কেন্দ্রীয় ইস্পাতমন্ত্রী। নিজস্ব চিত্র
বিলগ্নিকরণের খাঁড়া এখনও মাথা থেকে নামেনি। শুক্রবার দুর্গাপুরের অ্যালয় স্টিল প্ল্যান্ট (এএসপি) নিয়ে কেন্দ্রীয় ইস্পাতমন্ত্রী চৌধুরী বীরেন্দ্র সিংহের কারখানা-পরিদর্শন ইতিবাচক বলেও সুনির্দিষ্ট কোনও পরিকল্পনা মেলেনি বলেই জানিয়েছে শ্রমিক সংগঠনগুলি।
শুক্রবার ইস্পাতমন্ত্রী দুর্গাপুরের ডিএসপি ও এএসপি, দু’টি কারখানা পরিদর্শন করেন। কর্তৃপক্ষ ও শ্রমিক নেতাদের সঙ্গেও কথা বলেন তিনি। মন্ত্রী জানান, এখন দেশে ১৩০ মিলিয়ন টন ইস্পাত উৎপাদন হয়। বছরে তা বাড়িয়ে ৩০০ মিলিয়ন টন করতে হবে। তার জন্য অন্য ইস্পাত কারখানার সঙ্গে ডিএসপি-তেও লগ্নি হবে। এ ছাড়া ডিএসপি হাসপাতালের পরিকাঠামো উন্নয়নেরও প্রতিশ্রুতি দেন তিনি।
এর পরেই এএসপি প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, ‘‘দেশের আর কোনও কারখানায় এমন অ্যালয় স্টিল উৎপাদিত হয় না। কিছু ঘাটতি রয়েছে। কর্তৃপক্ষ আমাকে যন্ত্রপাতির আধুনিকীকরণের মাধ্যমে উৎপাদন বৃদ্ধির প্রস্তাব দিয়েছেন। সেলের চেয়ারম্যান তার জন্য উপযুক্ত ‘রোড ম্যাপ’ বানাতে বলেছেন কারখানার আধিকারিকদের।’’ তিনি জানান, কারখানাটি দীর্ঘদিন ধরে লোকসানে চললেও চলতি বছরের প্রথম ৬ মাসে মাত্র ১৮ কোটি টাকা লোকসান হয়েছে। মন্ত্রী বলেন, ‘‘যন্ত্রপাতি ও কারিগরি ক্ষেত্রে উন্নয়ন হলে আশা করি কারখানা ঘুরে দাঁড়াবে।’’ তার জন্য কারখানা কর্তৃপক্ষকে প্রয়োজনীয় সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন মন্ত্রী।
অলাভজনক এএসপি-র কৌশলগত বিলগ্নিকরণের সিদ্ধান্ত ২০১৬ সালে ক্যাবিনেট কমিটি অন ইকোনমিক অ্যাফেয়ার্স অনুমোদন করে। সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে তখন থেকেই ধারাবাহিক আন্দোলনে নামে শ্রমিক সংগঠনগুলি। এমন পরিস্থিতিতে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে সেল কৌশলগত বিলগ্নিকরণের জন্য ‘গ্লোবাল টেন্ডার’ ডাকলেও তাতে সাড়া মেলেনি।
আইএনটিটিইউসি বাদে বাকি শ্রমিক সংগঠনগুলি চলতি বছরের ১১ মার্চ আসানসোলের সাংসদ বাবুল সুপ্রিয়ের সঙ্গে দেখা করে এএসপি-র কৌশলগত বিলগ্নিকরণ রুখতে নীতি আয়োগের প্রস্তাব আটকে দেওয়ার আর্জি জানান। উৎপাদনের মাত্রা বাড়িয়ে এএসপি-র পুনরুজ্জীবনে জোর দেন শ্রমিক নেতারা। কেন্দ্রীয় ইস্পাতমন্ত্রী, ইস্পাত সচিব ও নীতি আয়োগের উপাধ্যক্ষ রাজীব কুমারের সঙ্গে বৈঠক সেরে ২২ অগস্ট তিনি কারখানা পরিদর্শনে আসেন। দীর্ঘদিন ধরে লোকসানে চলা সংস্থার হাল ফেরাতে বিলগ্নিকরণের সিদ্ধান্ত নিয়ে মুষড়ে না পড়ে আপাতত কর্মীদের মন দিয়ে কাজ করার পরামর্শ দেন। নীতি আয়োগ, ইস্পাত মন্ত্রক ও সেলের সঙ্গে ফের আলোচনার পরে কী করা যাবে, তা এসে ফের জানিয়ে যাবেন বলে প্রতিশ্রুতি দেন বাবুল।
এ দিন ইস্পাতমন্ত্রীর কারখানা পরিদর্শনের পরে আইএনটিইউসি নেতা অশোক কুণ্ডু বলেন, ‘‘আলোচনা ফলপ্রসূ হয়েছে। মন্ত্রীর কাছ থেকে ইতিবাচক ইঙ্গিত মিলেছে।’’ তবে সেই সঙ্গে অশোকবাবুদের মতে, কারখানা বাঁচাতে মন্ত্রীর কাছ থেকে সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনার কথা আশা করেছিলেন তাঁরা। এ দিন তা মেলেনি। সিটু নেতা বিজয়কুমার সাহার বক্তব্য, ‘‘সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনার কথা হয়তো জানা যায়নি। তবে মন্ত্রীর কাছে ইতিবাচক ইঙ্গিত মিলেছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy