স্কুলের শংসাপত্রে যে জন্ম তারিখের উল্লেখ থাকবে, তা-ই যথার্থ ধরে কর্মীর অবসরের সময় নির্ধারণ করতে হবে— ইসিএলকে এমনই নিদের্শ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। স্কুলের শংসাপত্রে জন্ম তারিখ লেখা থাকা সত্ত্বেও সংস্থার তরফে মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করে কারও বয়স ঠিক করা উচিত নয় বলেও জানিয়ে দেওয়া হয়েছে আদালতের তরফে।
ইসিএলের কুনস্তরিয়া এরিয়ার পরাশিয়া কোলিয়ারির এক কর্মী সুধাময় গড়াই কলকাতা হাইকোর্টে একটি মামলা দায়ের করেছিলেন। তাঁর অভিযোগ ছিল, সংস্থা জোর করে খাতায়-কলমে তাঁর বয়স বাড়িয়ে দিয়েছে। তার জেরে আসল সময়ের আট বছর আগেই তাঁকে অবসরে পাঠানো হয়েছে।
সুধাময়বাবু জানান, চাকরিতে যোগ দেওয়ারা সময়ে তিনি উচ্চ মাধ্যমিকের শংসাপত্র জমা দিয়েছিলেন। তাতে উল্লেখ রয়েছে, তাঁর জন্ম তারিখ ১৯৫৮ সালের ২৯ জুন। সেই অনুযায়ী, ২০১৮ সালের জুন পর্যন্ত তাঁর চাকরিতে বহাল থাকার কথা। কিন্তু, ১৯৯২ সালের অগস্টে তাঁর বয়স নির্ধারণের জন্য সংস্থার সংস্থা নিজস্ব মেডিক্যাল বোর্ডে পাঠান খনি কর্তৃপক্ষ। সেই বোর্ডের রিপোর্ট অনুযায়ী সুধাময়বাবুর জন্ম তারিখ লেখা হয় ১৯৫০ সালের ২৮ ফ্রেবুয়ারি।
সুধাময়বাবু জানান, এ ভাবে তাঁর কর্মজীবন আট বছর কম করে দেওয়ার প্রতিকার চেয়ে তিনি বারবার খনি কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন জানান। কিন্তু তাতে কোন ফল হয়নি। শেষমেশ তিনি ২০০৫ সালে হাইকোর্টে সংস্থার এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে মামলা করেন। এরই মধ্যে খনি কর্তৃপক্ষ ২০১০ সালের ৭ মার্চ তাঁকে অবসরে পাঠিয়ে দেন। সুধাময়বাবু বলেন, “আমি অবসরের কাগজে স্বাক্ষর করিনি। অবসরের সময়ে প্রাপ্য পাওনাও গ্রহণ করিনি। আদালতের প্রতি ভরসা রেখে অপেক্ষা করেছি।”
সুধাময়বাবুর আইনজীবী পার্থ ঘোষ জানান, সম্প্রতি হাইকোর্ট এই মামলার রায় ঘোষণা করে। আদালত ইসিএলকে জানিয়ে দেয়, স্কুলের শংসাপত্রে যে জন্ম তারিখের উল্লেখ রয়েছে, আইন অনুযায়ী তা উপেক্ষা করতে পারে না সংস্থা। চাকরিতে নিয়োগের সময়ে সেই শংসাপত্র সংস্থা কর্তৃপক্ষ জমা নিয়েছিলেন। এর পরে কোনও ভাবেই নতুন করে মেডিক্যাল বোর্ড বসিয়ে বয়স নির্ণয়ের বৈধতা থাকতে পারে না। চার সপ্তাহের মধ্যে ওই খনিকর্মীকে চাকরিতে ফিরিয়ে এত দিনের বকেয়া মেটানো ও উপযুক্ত সময়ে অবসরে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয় আদালতের তরফে।
ইসিএলের সিএমডি-র কারিগরি সচিব নীলাদ্রি রায় জানান, আদালতের রায় দেখে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy