কখনও জুয়া-সাট্টা, কখনও বা মদের ঠেকে বচসা বাধে। আর তাইই চেহারা নিচ্ছে বোমা-গুলির লড়াইয়ের। ঘটনাস্থল, লছিপুর যৌনপল্লি। এর জেরে রাস্তা দিয়ে চলাচল তো দূরঅস্ত, বাড়িতে নিশ্চিন্তে বসে থাকাও দায় বলে অভিযোগ লাগোয়া এলাকার বাসিন্দাদের। তবে সম্প্রতি এলাকার এক হোটেল ব্যবসায়ীকে গ্রেফতারের পরে এলাকায় অপরাধমূলক কাজকর্মের বেশ কিছু তথ্য মিলেছে বলে দাবি পুলিশের।
আসানসোল থেকে বরাকরগামী জিটি রোডে ডান দিকে, নিয়ামতপুরের কাছে এই এলাকাটি রয়েছে। লাগোয়া এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, প্রায় দেড়শো বছরের পুরনো এই পল্লিতে বর্তমানে নানা ধরনের অপরাধমূলক কাজকর্মের রমরমা বেড়েছে।
কী ভাবে? আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের এক কর্তা জানান, ফি রাতে ঝাড়খণ্ড সীমান্ত লাগোয়া এই এলাকায় ভিন্-রাজ্যের কয়েকশো মানুষ আসেন। তাঁদের অনেকেই দুষ্কৃতী বলে পুলিশের দাবি। এঁরাই নানা সময়ে গোলমাল পাকাচ্ছে বলে অভিযোগ বাসিন্দাদের।
গত সোমবারই মাঝরাতে এক ব্যক্তিকে মারধরের অভিযোগ ওঠে। ওই ঘটনার পরে দোষীকে গ্রেফতার ও এলাকার নিরাপত্তা পরিস্থিতির উন্নতির দাবিতে নিয়ামতপুর পুলিশ ফাঁড়িতে বিক্ষোভ দেখান বাসিন্দাদের একাংশ। আরও দাবি, রাত ১০টার পরে যৌনপল্লিতে বহিরাগতদের আনাগোনা বন্ধ করতে হবে। শেষমেশ ওই রাতে অভিযান চালিয়ে মারধরের অভিযোগে গব্বর খান নামে এক হোটেল মালিককে গ্রেফতার করে পুলিশ।
আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের এডিসিপি (পশ্চিম) অনমিত্র দাস বলেন, ‘‘গব্বরের কাছে একটি পিস্তল, ১০ রাউন্ড গুলি, একটি ম্যাগাজিন মিলেছে। কিছু তথ্যও পেয়েছি, যার ভিত্তিতে ধারাবাহিক অভিযান চালানো হচ্ছে।’’ গব্বরকে শুক্রবার আসানসোলে আদালতে তোলা হলে জেল-হাজত হয়।
মূলত কী ধরনের অপরাধমূলক কাজকর্ম ঘটছে এলাকায়? নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক বাসিন্দা জানান, ফি রাতে ‘গৌতম’ নামে এক দুষ্কৃতীর মদতে জুয়ার বড়সড় ঠেক বসছে। ওই ঠেক থেকে প্রায়শই অশান্তি হচ্ছে। এ ছাড়া দুষ্কৃতী হিসেবে এলাকায় পরিচিত ‘বাদল’ নামে এক জন পুকুর ভরাট করে প্রায় ত্রিশটি ঝুপড়ি তৈরি করেছে বলেও পুলিশের দাবি। সেখানেও মদ-জুয়ার ঠেক চলছে বলে অভিযোগ।
বাসিন্দাদের অভিযোগ, জিটি রোডের ধারেই এমন কাজকর্ম চলায় রাস্তা দিয়ে চলাফেরা করাও দায়। অভিযোগ, বিষয়টি নিয়ে পুলিশ ব্যবস্থা নেয় না। যদিও অনমিত্রবাবুর দাবি, ‘‘অভিযান শুরু করেছি। কোনও ভাবেই সাধারণ মানুষের শান্তির বিঘ্ন হবে না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy