গত বছরের স্মৃতি এখনও টাটকা। এ বারও কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিতে জল জমতে শুরু করেছে নানা এলাকায়। তাই ফের আগের বারের বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হবে কি না, আশঙ্কায় ভুগতে শুরু করেছেন কাঁকসা, আউসগ্রাম, কালনা, পূর্বস্থলীর বড় অংশের মানুষজন। কিন্তু জেলা প্রশাসনের আশ্বাস, এ বছর পরিস্থিতি মোকাবিলায় আগাম ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
প্রতি বছরই বর্ষার সময়ে জেলার নানা এলাকায় বন্যার পরিস্থিতি দেখা দেয়। ত্রাণ, উদ্ধারকাজে অব্যবস্থা নিয়ে ক্ষোভও তৈরি হয় প্রতি বারই। এ বছর তাই বর্ষার শুরুতেই বৈঠকে বসেন বর্ধমান জেলা বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের আধিকারিকেরা। এ বার কী ভাবে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া হবে, বৈঠকে সে বিষয়ে বিভিন্ন পরিকল্পনা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, গত বছর জেলা জুড়ে বন্যায় ৩০ হাজারের বেশি মাটির বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। বহু গবাদি পশু মারা যায়। অনেক জায়গায় নদী বাঁধ ভেঙে জল ঢুকে পড়ে লোকালয়ে। এ বার যাতে সেই পরিস্থিতি না হয় সে জন্য পঞ্চায়েত স্তর থেকে বিভিন্ন পরিকল্পনা হয়েছে। এক আধিকারিক জানান, আউশগ্রামে অজয়ের বাঁধ নিয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ রয়েছে। বাঁধ মেরামতির জন্য সেচ দফতরের সঙ্গে আলোচনা করা হয়েছে। নদীর পাশের এলাকায় নজর রাখতে বলা হয়েছে বিভিন্ন ব্লক প্রশাসনকে। আউশগ্রাম ২-এর ভেদিয়া পঞ্চায়েত এলাকায় নদী বাঁধের কাজ চলছে বলে জানান ওই আধিকারিক।
বিপর্যয় মোকাবিলা দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলা প্রশাসনের হাতে এখন ২০ জন ডুবুরি রয়েছেন। তার মধ্যে ১০ জন পুলিশের জন্য নির্দিষ্ট। বাকিরা বিপর্যয় মোকাবিলা দলে কাজ করেন। সংখ্যাটা প্রয়োজনের তুলনায় বেশ কম। তার উপরে এক সঙ্গে একাধিক এলাকায় ডুবুরির প্রয়োজন হলে বিপাকে পড়তে হয়। সমস্যা মেটাতে আপাতত প্রতিটি ব্লক থেকে ৫ জন করে সিভিক ভলান্টিয়ার্সকে বিপর্যয় মোকাবিলা দফতর থেকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে বলে জানা গিয়েছে। এলাকায় প্রাথমিক উদ্ধারকাজের জন্য সেই দলকে ব্যবহার করা হবে।
বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের আধিকারিক মৃত্যুঞ্জয় হালদার জানান, সিভিক ভলান্টিয়ার্সদের প্রশিক্ষণ শুরু হয়ে গিয়েছে। বিভিন্ন এলাকায় ‘মক ড্রিল’-এর মাধ্যমে কাজ শেখানো হচ্ছে। জেলার প্রতিটি ফ্লাড সেন্টারের পরিকাঠামো উন্নয়নেও বিশেষ নজর দেওয়া হচ্ছে বলে জানান তিনি। খাবার, প্রয়োজনীয় ওষুধের ব্যবস্থা রাখা হচ্ছে সেগুলিতে। বন্যায় দুর্গতেরা কেন্দ্রগুলি থেকে সব ধরনের সাহায্য পাবেন বলে জেলা বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের তরফে আশ্বাস। প্রতিটি ব্লকে খোলা হচ্ছে কন্ট্রোল রুম। মহকুমা ও জেলা স্তরেও কন্ট্রোল রুম থাকবে। মৃত্যুঞ্জয়বাবু বলেন, ‘‘আমরা বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রয়োজনীয় সব ধরনের ব্যবস্থা রাখছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy