Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

পথহারা খুদেকে ফিরিয়ে দিল পুলিশ

পুলিশের হাতে পড়ার পরে সে ‘আকাশ’ ও ‘বাঁকুড়া’— দু’টি শব্দ বলেছিল বারবার। তার নাম যে আকাশ, তা একপ্রকার নিশ্চিত হয়েছিল পুলিশ। কিন্তু, ঠিকানা বাঁকুড়ার কোথায়, ধন্দ ছিল সে নিয়ে। ঘণ্টা তিনেক চেষ্টার পরে শেষমেশ জানা গেল, খুদেটির মামার বাড়ি বাঁকুড়ার বড়জোড়ার কলগড়া গ্রামে। বাড়ি দুর্গাপুরের ডিটিপিএস কলোনি লাগোয়া সুকান্তপল্লি এলাকায়। মায়ের হাতে তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রটিকে তুলে দিতে পেরে হাঁফ ছেড়ে বাঁচে দুর্গাপুরের কোকওভেন থানার পুলিশ।

মায়ের হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে আকাশকে। —নিজস্ব চিত্র।

মায়ের হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে আকাশকে। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ১১ এপ্রিল ২০১৫ ০২:০৩
Share: Save:

পুলিশের হাতে পড়ার পরে সে ‘আকাশ’ ও ‘বাঁকুড়া’— দু’টি শব্দ বলেছিল বারবার। তার নাম যে আকাশ, তা একপ্রকার নিশ্চিত হয়েছিল পুলিশ। কিন্তু, ঠিকানা বাঁকুড়ার কোথায়, ধন্দ ছিল সে নিয়ে। ঘণ্টা তিনেক চেষ্টার পরে শেষমেশ জানা গেল, খুদেটির মামার বাড়ি বাঁকুড়ার বড়জোড়ার কলগড়া গ্রামে। বাড়ি দুর্গাপুরের ডিটিপিএস কলোনি লাগোয়া সুকান্তপল্লি এলাকায়। মায়ের হাতে তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রটিকে তুলে দিতে পেরে হাঁফ ছেড়ে বাঁচে দুর্গাপুরের কোকওভেন থানার পুলিশ।

ডিটিপিএস এলাকার স্থানীয় প্রাথমিক স্কুলের পড়ুয়া আকাশ রাম রোজকার মতো সকালে বাড়ি থেকে গিয়েছিল পাশের পাড়ায় ‘টিউশন’ পড়তে। সকাল ৯টা নাগাদ ফেরার কথা। কিন্তু সে আর ফেরেনি। পরিবারে দুশ্চিন্তা শুরু হয়ে যায়। চারদিকে খোঁজখবর করেও তার খোঁজ মেলেনি। এ দিকে সেই সময় এলাকা থেকে প্রায় পাঁচ কিলোমিটার দূরে হেডকোয়ার্টার মোড়ে খুদেকে ঘুরে বেড়াতে দেখে সন্দেহ হয় বাসিন্দাদের। টহলদার পুলিশ ছেলেটিকে নিয়ে পাড়ায়-পাড়ায় খোঁজ করেও কোনও সূত্র না পেয়ে শেষ পর্যন্ত থানায় ফিরে আসে।

থানায় চকোলেট দিয়ে তার নাম ও বাড়ির ঠিকানা জিজ্ঞেস করতে শুরু করেন পুলিশকর্মীরা। সে এক সঙ্গে ‘আকাশ’ ও ‘বাঁকুড়া’ শব্দ দু’টি বলে। আরও সমস্যায় পড়ে যান পুলিশকর্মীরা। বাঁকুড়ার কোথায়? শেষ পর্যন্ত খবর পৌঁছয় সুকান্তপল্লিতে। সঙ্গে-সঙ্গে প্রতিবেশী পাপ্পু মল্লিককে নিয়ে সুমিত্রা রাম রওনা দেন থানায়। সেখানে ছেলেকে দেখে যেন প্রাণ ফিরে পান তিনিও।

পুলিশকর্মীদের আকাশ কিছু না বললেও মাকে সে জানায়, কী ভাবে হারিয়ে গিয়েছিল। পরে সুমিত্রাদেবী পুলিশকে জানান, আকাশের মামাবাড়ি বাঁকুড়ার বড়জোড়ার কলগড়া গ্রামে। তার দিদিমা মাধুরী রুইদাস দিন কয়েক আগে এসেছিলেন। আকাশ বায়না ধরে, সে দিদিমার সঙ্গে মামার বাড়ি যাবে। শুক্রবার সকালে দিদিমা ফিরে যান। এর পরেই ‘টিউশন’ পড়তে বেরিয়ে সে নিজেই মামার বাড়ি চলে যাবে বলে হাঁটতে শুরু করে।

আকাশের বাবা বিক্রমবাবু বড়জোড়ায় কয়লাখনিতে ঠিকাকর্মীর কাজ করেন। তিনি বলেন, ‘‘ও যে এমন কাণ্ড করবে ভাবতেই পারিনি!’’ তার মা সুমিত্রাদেবী জানান, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব এক বার ছেলেকে মামার বাড়ি ঘুরিয়ে আনার ব্যবস্থা করবেন। তাঁর কথায়, ‘‘যা ঘটল, এর পরে আর ঝুঁকি নেব না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE