E-Paper

ভোটে বরাত নেই, হতাশ শিল্পীরা

আনন্দপুরে ১৮টি বাদ্যকর ও মাজি পরিবারের বাস। তাঁদের মধ্যে পাঁচ জন রাজ্য সরকারের শিল্পীভাতা পান। বাকিদের ভরসা পুজো-পার্বণ, কোনও অনুষ্ঠান।

সুব্রত সীট

শেষ আপডেট: ১১ জুলাই ২০২৩ ০৭:৪৪
ডাক পাওয়ার আশায়: মেরামত করে নিচ্ছেন বাদ্যযন্ত্র। সোমবার দুর্গাপুরের নডিহা আনন্দপুর গ্রামে। ছবি: বিকাশ মশান

ডাক পাওয়ার আশায়: মেরামত করে নিচ্ছেন বাদ্যযন্ত্র। সোমবার দুর্গাপুরের নডিহা আনন্দপুর গ্রামে। ছবি: বিকাশ মশান

অসময়ে আয়ের সুযোগ এনে দেয় নির্বাচন। এক সময় শুধু বিজয় মিছিলেই ডাক পড়ত তাঁদের। তবে গত কয়েক বছরে প্রচার ও গণনার দিনেও ডাক আসে। তবে এ বার পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রচারে ডাক পাননি। গণনার আগের দিন সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্তও ডাক না পাওয়ায় হতাশ দুর্গাপুরের নডিহা লাগোয়া আনন্দপুরের তাসা ও ঢাক বাজিয়েরা।

আনন্দপুরে ১৮টি বাদ্যকর ও মাজি পরিবারের বাস। তাঁদের মধ্যে পাঁচ জন রাজ্য সরকারের শিল্পীভাতা পান। বাকিদের ভরসা পুজো-পার্বণ, কোনও অনুষ্ঠান। তাঁরা জানান, পুজোর মতো ভোট এলেও ডাক পড়ে তাঁদের। বিজয় মিছিলে ঢাক বা তাসা পার্টির ব্যবহার বহু আগে থেকেই চলে আসছে। তবে গত কয়েক বছর ধরে রাজনৈতিক দলগুলি প্রচার আকর্ষণীয় করে তুলতে ঢাক বা তাসাপার্টি রাখছে। ফলে, টানা কয়েক দিন ধরে রোজগার হয়। এ ছাড়া, গণনা এবং বিজয় মিছিলও রয়েছে। সব মিলিয়ে গড়ে এক-এক জন দিনে প্রায় ৫০০ টাকা করে রোজগার করেন। কার্তিক বাদ্যকর, সনৎ বাদ্যকর, সঞ্জয় বাদ্যকরেরা বলেন, “ভোট ছাড়া অল্প দিনে এত বেশি আয় বছরের অন্য কোনও সময় হয় না।”

সোমবার এলাকায় দেখা গেল, শিল্পীদের মন ভার। তাঁদের আক্ষেপ, এখনও এক জনও ডাক পাননি। তবু ঢাক, ঢোল, তাসা, ব্যান্ড, সিন্থেসাইজার, স্যাক্সোফোন প্রভৃতি বার করে পরিষ্কার করছেন তাঁরা। কার্তিক বলেন, “প্রচারে ডাক পাইনি। গণনাতেও ডাক আসেনি। যদি বিজয় মিছিলে আসে!” ওই শিল্পীরা জানান, গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে অধিকাংশ আসনে ভোট হয়নি। ফলে, ডাক পাওয়ার সম্ভাবনাও ছিল না। এ বার ভোট হওয়ায় আশায় ছিলেন। দুর্গাপুরের কুড়ুরিয়াডাঙা, কলাবাগান প্রভৃতি এলাকাতেও কয়েকটি তাসা পার্টির দল রয়েছে। পুজো, অনুষ্ঠানের পাশাপাশি, রোজগার হয় ভোট এলে। অন্য সময় তাঁরা দিনমজুরি, ঠিকা শ্রমিকের কাজ করেন। এ বারের পঞ্চায়েত নির্বাচনে কোনও দল ডাক পায়নি বলে জানান তাঁরা।

কেন এই পরিস্থিতি? রাজনৈতিক ওয়াকিবহাল মহলের মতে, বিধানসভা বা লোকসভা নির্বাচনে এক-এক দিনে বিশাল এলাকা জুড়ে প্রচার করতে হয়। তখন ঢাক, তাসা নিয়ে প্রচারকে আকর্ষণীয় করে তোলার দরকার থাকে। কিন্তু পঞ্চায়েত ভোটে মূলত গ্রাম বা পাড়ার ভিতরে প্রচারে জোর বেশি দিতে হয়। ব্যক্তিগত জনসংযোগ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে এখানে। বিরোধীদের দাবি, পঞ্চায়েত ভোট ঘোষণার পরে রাজ্যে হিংসা ছড়িয়েছে। এই পরিস্থিতিতে বাদ্যযন্ত্র ব্যবহারের ভাবনার অবকাশ ছিল না। যদিও তৃণমূলের জেলা সহ-সভাপতি উত্তম মুখোপাধ্যায় বলেন, “শিল্পীদের এই অনিশ্চয়তা দূর করতেই রাজ্য সরকার শিল্পী-ভাতা দেওয়ারব্যবস্থা করেছে।”

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

West Bengal Panchayat Election 2023 Durgapur

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy