E-Paper

প্রাথমিক স্কুলের ‘ভালমন্দ’ জানতে পরিদর্শনে জোর

সূত্রের খবর, স্কুল ভবনের পরিকাঠামো, শিক্ষাসামগ্রীর পরিকাঠামোর সঙ্গে শিক্ষকদের পড়ানোর ধরনও এসআই-রা দেখবেন।

সৌমেন দত্ত

শেষ আপডেট: ০৯ জুন ২০২৫ ১০:০৬
—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

ভাল, মাঝারি ও দুর্বল— এই তিন ভাগে ভাগ করা হবে জেলার প্রাথমিক স্কুলগুলিকে। এই বিন্যাস হবে বিশেষ কিছু মানদণ্ডের ভিত্তিতে। প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থার ভালমন্দ খতিয়ে দেখতে পরিদর্শনে জোর দিয়েছে জেলা প্রশাসন।

প্রশাসনের একাংশ মনে করে, স্কুলে পরিদর্শন হয় ঠিকই, তবে তা হয় ঢিলেঢালা ভাবে। শিক্ষা ও পরিকাঠামোর সামগ্রিক মানের পুঙ্খানুপুঙ্খ রিপোর্ট জেলা প্রশাসনের কাছে ঠিক মতো আসেনা। যার অর্থ— স্কুলে শিক্ষা কিংবা পরিকাঠামোর ‘ভালমন্দ’ অজানা থেকে যায় প্রশাসনের কাছে। তাই, জেলার প্রাথমিক স্কুলগুলির সামগ্রিক রিপোর্ট তৈরির জন্য জেলা শিক্ষা দফতরকে নির্দেশ দিয়েছেন জেলাশাসক আয়েষা রানি এ। সূত্রের খবর, রিপোর্টে স্কুলগুলিকে তিনটি স্তরে—ভাল, মাঝারি ও দুর্বল বলে চিহ্নিত করতে বলা হয়েছে। যে সব স্কুলগুলি ‘দুর্বল’ বলে চিহ্নিত হবে, সেগুলির দায়িত্ব ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেটদের দেওয়া হবে। তাঁরাই ওই সব স্কুলকে এগিয়ে নিয়ে যাবেন।

জেলাশাসক বলেন, “প্রত্যেক স্কুল ও ছাত্রছাত্রীরা যাতে উন্নয়নের পথে এগিয়ে যায়, সে লক্ষ্য নিয়েই আমরা এগোচ্ছি। পিছিয়ে থাকা স্কুলগুলিকে টেনে তোলা আমাদের কর্তব্য। প্রাথমিক স্তরে এই লক্ষ্য পূরণ হওয়ার পরে মাধ্যমিক স্তরের স্কুলগুলির দিকে নজর দেওয়া হবে।” সম্প্রতি জেলাশাসক বিভিন্ন সময়ে চারটি মহকুমার সব অবর পরিদর্শকদের (এসআই) সঙ্গে বৈঠক করেন। সেখানে এসডিও, বিডিও-রাও ছিলেন। বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, জেলার ৩০০৮টি প্রাথমিক স্কুল পরিদর্শন করবেন এসআই-রা। সব মিলিয়ে জেলার প্রাথমিক স্কুলগুলিতে ৯৪৮৭ জন শিক্ষক রয়েছেন। প্রতিটি স্কুলে পরিচালন কমিটি রয়েছে। সব পক্ষের সঙ্গে কথা বলে বিস্তারিত রিপোর্ট তৈরি করবেন তাঁরা। তাতে মানোন্নয়নের জন্য স্কুলগুলিকে বেছে দেবেন পরিদর্শকেরা। তার ভিত্তিতেই নিয়মিত নজরদারির জন্য ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেটদের দায়িত্ব দেবেন জেলাশাসক।

কী দেখবেন পরিদর্শকেরা?

সূত্রের খবর, স্কুল ভবনের পরিকাঠামো, শিক্ষাসামগ্রীর পরিকাঠামোর সঙ্গে শিক্ষকদের পড়ানোর ধরনও এসআই-রা দেখবেন। বিভিন্ন সময়ে একাধিক স্কুলের অভিযোগ থাকে, আদর্শবিধি মেনে ছাত্র-শিক্ষক অনুপাতে ঘাটতি রয়েছে। ফলে স্কুল চালাতে অসুবিধা হচ্ছে। যদিও প্রশাসনের দাবি, আদর্শবিধির মোতাবেক ছাত্র-শিক্ষক অনুপাত (৩০:১) যা থাকার কথা, জেলার ক্ষেত্রে তা রয়েছে। পরিদর্শন রিপোর্টে প্রতিটি স্কুলের ছাত্র-শিক্ষকের অনুপাত উল্লেখ করতে বলা হয়েছে। মিডডে মিল, কন্যাশ্রী থেকে পড়ুয়াদের মানসিক বিকাশের হালও রিপোর্টে উল্লেখ করার নির্দেশ রয়েছে। ছাত্র ও শিক্ষকদের হাজিরা প্রশাসনের তরফে দেখতে বলা হয়েছে পরিদর্শকদের।

সূত্রের খবর, প্রতিটি স্কুলকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, ক্লাসের রুটিন, শিক্ষা ক্যালেন্ডার শ্রেণিকক্ষের ঘরের বাইরে প্রকাশ্যে টাঙিয়ে রাখতে হবে। পঞ্চায়েতের সাহায্য নিয়ে অন্তত মাসে এক দিন স্কুল পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করতে হবে। জেলাশাসক বলেন, “গরমের ছুটিতে অনেক স্কুল পিছিয়ে পড়া ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে বাড়তি ক্লাস করেছে।”জেলা প্রশাসনের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েও অনেক অভিভাবকের প্রশ্ন, প্রাথমিক স্কুলে শিক্ষক-শিক্ষিকার সমস্যা তেমন একটা নেই। প্রধান শিক্ষক, শিক্ষিকারাই স্কুলের দায়িত্ব কাঁধে তুলে নেন।

তবে তাতে কি ফাঁক থেকে যাচ্ছে? জেলা প্রশাসনের কর্তারা জানাচ্ছেন, ফাঁক না থাকলেও গতি শ্লথ হয়েছে। শিক্ষক-শিক্ষিকারা বাড়তি দায়িত্ব নিতে নিমরাজি থাকছেন অনেক সময়ে। জেলার এক এসআই-এর কথায়, “প্রশাসন নজর দিতেই গরমের ছুটিতেও অনেক স্কুল পিছিয়ে পড়া পড়ুয়াদের নিয়ে বাড়তি ক্লাস করেছে। এই গতি শ্লথ ছিল।”

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Bardhaman

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy