Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪
Coronavirus Lockdown

পর্যটনকেন্দ্র খোলায় খুশি সব পক্ষ

সকালে মাইথনে গিয়ে দেখা গেল, একেবারে সাজসাজ রব। বেসরকারি হোটেল মালিকেরা নিজেদের তত্ত্বাবধানেই জীবাণুনাশক ছড়ানোর কাজ শুরু করে দিয়েছেন।

চলছে বোট মেরামতি ও পরিষ্কার করা। সোমবার মাইথনে। ছবি: পাপন চৌধুরী

চলছে বোট মেরামতি ও পরিষ্কার করা। সোমবার মাইথনে। ছবি: পাপন চৌধুরী

নিজস্ব সংবাদদাতা
আসানসোল শেষ আপডেট: ০৯ জুন ২০২০ ০৫:২৮
Share: Save:

সরকারি নির্দেশ মেলার পরেই, সোমবার থেকে মাইথন পর্যটনকেন্দ্র খুলতে তোড়জোড় শুরু হয়ে গিয়েছে। সরকারি পর্যটন আবাস থেকে বেসরকারি হোটেলগুলিতে ছড়ানো হচ্ছে জীবাণুনাশক। সাফাই কাজ শুরু হয়েছে নৌকা-জেটিতে। সাফ-সুতরো করে মাইথন প্রবেশদ্বারের দোকান খোলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন মালিকেরাও। তবে, এ দিনও মাইথনের একাধিক জায়গায় পুলিশ-পিকেট দেখা গিয়েছে।

সকালে মাইথনে গিয়ে দেখা গেল, একেবারে সাজসাজ রব। বেসরকারি হোটেল মালিকেরা নিজেদের তত্ত্বাবধানেই জীবাণুনাশক ছড়ানোর কাজ শুরু করে দিয়েছেন। ‘মাইথন হোটেলিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশন’-এর সম্পাদক মনোজ তিওয়ারি জানিয়েছেন, এখানে প্রায় ১২টি বেসরকারি হোটেল আছে। প্রত্যেকে মিলেই ঠিক করেছেন হোটেলকর্মী ও পর্যটকদের নিরাপত্তার জন্য প্রথমে জীবাণুনাশক ছড়াবেন। এ দিন শুধু এই কাজটিই করা হয়েছে। তাঁরা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, সরকারি নির্দেশ মতো দূরত্ববিধি মেনে চলা, প্রত্যেক কর্মী ও পর্যটকদের ‘মাস্ক’ ব্যবহার করতে হবে। মনোজবাবু বলেন, ‘‘এখন পর্যটনের সময় নয়। ফলে, পর্যটক আসার সম্ভাবনা খুবই কম। তবুও যাঁরা আসবেন তাঁদের সরকারি বিধিনিষেধ মেনে চলতে হবে।’’

দু’মাসের বেশি সময় ধরে বন্ধ রয়েছে ব্যবসা। তাই খোলার অনুমতি পেয়ে হোটেলগুলি আলোর মালায় সাজিয়ে তুলেছেন মালিকেরা। এ দিন, সরকারি পর্যটন আবাসেও জীবাণুনাশক ছড়ানো হয়েছে। অতিরিক্ত জেলাশাসক (পর্যটন) প্রশান্ত মণ্ডল বলেন, ‘‘মাইথনে পর্যটক যাতায়াতে কোনও বাধা নেই। তবে সরকার যে নির্দেশিকা জারি করেছে সেই মতো পদক্ষেপ করতে হবে হোটেল মালিকদের। সেগুলি সময়ে সময়ে পর্যবেক্ষণ করা হবে।’’

মাইথনের অন্যতম আকর্ষণ বরাকর নদে নৌকাবিহার। এই কাজের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন কমবেশি ২১ জন নৌকাচালক। দু’মাস ধরে ‘লকডাউন’ চলায় ব্যবসা হয়নি। খুবই অর্থকষ্টে ছিলেন বলে জানিয়েছেন, গুলাব আনসারি। সরকার পর্যটনকেন্দ্র খোলার অনুমতি দেওয়ায় আশায় বুক বেঁধেছেন তাঁরা। এ দিন, সকাল থেকে নৌকা চালকেরা মিলে জেটির সাফাই করা থেকে জীবাণুনাশক ছড়ানোর কাজে নেমে পড়েছেন। গুলাব আনসারি বলেন, ‘‘বছরভর টুকটাক ব্যবসা চলে। মানুষজন কল্যাণেশ্বরী মন্দিরে এলে মাইথনে আসেন। নৌকায় চাপেন। এত দিন পরে ফের দু’পয়সার মুখ দেখব ভেবে ভাল লাগছে।’’

ব্যবসা ফের শুরু হবে, এই আনন্দে নিজেই জেটির একপ্রান্ত থেকে অপরপ্রান্তে জীবাণুনাশক ছড়াচ্ছেন অশীতিপর রহমত আলি। তিনি বলেন, ‘‘পরিবারের মুখে ফের হাসি ফোটাতে পারব।’’ দূরত্ববিধি মেনে চলতে নৌকায় কত জন যাত্রী চাপানো যাবে, তা এখনও প্রশাসনের তরফে ঠিক করে দেওয়া হয়নি। তবে যেমন নির্দেশ আসবে তেমনই ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানালেন, রফিক আনসারি।

মাইথন পর্যটন কেন্দ্রের সঙ্গেই জড়িয়ে গিয়েছে কল্যাণেশ্বরী মন্দিরের নাম। ১ জুন থেকেই ভক্তদের জন্য মন্দিরের দ্বার খুলে দেওয়া হয়েছে। এ বার মাইথন পর্যটনকেন্দ্র খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্তে খুশি মন্দির লাগোয়া দোকান মালিকেরা। তাঁরা জানালেন, মাইথনের আকর্ষণেও কল্যাণেশ্বরী মন্দিরে ভিড় হয়। তাই এ বার লক্ষ্মীলাভের আশায় রয়েছেন তাঁরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus Lockdown Tourist Spot
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE