Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
মন্তেশ্বর

বধূকে পুড়িয়ে খুনের নালিশ, সঙ্কটে শিশুও

ঘরের ভিতর ঢুকিয়ে তাঁর মেয়ে ও নাতনির গায়ে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়েছিল বলে বৃহস্পতিবার রাতেই মন্তেশ্বর থানায় অভিযোগ করেছিলেন দিগনগর গ্রামের আরজিনা বেগম।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১২ নভেম্বর ২০১৬ ০৩:৩৩
Share: Save:

ঘরের ভিতর ঢুকিয়ে তাঁর মেয়ে ও নাতনির গায়ে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়েছিল বলে বৃহস্পতিবার রাতেই মন্তেশ্বর থানায় অভিযোগ করেছিলেন দিগনগর গ্রামের আরজিনা বেগম। শুক্রবার ভোরে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মারা গেলেন তাঁর মেয়ে গোলাপি বেগম (২৫)। শিশুকন্যাটিও সঙ্কটজনক অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি। ঘটনাটি ঘটেছে মন্তেশ্বর থানার ইচু গ্রামে। মৃত্যুর খবর পাওয়ার পরে মন্তেশ্বর থানা অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে বধূকে নির্যাতন করে খুনের অভিযোগে মামলা রুজু করেছে। ওসি প্রণব বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, অভিযুক্তরা পলাতক।

পুলিশ জানিয়েছে, বছর খানেক আগেও স্বামী নাসের শেখ, শ্বশুর জিল্লাল শেখ, শাশুড়ি জায়েফা বিবি-সহ শ্বশুরবাড়ির বেশ কয়েকজনের নামে মন্তেশ্বর থানায় অভিযোগ করেছিলেন গোলাপি বেগম। পরবর্তী সময়ে দুই পরিবারের মধ্যে মীমাংসা হয়ে যাওয়ায় ছেলে ও মেয়েকে নিয়ে শ্বশুরবাড়িতে ফিরে যান গোলাপি। কয়েক মাস চুপচাপ থাকার পর শ্বশুরবাড়ির লোকেরা অতিরিক্ত পণের দাবিতে ফের নির্যাতন ও অত্যাচার শুরু করে বলে অভিযোগ। মৃতার মা আরজিনা বিবি অভিযোগে জানান, বৃহস্পতিবার ২৫ হাজার টাকা দাবি করে জামাই নাসের ও বাড়ির অন্যরা। চাপ দেওয়ার পরেও বাপের বাড়ি থেকে ওই টাকা আনতে অস্বীকার করায় অভিযুক্তরা একটি ঘরে ঢুকিয়ে তাঁর মেয়ের গায়ে কেরোসিন তেল ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেয় বলেও তাঁর দাবি। মায়ের ওই অবস্থা দেখে আড়াই বছরের মেয়ে চিৎকার শুরু করে দেয়। চিৎকার থামানোর জন্য তার গায়েও আগুন দেওয়া হয় বলে অভিযোগ।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ন’বছর আগে নাসেরে সঙ্গে বিয়ে হয় পাশের দিগনগর গ্রামের গোলাপির। ওই দম্পতির সাত বছরের ছেলে ও আড়াই বছরের মেয়ে রয়েছে। মৃতার পরিজনদের অভিযোগ, বিয়ের পর থেকে টাকা চেয়ে বারবার চাপ দেওয়া হত। ওই টাকা দিতে না পারলেই মারধর মরা হত। বছর খানেক আগে স্বামী সহ চার জনের বিরুদ্ধে মন্তেশ্বর থানায় বধূ নির্যাতনের অভিযোগ করা হয়েছিল। পরবর্তী সময়ে দুই পরিবারের মধ্যে মীমাংসা হয়ে যায়। আরজিনাদেবীর দাবি, “শ্বশুরবাড়ির অত্যাচারে আমার মেয়ে বেশ কয়েক আমাদের কাছে ছিল। গ্রামের সভায় গোলাপির শ্বশুরবাড়ির লোকেরা মুচলেকা দিয়ে অন্যায় স্বীকার করে এবং ভবিষ্যতে গোলাপির গায়ে হাত দেবে না বলে জানিয়েছিল। তারপর গোলাপি শ্বশুরবাড়ি ফিরে যায়। তারপর একেবারে মেরে ফেলল! দুধের শিশুটাকেও পুড়িয়ে মারতে চেয়েছিল। ওরা কী মানুষ?”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Burn to death Bride dies Domestic Violence
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE