Advertisement
০৫ মে ২০২৪
Anganwadi Center

আলু-ডিমের টাকা বন্ধ তিন মাস, কেন্দ্র বন্ধের হুঁশিয়ারি

কম বরাদ্দ থেকে খারাপ পরিকাঠামো, নানা সমস্যায় জেরবার জেলার অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রগুলি।

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

সুপ্রকাশ চৌধুরী
বর্ধমান শেষ আপডেট: ৩১ অগস্ট ২০২৩ ০৯:৪৪
Share: Save:

অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে শিশুদের জন্য ডিম সেদ্ধ, ভাত এবং গর্ভবতীদের জন্য তার সঙ্গে আলু সেদ্ধ বরাদ্দ। কিন্তু গত তিন মাস ধরে ডিম ও আনাজের টাকা আসছে না বলে অভিযোগ কর্মীদের। ধার নিয়ে বা নিজেদের পকেট থেকে টাকা দিয়ে কেন্দ্র চালাতে হচ্ছে। এই অবস্থা চললে আগামী মাসের প্রথম দিন থেকে কেন্দ্র বন্ধ করে দেওয়ারও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তাঁরা।

পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য আইসিডিএস কর্মী সমিতির পূর্ব বর্ধমান জেলা সংগঠন বরাদ্দ বৃদ্ধির দাবি নিয়ে দীর্ঘ দিন ধরে আন্দোলন করছে। কিন্তু বরাদ্দ বৃদ্ধি তো দূর, ডিম-আাজের দামই গত তিন মাস ধরে দেওয়া হচ্ছে না, অভিযোগ তাঁদের। কর্মীরা জানাচ্ছে, চাল, ডাল সরকার থেকে পাওয়া গেলেও ডিম এবং আনাজ আলাদা ভাবে কিনতে হয়। ওই টাকা কবে মিলবে, কেন বন্ধ, কিছুরই উত্তর মিলছে না, দাবি তাঁদের। টাকা না দিলে কী ভাবে কেন্দ্র চলবে, শিশুদের মুখে খাবারই বা জোগাবে কে, তা নিয়ে সরকারের কোনও ভ্রুক্ষেপ নেই বলেও সংগঠনের দাবি।

বিভিন্ন অঙ্গনওয়াড়ির সঙ্গে যুক্ত কর্মীরা জানান, সোম, বুধ ও শুক্র এই তিন দিন শিশুদের ডিম সেদ্ধ, ভাত দেওয়া হয়। মঙ্গল, বৃহস্পতি এবং শনিবার দেওয়া হয় খিচুড়ি ও অর্ধেক ডিম। কোনও তরকারি থাকে না। গর্ভবতী এবং প্রসূতিদের যদিও ভাত, ডিমের সঙ্গে আলু দেওয়া হয়। এই খাবারের জন্য শিশু প্রতি দৈনিক ৬.৫০ টাকা এবং মায়েদের জন্য ৭.৩৪ টাকা মেলে। অপুষ্টিতে বিপদসীমা ছুঁয়ে থাকা শিশুদের জন্য বরাদ্দ ৯ টাকা। কর্মীদের দাবি, একদিকে এই টাকায় খাবার দেওয়ায় অসম্ভব, তাও যদি তিন মাস টাকা না দেয় সরকার, তাহলে কি করে চলবে! অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী মণিমালা দাস, কৃষ্ণা ঘোষেরা বলেন, ‘‘দোকানে বাজারে ধার করে জিনিসপত্র বন্ধক দিয়ে টাকা জোগাড় করে কেন্দ্র চালাচ্ছি। কিন্তু এই ভাবে কতদিন?’’ সরকার যেখান পুজোর অনুদান বাড়িয়ে দিচ্ছে, সেখানে শিশু ও মায়েদের প্রতি এই অবিচার কেন, প্রশ্ন তাঁদের।

পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী সমিতির রাজ্য কার্যকরী সভানেত্রী ইন্দ্রানী মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বিভাগীয় মন্ত্রীর কাছে যাওয়া হয়েছিল। মন্ত্রীর পরিবর্তে সহকারী ডিরেক্টর কথা বলেন। তিনি কবে টাকা আসবে, এই ব্যাপারে কোনও দিশা দেখাতে পারেননি।’’ আগামী ১ সেপ্টেম্বর থেকে রাজ্যের সমস্ত কেন্দ্র বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলেও দাবি তাঁর। তাঁর দাবি, যদি টাকা আসার কোনও দিন তাঁরা জানতে পারতেন, তাহলে চাল, ডাল দিয়ে ধার-দেনা করেও কেন্দ্র চালাতেন। কিন্তু এ ভাবে অনিশ্চিত হয়ে কাজ করা সম্ভব নয়।

জেলা প্রকল্প আধিকারিক (আইসিডিএস) পাপিয়া চট্টোপাধ্যায় হালদার বলেন, ‘‘দফতর থেকে টাকা আসছে না। টাকা এলেই বকেয়া মিটিয়ে দেওয়া হবে। আমরা বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Bardhaman
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE