এনআরএস-কাণ্ডের প্রতিবাদে জুনিয়র ডাক্তারদের টানা কর্মবিরতি। তার মাঝেই শনিবার জরুরি বিভাগ, নিয়মিত ভাবে ইন্ডোরের রোগী দেখলেন বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের সিনিয়র চিকিৎসকেরা। সেই সঙ্গে সিদ্ধান্ত হয়েছে, এই কঠিন পরিস্থিতিতে সিনিয়র চিকিৎসকেরা জরুরি ভিত্তিতে ছুটি নেবেন না। চার দিন বন্ধ থাকার পরে এ দিন হাসপাতালের বহির্বিভাগের ওষুধের কাউন্টারও খুলেছে।
কলেজের অধ্যক্ষ সুহৃতা পাল বলেন, “কলেজে কাউন্সিলে সিদ্ধান্ত হয়েছে চিকিৎসকেরা এখন ছুটি নেবেন না। তাঁরা যথাসম্ভব পরিষেবা দিয়ে যাচ্ছেন।’’ কিন্তু হাসপাতালের অন্দরের প্রশ্ন, এই কর্মবিরতির দিন আরও বাড়তে থাকলে সিনিয়র ডাক্তারেরা পরিস্থিতির ‘সামাল’ কত দিন দেবেন। বিভাগীয় প্রধানদের একাংশের দাবি, অত্যন্ত ‘চাপ’ পড়ায় অনেক চিকিৎসক অসুস্থ হয়ে পড়ছেন অথবা প্রতি দিন হাসপাতালে আসতে ‘বেঁকে’ বসছেন। শনিবারই মেডিসিন বিভাগের কয়েক জন চিকিৎসক হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে তাঁদের আপত্তির কথা জানান। জানা গিয়েছে, বিভিন্ন ‘ফ্যাকাল্টি’ সামলানোর পরে নিয়মিত ভাবে জরুরি বিভাগ বা বহির্বিভাগ সামলানো তাঁদের পক্ষে সম্ভব নয়। কলেজ কর্তৃপক্ষ তাঁদের জানান, এই পরিস্থিতিতে কেউ ইস্তফা দিয়ে ঘরে বসে ‘আরাম’ করবে, সেটা হবে না। ইস্তফা গৃহীত না হওয়া পর্যন্ত কলেজ কাউন্সিলের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী হাসপাতালে পরিষেবা দিতে হবে। অধ্যক্ষের ঘরের সামনে দাঁড়িয়ে মেডিসিন বিভাগের এক চিকিৎসক বলেন, “আমাদের দেখার জন্যও ডাক্তার দরকার। সেখানে ছুটি নিয়ে বা ইস্তাফা দিয়ে কি সমাধান হবে। যতক্ষণ পারব, ততক্ষণ পরিষেবা দেব।’’ তবে পরিষেবা দেওয়ার পাশাপাশি, কালো ব্যাজ ও কালো ব্যান্ড পরে চিকিৎসক নিগ্রহের প্রতিবাদও করেন সহকারী অধ্যাপক ও অধ্যাপক পদের ওই চিকিৎসকরা।
গত তিন দিনের চেয়ে এ দিন রোগীর ‘চাপ’ও বেড়েছিল বলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি। আর সে জন্য সকাল সাড়ে ৯টা থেকেই জরুরি বিভাগের পর্যবেক্ষণ ওয়ার্ডের ভিতরে পরিষেবা চালু করে দেন কর্তৃপক্ষ। জরুরি বিভাগের মূল দরজার সামনে রোগীদের ভিড় সামলাতে নিরাপত্তারক্ষী ও সিভিক ভলান্টিয়ারদের মোতায়েন করা হয়েছিল। সেখানেই এক পাশে জরুরি বিভাগ চালান সিনিয়র চিকিৎসকেরা। সেখান থেকেই রোগীদের বহির্বিভাগের ওষুধ কাউন্টারে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।