুম্বা গ্রামে একটি রাস্তা তৈরির কাজ চলছে।

জখম শেখ কাদের।—নিজস্ব চিত্র।

জখম শেখ কাদের।—নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কাটোয়া শেষ আপডেট: ০১ জুলাই ২০১৬ ০১:৫৫
Share: Save:

সভা, পাল্টা সভার পরে এ বার রাস্তা তৈরি। মঙ্গলকোটে ফের প্রকাশ্যে চলে এল শাসকদলের গোষ্ঠীকোন্দল। একশো দিনের প্রকল্প ও চতুর্দশ অর্থ কমিশনের টাকায় ক্ষীরগ্রাম পঞ্চায়েতের কুরুম্বা গ্রামে একটি রাস্তা তৈরির কাজ চলছে। বৃহস্পতিবার সেই রাস্তা তৈরিকে কেন্দ্র করেই গোলমাল বাধে মঙ্গলকোটের বিধায়ক সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী ও তৃণমূলের ব্লক সভাপতি অপূর্ব চৌধুরীর অনুগামীদের বিরুদ্ধে।

বাসিন্দারা জানান, গ্রামের পশ্চিমপাড়ায় রাস্তা তৈরির কাজ চলছে। বািসন্দাদের একাংশের দাবি, বৃহস্পতিবার সকালে জনা পনেরো দুষ্কৃতী রাস্তা তৈরির কাজে বাধা দেয় ও তোলা তুলতে শুরু করে। দুষ্কৃতীদের বাধা দিতে গেলে দলে বিধায়ক ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত শেখ কাদেরকে ছুরি ও লাঠি দিয়ে মাথায় ও পেটে আঘাত করা হয় বলে অভিযোগ। পূর্ব পাড়ার বাসিন্দা, মহম্মদ গোলাম গাউসের বাড়িতেও ভাঙচুর, লুঠপাট চালানো হয় বলে অভিযোগ। দু’জনকেই কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। হাসপাতালের বেডে শুয়ে শেখ কাদের অভিযোগ করেন, ‘‘আমি সিদ্দিকুল্লার দল করি। তাই অপূর্ববাবুর অনুগামী আবু বক্কর আমাকে মারধর করেছে।’’

যদিও অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তৃণমূলে অপূর্ববাবুর ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত আবু বক্কর। তাঁর দাবি, বিধায়কের অনুগামীরা রাস্তার উচ্চতা ৩ থেকে ৪ ইঞ্চি করবে বলে দাবি জানায়। যদিও প্রশাসনের সূত্রে খবর, নিয়ম অনুযারী রাস্তার উচ্চতা ৭ ইঞ্চি হওয়ার কথা। আবু বক্করের দাবি, ‘‘গোলমালের সময় আমি এলাকাতেই ছিলাম না। বিধায়কের অনুগামীরা আমার বাড়িতে ভাঙচুর তালানো হয়েছে। দলের পর্যবেক্ষক অনুব্রত মণ্ডলের পরামর্শে আমি থানায় অভিযোগ জানাব।’’

স্থানীয় সূত্রে খবর, গোলমালের সূত্রপাত দিন কয়েক আগে। একশো দিনের কাজ নিয়ে দুই গোষ্ঠীর মধ্যে গোলমাল বাধে। এলাকায় বোমাবাজির মতো ঘটনাও হয়।

তৃণমূল সূত্রের খবর, এ বার বিধানসভা ভোটের প্রার্থী ঘোষণার পর থেকেই এই দুই গোষ্ঠীর মধ্যে মনোমালিন্যের সূত্রপাত। ২০১১-র বিধানসভা ভোটে মঙ্গলকোটের তৃণমূলের প্রার্থী হয়েছিলেন অপূর্ববাবু। সে বার তিনি ১২৬ ভোটে হারেন সিপিএমের শাজাহান চৌধুরীর কাছে। এ বার দল তাঁকে প্রার্থী করেনি। বদলে টিকিট দেওয়া হয় কাটোয়ার করজগ্রামে বাসিন্দা সিদ্দিকুল্লাকে। যা অপূর্ববাবুর অনুগামীরা ভাল ভাবে নেননি বলে তৃণমূল সূত্রের খবর। গোটা ভোট-পর্বে তাই তাঁদের তেমন সক্রিয়ও হতে দেখা যায়নি। ভোটের মরসুমে পদিমপুরে সিদ্দিকুল্লার প্রধান নির্বাচনী কার্যালয়ে হামলা হয়। দলেরই একটি অংশ অভিযোগ তোলে, এর পিছনে অপর গোষ্ঠীর হাত রয়েছে। সিদ্দিকুল্লা ভোট জিতে মন্ত্রী হওয়ার পরে দ্বন্দ্ব কমা তো দূর, আরও বেড়েছে বলে তৃণমূলের ওই অংশের দাবি। দিন কয়েক আগেই মাত্র ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে সভাও করেছেন দু’পক্ষের লোকজন। ওই ঘটনার পরেই প্রকাশ্যে চলে আসে দু’পক্ষের মধ্যে গোলমাল।

এ দিনের ঘটনায় ফের সেই কোন্দলই সামনে চলে এল বলে মন্তব্য তৃণমূল কর্মীদের একাংশের।

এ দিন যদিও অপূর্ববাবুর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘‘কলকাতায় রয়েছি। এ বিষয়ে কিছুই জানি না। জেনে বলব।’’ অভিযোগ অস্বীকার করে বিধায়কের বক্তব্য, ‘‘দলে কোনও রকম উচ্ছৃঙ্খলা বরদাস্ত করা হবে না।’’

বর্ধমান জেলা তৃণমূল সাধারণ সম্পাদক মণ্ডল আজিজুল বলেন, ‘‘বিষয়টি সম্পর্কে খোঁজ নিয়ে উচ্চ নেতৃত্বকে জানাব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

road construction
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE