শহর জুড়ে পানীয় জলের সঙ্কট চলা সত্ত্বেও কাউন্সিলরদের বৈঠকে বিরোধীদের সে প্রসঙ্গ তুলতেই দেওয়া হয় না। এমন অভিযোগে কাউন্সিরদের সভা বয়কট, শহর জুড়ে গণস্বাক্ষর সংগ্রহ, পুরসভার সামনে দফায়-দফায় বিক্ষোভ— নানা কর্মসূচি নিয়েছে সিপিএম। রবিবার মেয়র পারিষদের বৈঠকে শেষমেশ পুর কর্তৃপক্ষ শহরে জল সমস্যার কথা মেনে নিলেন। দুর্গাপুর পুরসভার বিরোধী দলনেতা সিপিএমের শিবশঙ্কর চট্টোপাধ্যায়ের মন্তব্য, ‘‘দেরিতে হলেও পুরসভার বোধদয় হওয়ায় স্বস্তি পাবেন শহরবাসী।’’
কাউন্সিলরদের সভা নিয়ে বেশ কিছু দিন ধরেই ক্ষুব্ধ সিপিএম। তাদের অভিযোগ, পুর পরিষেবা নিয়ে এলাকাবাসীর ক্ষোভ কাউন্সিলরদের সভায় তুলতেই দেওয়া হয় না। কাউন্সিলরদের সভা ডেকে মেয়র নিজে থাকেন না। এমনকী, একটি সভায় মেয়রের সঙ্গে ডেপুটি মেয়রও গরহাজির ছিলেন। এ ভাবে শহরবাসীর সঙ্গে তৃণমূল পরিচালিত পুরবোর্ড বঞ্চনা করছে বলে দাবি করেন বিরোধী দলনেতা শিবশঙ্করবাবু। তাঁর কথায়, ‘‘গত দু’তিন মাস ধরে শহরের বহু জায়গায় পানীয় জলের ভয়াবহ সঙ্কট চলছে। কিন্তু তা সামলাতে কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছে না পুরসভা।’’ তিনি অভিযোগ করেন, ‘‘বাম আমলে ট্যাঙ্কারে করে পানীয় জল সরবরাহের ব্যবস্থা ছিল। নতুন বোর্ড তা-ও বন্ধ করে দিয়েছে। এর ফলে বিপাকে পড়েছেন বহু মানুষ।’’
পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, সম্প্রতি মেয়র পারিষদ সদস্যদের সভা ছিল। পুরসভার নথি থেকে জানা গিয়েছে, সেখানে জল সরবরাহের দায়িত্বপ্রাপ্ত মেয়র পারিষদের অনুপস্থিতে মেয়র পারিষদ (পূর্ত) প্রভাত চট্টোপাধ্যায় জানান, পানীয় জলের সমস্যা দিন-দিন বাড়ছে। জলের সঙ্কট দেখা দিয়েছে। জলের সমস্যা একটি জ্বলন্ত সমস্যা…।’ তিনি সভায় আরও জানিয়েছেন, বিভিন্ন জায়গায় কুয়ো শুকিয়ে গিয়েছে। যেখানে জলের সংযোগ রয়েছে সেখানেও জলের অভাব দেখা দিয়েছে। সমস্যার সমাধানে ট্যাঙ্কারে করে জল সরবরাহের জন্য ডেপুটি মেয়র এবং জল সরবরাহ ও পূর্ত দফতরের মেয়র পারিষদকে নিয়ে কমিটি গড়া হয়েছে। ১৬টি ট্যাঙ্কার এবং তিনটি ট্রাক্টর কেনার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
নিয়ম অনুযায়ী সোমবার সেই সিদ্ধান্ত কাউন্সিলরদের সভা ডেকে অনুমোদন করা হয়। সেখানে এ সব তথ্য দেখে বেশ অবাক বিরোধী দলের কাউন্সিলররা। শিবশঙ্করবাবু বলেন, ‘‘পানীয় জলের সমস্যার কথা সভায় এক বারও আমাদের তুলতে দেওয়া হয়নি। অথচ, এ দিন সব দেখে তাজ্জব হয়ে যাই। যাই হোক, জল সমস্যা মেটাতে পুরসভা যে শেষ পর্যন্ত উদ্যোগী হল তাতে আমরা খুশি।’’
পুরসভার ডেপুটি মেয়র অমিতাভ বন্দ্যোপাধ্যায় অবশ্য জলের সমস্যার দায় চাপিয়েছেন আগের বামফ্রন্ট পরিচালিত পুরবোর্ডের উপরেই। তিনি দাবি করেন, ‘‘আগের আমলে অপরিকল্পিত ভাবে কাজ হয়েছে। তবে আমরা জলের সমস্যা মেটানোর চেষ্টা করছি। কোথায় কী অসুবিধা আছে, সে ব্যাপারে আমরা যথেষ্ট অবগত রয়েছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy