Advertisement
০৪ মে ২০২৪

বিনা যুদ্ধে হাতে বহু পঞ্চায়েত

বারাবনির ছ’টি ও সালানপুরের তিনটি পঞ্চায়েতে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিততে চলেছে তৃণমূল। বারাবনির পাঁচগাছিয়া ও পানুড়িয়া পঞ্চায়েতে একটি আসনেও বিরোধীরা প্রার্থী দিতে পারেননি।

বারাবনিতে তৃণমূল কর্মী-সমর্থকদের উল্লাস। সোমবার বিকেলে। নিজস্ব চিত্র

বারাবনিতে তৃণমূল কর্মী-সমর্থকদের উল্লাস। সোমবার বিকেলে। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ১০ এপ্রিল ২০১৮ ০২:১৩
Share: Save:

ভোটের আগেই জেলার আটটি পঞ্চায়েত সমিতির মধ্যে অন্তত চারটিতে ক্ষমতায় আসা প্রায় নিশ্চিত করল শাসকদল। সোমবার মনোনয়ন জমা দেওয়ার সময়সীমা শেষ হওয়ার পরে দেখা যায়, বারাবনি, পাণ্ডবেশ্বর ও দুর্গাপুর-ফরিদপুর পঞ্চায়েত সমিতির সংখ্যাগরিষ্ঠ আসনে কোনও প্রার্থী দিতে পারেনি বিরোধীরা। এ ছাড়া জেলা পরিষদের একটি আসনেও কোনও বিরোধী প্রার্থী নেই। জেলার বেশ কিছু পঞ্চায়েতও বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিততে চলেছে তৃণমূল। এই খবর পাওয়ার পরে বিভিন্ন এলাকায় আবির খেলা শুরু করেন দলের কর্মী-সমর্থকেরা।

জেলার আটটি পঞ্চায়েত সমিতির সব ক’টিই তৃণমূলের দখলে রয়েছে। এ দিন মনোনয়ন জমা পর্বের শেষে দেখা যায়, বারাবনি পঞ্চায়েত সমিতির ২১টি আসনের মধ্যে ১২টিতে কোনও বিরোধী প্রার্থী নেই। পাণ্ডবেশ্বরের ১৮টি আসনের মধ্যে ১০টিতে রয়েছেন শুধু তৃণমূলের প্রার্থীরা। দুর্গাপুর-ফরিদপুরের ১৭টি আসনের মধ্যে ১০টিতে কোনও বিরোধী প্রার্থী নেই।

বারাবনির ছ’টি ও সালানপুরের তিনটি পঞ্চায়েতে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিততে চলেছে তৃণমূল। বারাবনির পাঁচগাছিয়া ও পানুড়িয়া পঞ্চায়েতে একটি আসনেও বিরোধীরা প্রার্থী দিতে পারেননি। পুঁচরা, জামগ্রাম, দোমহানি ও বারাবনি পঞ্চায়েতে সংখ্যাগরিষ্ঠ আসনে বিরোধীরা প্রার্থী দিতে পারেনি। নুনি পঞ্চায়েতের ১০টি আসনের মধ্যে তিনটি ও ইটাপাড়া পঞ্চায়েতের ১১টি আসনের মধ্যে দু’টিতে বিরোধী প্রার্থী নেই। সালানপুরের আছড়া পঞ্চায়েতে একটি আসনেও প্রার্থী দিতে পারেনি বিরোধীরা। উত্তররামপুর-জিৎপুর ও রূপনারায়ণপুর পঞ্চায়েতে বেশির ভাগ আসনে বিরোধীরা প্রার্থী দিতে না পারায় এই দু’টি পঞ্চায়েত দখলেও এগিয়ে গিয়েছে তৃণমূল। সালানপুর পঞ্চায়েত সমিতির ২৩টি আসনের মধ্যে চারটিতে বিরোধীদের কোনও প্রার্থী নেই।

দুর্গাপুর-ফরিদপুরের চারটি পঞ্চায়েতে বিরোধীরা বেশির ভাগ আসনে কোনও প্রার্থী দিতে পারেনি। তার মধ্যে গোগলা পঞ্চায়েতে কোনও আসনেই কোনও বিরোধী প্রার্থী নেই। এ ছাড়া গৌরবাজার, প্রতাপপুর ও লাউদোহা পঞ্চায়েতও বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ের দিকে এগোচ্ছে তৃণমূল।

আরও পড়ুন: নৈরাজ্যের রাজ্য, সমস্বর বিরোধীদের

জামুড়িয়ায় ১০টি পঞ্চায়েতের মোট ৯৩টি আসনে তৃণমূলের ১৫৮ জন মনোনয়ন জমা করেছেন। বিরোধীদের মনোনয়ন জমা পড়েছে ২৭টি। পঞ্চায়েত সমিতির ২৩টি আসনে তৃণমূলের তরফে ৪০টি মনোনয়ন জমা পড়েছে। সিপিএম তিনটি, বিজেপি পাঁচটি ও কংগ্রেসের তরফে এক জন প্রার্থী মনোনয়ন জমা দিয়েছেন। সিপিএমের জামুড়িয়া এরিয়া কমিটির সম্পাদক মনোজ দত্তের দাবি, পঞ্চায়েতে ৯৩টি আসনের মধ্যে ৪১টিতে মনোনয়ন জমা দিতে পেরেছেন তাঁরা।

পাণ্ডবেশ্বরের পঞ্চায়েত সমিতির ১৮টি আসনের মধ্যে ১০টিতে বিরোধীরা কোনও প্রার্থী দিতে পারেনি। ছো়ড়া ছাড়া ব্লকের বাকি পাঁচটি পঞ্চায়েত তৃণমূল বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিততে চলেছে তৃণমূল। অন্ডাল পঞ্চায়েত সমিতির ২২টি আসনের মধ্যে চারটিতে বিরোধীরা প্রার্থী দিতে পারেনি। ব্লকের আটটি পঞ্চায়েতের মধ্যে শুধু দক্ষিণখণ্ডে অধিকাংশ তৃণমূল প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিততে চলেছেন বলে জানা গিয়েছে। পাণ্ডবেশ্বরে জেলা পরিষদের একটি আসনে বিরোধী কোনও প্রার্থী মনোনয়ন জমা দেননি বলে জানা গিয়েছে।

রানিগঞ্জে ৬টি পঞ্চায়েতের মধ্যে এগারায় ১৪টি আসনের ১০টিতে বিরোধীরা কোনও প্রার্থী দিতে পারেনি। পঞ্চায়েত সমিতির ১৬টি আসনের মধ্যে ৪টিতে কোনও বিরোধী প্রার্থী নেই। কাঁকসায় অবশ্য মনোনয়ন শেষে কী পরিস্থিতি তা রাত পর্যন্ত ব্লক প্রশাসন জানাতে পারেনি।

রানিগঞ্জের সিপিএম বিধায়ক রুনু দত্তের অভিযোগ, “সব ক’টি আসনে প্রার্থীদের মনোনয়ন দিতে পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু অনেকের কাছ থেকেই মনোনয়নপত্র কেড়ে নিয়েছে তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা।” এ দিন মনোনয়ন জমা দিতে যাওয়ায় জামুড়িয়ার মদনতোড়ে সিপিএমের দয়াময় বাউরির বাড়িতে তৃণমূল কর্মীরা হামলা চালায় বলে অভিযোগ। তৃণমূলের জেলা সভাপতি ভি শিবদাশনের পাল্টা বক্তব্য, “কোথাও কেউ বাধা দেয়নি। বিরোধীরা অনেককে ভুল বুঝিয়ে প্রার্থী করতে চেয়েছিল। তাঁরা শেষে রাজি হননি।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE