Advertisement
E-Paper

ভোগ রান্নার অনুমতি নেই মহিলাদের

মেমারি স্টেশন বাজার এলাকার কাছেই বিষয়ী বাড়ি। মেমারির বাসিন্দাদের কাছে ‘ডাকের সাজের’ পুজো বলে পরিচিত। বংশ পরম্পরায় দেবী দুর্গার জন্য মঙ্গলকোটের বনকাপাশির শোলাশিল্পীদের ‘ডাকের সাজ’ আসে।

সৌমেন দত্ত

শেষ আপডেট: ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০১:২৭
ঠাকুর দালান। —নিজস্ব চিত্র।

ঠাকুর দালান। —নিজস্ব চিত্র।

পুজোর বয়স পৌনে দু’শো ছুঁইছুঁই। সময়ের সঙ্গে বহু নিয়ম হারিয়ে গিয়েছে। পুজোয় এসেছে আধুনিকতার ছোঁয়া। কিন্তু দিনরাত পরিশ্রম করে পুজোর জোগাড় করলেও এখনও ভোগ রান্নার অধিকার পাননি বাড়ির মহিলারা। ব্রাহ্মণদের হাতে তৈরির রান্নাই ভোগ দেওয়া হয় মেমারির বিষয়ী পরিবারের ডাকের সাজের তৈরি উমাকে।

মেমারি স্টেশন বাজার এলাকার কাছেই বিষয়ী বাড়ি। মেমারির বাসিন্দাদের কাছে ‘ডাকের সাজের’ পুজো বলে পরিচিত। বংশ পরম্পরায় দেবী দুর্গার জন্য মঙ্গলকোটের বনকাপাশির শোলাশিল্পীদের ‘ডাকের সাজ’ আসে। রীতি মেনে প্রতিমা ও ঢাকিরাও আসেন বংশ পরম্পরায়। মহালয়ার দিন প্রতিমাশিল্পী দেবী দুর্গার চক্ষুদান করেছেন। পঞ্চমীর দিন প্রাণ পাবেন বিষয়ী পরিবারের উমা। তার আগে সাজো-সাজো রব।

পরিবার সূত্রে জানা যায়, মেমারির ধনী ব্যবসায়ী কাশীনাথ বিষয়ী ও তাঁর ভাইয়েরা পুজো শুরু করেছিলেন। তখন পাকা মণ্ডপ ছিল না। তালপাতার ছাউনিতে মূর্তি এনে পুজো শুরু হয়। পরবর্তী প্রজন্ম মন্দির তৈরি করেন। প্রায় ১২০ বছরের পুরনো মন্দিরে এক সময় মহিলাদের প্রবেশই নিষিদ্ধ ছিল। দূর থেকে তাঁরা যাতে দেবী দর্শন করতে পারেন, সে ব্যবস্থা করেছিলেন বাড়ির কর্তারা। ওই বাড়ির কর্তা চন্দনকুমার বিষয়ী বলেন, ‘‘এখন ও সব নিয়ম নেই। তবে ভোগ রান্নার অধিকার এখনও মহিলারা পাননি। তাঁরাও কোনও দিন রীতি ভাঙার চেষ্টা করেননি।’’

পুজোর সময়ে বিষয়ীদের ১০টি পরিবার এক সঙ্গে মিলিত হয়। অষ্টমী-নবমীতে এক সঙ্গে দেড়শো জনের পাত পড়ে। দশমীতে নৈবদ্যের চালে খিচুড়ি রান্না হয়। সে দিন পরিচিতদের আমন্ত্রণ জানান চন্দনবাবুরা। বিসর্জনের পরে শুরু হয় ‘বিজয়া বাঁধা’। পরিবারের প্রবীণ সদস্যা স্নেহময়ীদেবী বলেন, ‘‘সব বাড়িতেই দেবীর পায়ের ফুল রাখা হয়। আমাদের বাড়িতে তার বদলে সাদা কাপড় রাখার চল রয়েছে। ঘট বিসর্জনের পরে বাড়ির সবাই সাদা কাপড়ের টুকরো মাথায় বাঁধে। সারা বছর ওই কাপড় কাছে রাখি।’’ কলা-বৌ স্নান থেকে বিসর্জন, সবই হয় পারিবারিক পুকুরে। বাড়ির তরুণ সদস্য শুভরূপ বিষয়ী বলেন, ‘‘খুব আনন্দ
হয় পুজোয়।’’

ভোগ রান্না করতে না পারায় খারাপ লাগে না? কপালে হাত ঠেকিয়ে পরিবারের এক সদস্যা বলেন, ‘‘সবই ভগবানের ইচ্ছে।’’

Puja Celebration Durga Puja মেমারি Memari
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy