Advertisement
০৩ মে ২০২৪
police

Accident: ‘ঘুম পেয়েছে বাড়ি যা’ বলে দেবে পুলিশ, চালকদের চোখে নজরদারির ভাবনা

পূর্ব বর্ধমান জেলা পুলিশ পরীক্ষামূলক ভাবে তদন্তের কাজে ব্যবহৃত দু’টি গাড়িতে ওই ডিভাইস বসানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বর্ধমান শেষ আপডেট: ১৮ জুলাই ২০২২ ২০:৩০
Share: Save:

গাড়ি চালানোর সময় চোখ লেগে এলে মুহূর্তেই চালককে সজাগ করে দেবে যন্ত্র। সরাসরি অবশ্য করবে না। চোখের পাতার নড়াচড়া দেখে ওই যন্ত্র বুঝে যাবে, চালক ঘুমে আচ্ছন্ন। তারই সঙ্কেতবার্তা পৌঁছে যাবে পুলিশের অপারেটর রুমে। সঙ্গে সঙ্গে অপারেটর রুম থেকে যোগাযোগ করা হবে ঘুমে ঢুলুঢুলু চালকের সঙ্গে। তাঁকে বলা হবে, ‘‘সজাগ হোন।’’ জিপিএস প্রযুক্তির মাধ্যমে দুর্ঘটনা রুখতে পুলিশের গাড়িতে এমনই যন্ত্র বসানোর কথা ভাবছে পূর্ব বর্ধমান জেলা পুলিশ। যার নাম ‘নোভাস অ্যাওয়ার’। সাধারণত সেনাবাহিনীর গাড়িতে এই ধরনের যন্ত্র বসানো থাকে। এ বার পূর্ব বর্ধমান জেলা পুলিশও পরীক্ষামূলক ভাবে তদন্তের কাজে ব্যবহৃত তাদের দু’টি গাড়িতে ওই ডিভাইস বসানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

পুলিশ সূত্রে খবর, ‘নোভাস অ্যাওয়ার’ তৈরি করেছে একটি বহুজাতিক সংস্থা। আপাতত যে দু’টি গাড়িতে ওই যন্ত্র বসানোর কথা ভাবা হয়েছে, তার জন্য মেরেকেটে ৪০-৫০ হাজার টাকা খরচ হতে পারে। পরীক্ষা সফল হলে জেলা পুলিশের ১৭৮টি চারচাকা ও ১২টি প্রিজন ভ্যানে ওই যন্ত্র বসানো হবে।

কী ভাবে কাজ করবে ডিভাইসটি? গুরুগ্রামের প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ পঙ্কজ শর্মা জানান, যন্ত্রটি এমন জায়গায় বসাতে হবে, যেখান থেকে সহজেই চালকের চোখের পাতা দেখা যাবে তাতে। রাতে দীর্ঘ ক্ষণ গাড়ি চালালে, অনেক চালকেরই চোখের পাতা লেগে আসে। চোখের পাতার নড়াচড়ায় অস্বাভাবিকতা লক্ষ করলেই তার ভিডিয়ো তুলে নেবে ওই যন্ত্র। তার পর সেই ভিডিয়ো মুহূর্তে পৌঁছে যাবে অপারেটর রুমের সার্ভারে। সেখান থেকে চালকের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাঁকে সতর্ক করা হবে।

২০২০ সালের ১১ সেপ্টেম্বরের ঘটনা। ভোরে হুগলির দাদপুরে গাড়ি দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় কলকাতা পুলিশের প্রথম মহিলা ওসি দেবশ্রী চট্টোপাধ্যায়ের। তদন্তে জানা যায়, একটানা গাড়ি চালিয়ে দেবশ্রীর গাড়িচালকের চোখ ঘুমে আচ্ছন্ন পড়েছিল। এর পর নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ওই গাড়িটি সজোরে ধাক্কা মারে রাস্তায় ধারে দাঁড়িয়ে থাকা একটি ট্রাকের পিছনে। দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় দেবশ্রী, তাঁর নিরাপত্তারক্ষী ও গাড়িচালকের। এই ঘটনা সেই সময় গোটা পুলিশমহলকেই ভাবিয়ে তুলেছিল।

মাস সাত-আটেক আগের কথা। গাড়ি দুর্ঘটনা রুখতে সক্ষম ‘নোভাস অ্যাওয়ার’ ডিভাইসটির কথা জানতে পারেন বর্ধমানের অতিরিক্ত জেলা পুলিশ সুপার (সদর) কল্যাণ সিংহ রায়। গোটা বিষয়টি তিনি পুলিশ সুপার কামনাশিস সেনকেও জানান। তার পর সুপার নিজের উদ্যোগেই যাবতীয় খোঁজখবর করে ওই ডিভাইসের পরীক্ষামূলক প্রয়োগের সিদ্ধান্ত নেন। কামনাশিস বলেন, ‘‘পূর্ব বর্ধমান জেলা পুলিশ নোভাস অ্যাওয়ার ব্যবহার করতে চলেছে। এই জেলায় তো বটেই, রাজ্যেও প্রথম এই যন্ত্র ব্যবহার করা হচ্ছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

police vehicle Accident
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE