দিঘির পাশে চলছে চাষাবাদ।—নিজস্ব চিত্র।
দীর্ঘদিন ধরে রায়দিঘি অব্যবহৃত হয়ে পড়েছিল। তারপরে এক দিন বাসিন্দারা ঠিক করলেন, ওই দিঘিটিকে কাজে লাগিয়েই গ্রামের সমস্যা ঘোচানো হবে। সেই পরিকল্পনা থেকেই মন্তেশ্বরের জয়রামপুর ও বালিজুরি গ্রামের মাঝখানে থাকা দিঘিটিতে ফের মাছ চাষ ও পাড়ে বাগান তৈরির কাজে হাত দিয়েছেন বাসিন্দারা। তৈরি হয়েছে তহবিলও।
প্রশাসনের সূত্রে জানা গিয়েছে, ২৫ বিঘা জমির উপরে থাকা ওই দিঘিটির প্রধান শরিক সিংহালি গ্রামের সুবোধ চট্টোপাধ্যায়-সহ বেশ কয়েক জন। বিধানসভা ভোটের সময়ে গ্রামে প্রচার করতে এসে প্রয়াত বিধায়ক সজল পাঁজা গ্রামবাসীদের দিঘিটিকে কাজে লাগানোর পরামর্শ দেন। সেই মতো দু’টি গ্রামের বাসিন্দারা মিলে তৈরি করেন ১০ জনের একটি কমিটি। ঠিক হয়, দিঘি থেকে যা আয় হবে, তার অর্ধেক পাবেন মালিক এবং বাকিটা যাবে গ্রামের তহবিলে। দিঘির পাড়ে কলাবাগান থেকে যা আয় হবে, তার ৭০ শতাংশ যাবে গ্রামের তহবিলে এবং মালিক পাবেন ৩০ শতাংশ।
গ্রামের তহবিলের টাকা খরচ হবে দুঃস্থ মেধাবী পড়ুয়াদের পড়াশোনা, বাসিন্দাদের চিকিৎসা, আর্থিক ভাবে পিছিয়ে পড়া পরিবারের মেয়েদের বিয়ে প্রভৃতি কাজে। গ্রামবাসীদের এমন উদ্যোগে সামিল হয়েছে মন্তেশ্বর পঞ্চায়েত সমিতি, কুসুমগ্রাম পঞ্চায়েত ও কৃষি দফতর।
মাস চারেক আগে দিঘির সংস্কার করে শুরু হয়েছে মাছ চাষ। মাছের চারার জোগান দেয় পঞ্চায়েত সমিতি। পঞ্চায়েতের তরফে দেওয়া হয় উন্নত জাতের ১৫০০টি কলা গাছের চারা। একশো দিনের প্রকল্পে বাগানও তৈরির ব্যবস্থাও হয়ে গিয়েছে। কলা গাছে জল দেওয়ার প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো তৈরি করে দিয়েছে কৃষি দফতর। ওই এলাকায় গেলে দেখা যায়, প্রতি দিন গ্রামবাসীরা পালা করে বাগানের পরিচর্চা ও মাছ চাষ করছেন। বালিজুরির বসির শেখ, জয়রামপুরের অমিতেন্দু কুণ্ডুরা বলেন, ‘‘ভাল কাজে স্বেচ্ছাশ্রম দিতে পেরে খুব ভাল লাগছে। তহবিলের টাকায় আমাদেরই তো কষ্ট লাঘব হবে।’’
এই কাজের জন্য তৈরি করা দশ জনের কমিটিতে রয়েছেন বালিজুরি পঞ্চায়েত সদস্য সাগর শেখ। তাঁরও আশা, ‘‘মাছ ও কলা বিক্রি করে বড়সড় একটা তহবিল তৈরি হবে। পরিকল্পনাটি যাতে দীর্ঘমেয়াদী হয়, তার জন্যও বাসিন্দারা সচেষ্ট।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy