আগাম প্রচার করা হলেও বৃহস্পতিবার রাজ্যে ‘লকডাউন’-এর কথা তাঁরা অনেকেই জানতেন না বলে জানিয়েছেন ট্রেনে করে ভিন্-রাজ্য থেকে আসা পশ্চিমবঙ্গের যাত্রীদের অনেকেই। ফলে, বৃহস্পতিবার আসানসোল স্টেশনে নেমে তাঁরা সমস্যায় পড়েন। কিছু ক্ষেত্রে পুলিশ পদক্ষেপ করে। অনেকেই রেলের বিশ্রামাগারে ঠাঁই নিতে বাধ্য হন।
এ দিন দিল্লি থেকে বিশেষ এক্সপ্রেসে করে সপরিবার স্টেশনে নামেন বীরভূমের সাঁইথিয়ার জামিরুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘‘স্টেশনের বাইরে দেখি সব সুনসান। বাড়িতে অনুষ্ঠান আছে। তাই আগে থেকেই টিকিট কাটা ছিল। এখন কী করব জানি না।’’ শেষমেশ, আরপিএফ-এর সাহায্যে রেলের বিশ্রামাগারেই রাতে থাকার ব্যবস্থা হয় তাঁর। ওই একই ট্রেনে ফিরেছেন বীরভূমের রামপুরহাটের বাসিন্দা মুক্তার শেখ। তিনি জানান, সম্প্রতি দিল্লিতে তাঁকে ১৪ দিনের জন্য নিভৃতবাস কেন্দ্রে রাখা হয়। সপ্তাহখানেক আগে সেখান থেকে ছাড়া পান। সে দিনই তাঁকে বিশেষ ট্রেনের টিকিট ধরিয়ে বাড়ি পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়। তাঁর কথায়, ‘‘রাজ্যে আজ লকডাউন তা জানতাম না। বাড়িতে খবর দিয়েছি। দেখা যাক
কী হয়।’’
একই ভাবে সকালে মুম্বই থেকে ফেরেন বর্ধমানের বাসিন্দা প্রভাত কর। তিনি অবশ্য জানান, রাজ্যে লকডাউনের খবর জানতেন। কিন্তু ট্রেনের টিকিট কাটা থাকায় আর দিন বদলাতে পারেননি। রাতটা স্টেশনে কাটিয়ে ভোরে বাস ধরে বাড়ি ফিরবেন বলে জানান। তবে তাঁর আশঙ্কা, ‘‘কোনও দোকান খোলা না থাকায় মনে হচ্ছে কিছু খাওয়া
হবে না।’’
তবে, কাছাকছি যাঁদের বাড়ি, তাঁদের জন্য গাড়ি ভাড়া করে বাড়ি পাঠানোর ব্যবস্থা করে পুলিশ। যেমন, পুলিশের সাহায্যে অটো ভাড়া করে বাড়ি ফিরেছেন পশ্চিম বর্ধমানের রূপনারায়ণপুরের বাসিন্দা হেমন্ত প্রধান।
বিষয়টি নিয়ে রেলের আসানসোল ডিভিশনের জনসংযোগ আধিকারিক একলব্য চক্রবর্তী বলেন, ‘‘ট্রেন চলেছে বলে বহু দূর থেকে যাত্রীরা শহরে ফিরতে পারছেন। কিন্তু লকডাউনের কারণে তাঁদের অনেকেই বাড়ি ফিরতে পারেননি। তাঁদের কথা ভেবে রাত কাটাতে বিশ্রামাগার খুলে দেওয়া হয়েছে।’’