মন্তেশ্বরে কংগ্রেস প্রার্থীর সঙ্গে অধীর চৌধুরী। নিজস্ব চিত্র।
এই বিধানসভা কেন্দ্রের ভোটারদের একটি বড় অংশ সংখ্যালঘু। কংগ্রেসের প্রার্থীও সংখ্যালঘু। ভোট বৈতরণী পার হতে বৃহস্পতিবার মন্তেশ্বরে এসে এ বার সেই সংখ্যালঘু ভোটারদের দিকেই নজর দিলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী।
এ দিন কুসুমগ্রাম বাসস্ট্যান্ডে দুপুরে সভা ছিল অধীরবাবুর। বিকেল ৪টে নাগাদ সভামঞ্চে পৌঁছেই সংখ্যালঘু প্রসঙ্গে কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে সুর চড়ান প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি। নিজের বক্তব্যের শুরুতেই তিনি অভিযোগ করেন, ‘‘সাম্প্রদায়িকতার তাস খেলছেন মোদী। আর তাঁকে সমর্থনও জানাচ্ছে এ রাজ্যের দিদির সরকার।’’
তৃণমূল-বিজেপি আঁতাঁতের প্রসঙ্গে অধীরবাবুর দাবি করেন, গত বিধানসভায় ৭০টি কেন্দ্রে জোট প্রার্থীরা একশো থেকে পাঁচ হাজার ভোটের ব্যবধানে পরাজিত হন। ওই কেন্দ্রগুলিতে বিজেপি-র ভোটই তৃণমূলের সুবিধা করে দিয়েছে বলে দাবি তাঁর। শুধু তাই নয়, সারদা-তদন্ত প্রসঙ্গেও কটাক্ষ করেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতিকে। এ দিন মেমারির পাহাড়হাটি ও মালডাঙা বাজারের সভা থেকে তৃণমূল নেতা সুব্রত বক্সী অবশ্য বিজেপি-কে ‘সাম্প্রদায়িক শক্তি’ বলে অভিযোগ করেন।
সংখ্যালঘু অধ্যুষিত কুসুমগ্রামে এসে ওয়াকফ সম্পত্তির পুনরুদ্ধার, সাচার কমিটির রিপোর্ট, ইমাম-ভাতা প্রভৃতি প্রসঙ্গেও কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারকে বিঁধতে দেখা যায় অধীরবাবুকে। যদিও দু’টি সভা থেকে সংখ্যালঘু উন্নয়নে রাজ্য সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপের উল্লেখ করেন সুব্রতবাবু।
এ ছাড়াও বিভিন্ন কেন্দ্রীয় সরকারি প্রকল্পের ‘বাংলায়ন’ প্রসঙ্গেও মুখ্যমন্ত্রীকে কটাক্ষ করে তিনি বলেন, ‘‘কংগ্রেসী আমলের খাদ্য সুরক্ষা প্রকল্পের এ রাজ্যে নাম হয়েছে খাদ্যসাথী।’’ কংগ্রেস নেতৃত্বের বক্তব্য, ইউপিএ জমানায় চালু হওয়া একশো দিনের কাজ, জননী সুরক্ষার মতো বিভিন্ন প্রকল্পের কথাও উঠে আসে। সম্প্রতি ৫০০-১০০০ টাকার নোট বাতিলকে ‘প্রধানমন্ত্রীর গিমিক তৈরির চেষ্টা’ বলে কটাক্ষ করেন অধীরবাবু।
রাজ্যে তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পরে মন্তেশ্বরের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি প্রসঙ্গেও সরব হন অধীরবাবু। তাঁর দাবি, গত ছ’বছরে শাসকদলের গোলমালে মন্তেশ্বরে ৮ জন খুন হয়েছেন। এ ছাড়া রাজ্যের কিসান মান্ডিগুলির ‘কঙ্কালসার’ অবস্থা নিয়েও সরব হন তিনি।
এলাকার রাজনৈতিক মহলের মতে, মন্তেশ্বরে এসে অধীরবাবুর বক্তবে সংখ্যালঘুর উন্নয়নের বিষয়টি বেশি গুরুত্ব পাওয়ার কারণ, এলাকার ভোটের অঙ্ক। প্রশাসনের সূত্রে জানা গিয়েছে, এই বিধানসভা কেন্দ্রের মোট ২ লাখ ১৮ হাজার ভোটারের ৪০ শতাংশই সংখ্যালঘু মানুষ। সেই ভোটেই কংগ্রেসের ভোট বৈতরণী পেরোতে পারে কি না, তা জানতে অবশ্য অপেক্ষা ২২ নভেম্বর, ফলপ্রকাশের দিন পর্যন্ত।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy