Advertisement
১৭ এপ্রিল ২০২৪

অবস্থান মঞ্চই যেন বহির্বিভাগ বর্ধমান মেডিক্যালে

এনআরএস কাণ্ডের পর থেকেই ‘থমকে’ গিয়েছিল বর্ধমান মেডিক্যাল। পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি, ইট-লাঠি হাতে জুনিয়র ডাক্তারদের তেড়ে যাওয়ার দৃশ্য, মহিলা হস্টেলে নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্নে শুরু হয়েছিল অচলাবস্থা।

সকালে ধর্না মঞ্চের পাশেই চলছে রোগী দেখা।

সকালে ধর্না মঞ্চের পাশেই চলছে রোগী দেখা।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বর্ধমান শেষ আপডেট: ১৮ জুন ২০১৯ ০০:১৮
Share: Save:

সকালে আন্দোলনের মঞ্চই ছিল বহির্বিভাগ। বিকেলে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠকের পরে মিষ্টি বিলি হল সেখানেই।

সোমবার কলকাতায় বৈঠকের পরে আন্দোলন মঞ্চে গিয়ে কর্মবিরতি তোলার অনুরোধ করেন বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের সুপার উৎপল দাঁ, ডেপুটি সুপার অমিতাভ সাহা। কলকাতায় প্রতিনিধিরা কর্মবিরতি তোলার পরে তাতে সাড়া দেন জুনিয়র ডাক্তারেরা। গত কয়েকদিনের নানা ঘটনা, চাপানউতোর নিয়ে পরস্পরের কাছে ক্ষমাও চেয়ে নেন তাঁরা। পরে পুলিশ ক্যাম্পে গিয়ে ছাত্ররা সৌহার্দ্য বিনিময় করলেন পুলিশকর্মীদের সঙ্গেও।

এনআরএস কাণ্ডের পর থেকেই ‘থমকে’ গিয়েছিল বর্ধমান মেডিক্যাল। পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি, ইট-লাঠি হাতে জুনিয়র ডাক্তারদের তেড়ে যাওয়ার দৃশ্য, মহিলা হস্টেলে নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্নে শুরু হয়েছিল অচলাবস্থা। হাতুড়ি দিয়ে ভাঙতে হয়েছিল জরুরি বিভাগের তালা। এই ক’দিন হাসপাতাল চলছিল মূলত সিনিয়র ডাক্তারদের সৌজন্যে। তবে অবস্থা বদলাতে শুরু করে গত দু’দিন ধরেই। আন্দোলনের পাশাপশি রোগী দেখতে শুরু করেন আন্দোলনকারী ডাক্তারেরা। সোমবার সকালে রীতিমতো মাইক বাজিয়ে বহির্বিভাগে আসা রোগীদের ধর্নামঞ্চে এসে পরিষেবা নেওয়ার অনুরোধ করেন তাঁরা। জরুরি বিভাগের সামনেও দেখা যায় জুনিয়র ডাক্তারেরা দাঁড়িয়ে রোগীদের নিয়ে আসছেন। প্রয়োজনে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসককে ডেকে চিকিৎসার ব্যবস্থা করছেন। বেলা বাড়তে অবস্থান মঞ্চের পাশেই টেবিল, চেয়ার পেতে ফেলেন তাঁরা। অস্থায়ী শয্যাও রাখা হয় রোগীদের জন্য।

জামালপুর থেকে শ্বাসকষ্টের সমস্যায় ভোগা চার বছরের ভাইপোকে নিয়ে এসেছিলেন পুতুল রুইদাস। সঙ্গে সঙ্গেই শিশুটিকে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দেন ডাক্তারেরা। পরিষেবা পেয়ে ডাক্তারদের সাধুবাদ জানিয়েছেন খণ্ডঘোষ থানার গৌতানপুরের মহাত্মা মাথুর, বর্ধমান শহরের আঞ্জিরবাহানের অনিমা দত্তরা। জুনিয়র ডাক্তারদের দাবি, ‘পরিকাঠামো বদল ও নিরাপত্তার দাবিতে তাঁদের এই জায়গায় আসতে হয়েছে। ডাক্তারি পেশা, মানবিকতার তাগিয়েই তাঁদের এই পদক্ষেপ।

কালনা, কাটোয়াতেও বহিবির্ভাগ বন্ধ থাকলেও জরুরি বিভাগের সামনেই পরিষেবা দেন ডাক্তারেরা। কালনার সকালে বহির্বিভাগ দেখে অনেক রোগী ফিরে যান। যদিও হাসপাতালের দাবি, দ্রুত চিকিৎসার প্রয়োজন রয়েছে এমন কাউকেই ফিরে যেতে দেওয়া হয়নি। চিকিৎসকেরা কালো ব্যাজ পরে পরিষেবা দিয়েছেন। তবে বেশির ভাগ ডাক্তারদের ব্যক্তিগত চেম্বার বন্ধ ছিল।

কাটোয়ায় জরুরি বিভাগের সামনে টেবিল পেতে রোগী দেখেন চিকিৎসকেরা। তাঁদের দাবি, চিকিৎসক নিগ্রহ কোনও ভাবেই সমর্থনযোগ্য নয়। তবে পরিষেবা যাতে বিঘ্নিত না হয়, খেয়াল রেখেছেন তাঁরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

bardhaman medical college
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE