দুষ্কৃতীদের দৌরাত্ম্য থেকে ট্রেড লাইসেন্সের ফি বৃদ্ধি, জেলাশাসকের সঙ্গে বৈঠকে নানা অসুবিধের অভিযোগে সরব হলেন শিল্প সংস্থার মালিক ও বণিক সংগঠনের কর্তারা। জেলাশাসক অনুরাগ শ্রীবাস্তব দাবিগুলি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন।
আসানসোল পুরভবনে এ দিন জেলার বেশ কিছু শিল্পপতি ও বণিক সংগঠনের প্রতিনিধিদের নিয়ে পর্যালোচনা বৈঠকে বসেন জেলাশাসক। সেখানে শিল্প পরিকাঠামোর উন্নয়নে বেশ কিছু দাবিদাওয়া উঠে আসে। সেগুলি নিয়ে আশ্বাস দেওয়ার পাশাপাশি জেলাশাসক শিল্প সংস্থাগুলিকে কিছু নিয়ম ঠিক ভাবে মেনে চলার পরামর্শও দেন।
এ দিন শিল্পপতিরা অভিযোগ করেন, কল্যাণেশ্বরী থেকে জামুড়িয়া শিল্পতালুকে গত দশ দিনে আটটি কারাখানায় চুরি হয়েছে। কারখানার মালিক ও শ্রমিকেরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। ট্রেড লাইসেন্সের ফি প্রায় পাঁচ গুণ বাড়িয়ে দেওয়ায় অনেকে সমস্যায় পড়ছেন বলেও অভিযোগ করা হয়। এ ছাড়া কল্যাণেশ্বরী শিল্পতালুক এলাকায় বিএসএনএলের টাওয়ার প্রয়োজন, জামুড়িয়ায় দমকল কেন্দ্র দরকার বলে দাবি জানান প্রতিনিধিরা।
এ ছাড়া বরাকর-ডুবুরডিহি রাস্তা বেহাল, প্রয়োজনীয় বালি না মেলা, বেশি দাম দিয়ে বিদ্যুৎ কিনতে হওয়ায় সমস্যার অভিযোগ জানানো হয় জেলা প্রশাসনের কাছে। বার্নপুরে দামোদরের উপরে বাস চলার জন্য একটি সেতু দরকার বলেও জানান শিল্পপতিরা।
বৈঠকের পরে রানিগঞ্জ বণিকসভার পক্ষে রাজেন্দ্রপ্রসাদ খেতান বলেন, “আমরা বহু বার জানিয়েছি, পরিকাঠামোর উন্নয়ন করতে হবে। তা না হলে নতুন করে কোনও শিল্পপতি ব্যবসা করতে আসতেই চাইবেন না। প্রশাসনের দ্রুত সে দিকে নজর দেওয়া দরকার।”
জেলাশাসক আশ্বাস দেন, শিল্পতালুক এলাকায় নিরাপত্তা বাড়ানো হবে। শিল্প সংস্থাগুলিকে সুলভে বিদ্যুৎ দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে। তিনি জানান, বালিঘাটগুলি নিয়ে দরপত্র ডাকার প্রক্রিয়া শেষ পর্যায়ে রয়েছে। তিন মাসের মধ্যে সমস্যা মিটে যাবে। অন্য নানা দাবিও গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করা হবে বলে তাঁর আশ্বাস। তবে জমির খাজনা যাদের বাকি আছে তাদের তা দ্রুত মিটিয়ে দিতে বলেন তিনি।
এ দিনের বৈঠকে জেলাশাসকের কাছে ‘ফ্লাই অ্যাশ ব্রিকস অ্যাসোসিয়েশন’-এর তরফে অভিযোগ করা হয়, রাজ্য সরকার ছাইয়ের ইট দিয়ে নির্মাণকাজ করতে বললেও বাস্তবে কেউ তা মানছে না। এর জেরে তাদের ব্যবসা উঠে যাওয়ার জোগাড় হচ্ছে। জেলাশাসক জানান, ছাই দিয়ে তৈরি ইট ব্যবহার করতেই হবে। যারা তা করবে না তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।