অন্ডাল স্টেশন। —ফাইল চিত্র।
ঠিক ছিল, পশ্চিমবঙ্গের ডানকুনিতে পূর্ব পণ্যবাহী করিডরটি শেষ হবে। কিন্তু রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণবের ইঙ্গিত, করিডরটি শেষ হবে অন্ডালে। পণ্য পরিবহণ, অন্ডালের ভৌগোলিক গুরুত্ব, উত্তর-পূর্ব ভারতের কথা মাথায় রেখে প্রাথমিক ভাবে এই পরিকল্পনা নেওয়া হয়ে থাকতে পারে বলে রেল সূত্রে দাবি।
পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক কৌশিক মিত্র বলেন, “পণ্য পরিবহণের বেশির ভাগটাই অন্ডালকে কেন্দ্র করে হয়। তাই আপাতত ডানকুনির বদলে অন্ডাল পর্যন্ত প্রকল্পটি হবে বলে রেল মন্ত্রক জানিয়েছি।” রেল, শিল্প সংস্থাগুলির সূত্রের মতে, অন্ডালকে বেছে নেওয়ার নেপথ্যে থাকতে পারে চারটি কারণ।— প্রথমত, পণ্য পরিবহণের পরিমাণ। পশ্চিম বর্ধমান, ঝাড়খণ্ড ও ওড়িশা থেকে রেলপথে বাঁকুড়ার মেজিয়া, বীরভূমের বক্রেশ্বর তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র, উত্তরবঙ্গ, উত্তর-পূর্ব ভারতে কয়লা পরিবহণ হয়। ডিএসপি, ইস্কো ও ক্ষুদ্র ইস্পাত কারখানাগুলির সামগ্রী দেশের নানা প্রান্তে পাঠানো ও বিভিন্ন এলাকা থেকে কাঁচামাল নিয়ে আসার কাজও মালগাড়ির মাধ্যমে হয়। পাশাপাশি, পশ্চিম বর্ধমান থেকে সিমেন্ট পাঠানো হয় রাজ্য ও দেশের নানা প্রান্তে।
দ্বিতীয়ত, অন্ডালের ভৌগোলিক অবস্থানটি গুরুত্বপূর্ণ। এটির গা দিয়ে গিয়েছে, উত্তরপ্রদেশ, বিহার, ঝড়খণ্ড, পশ্চিমবঙ্গ দিয়ে যাওয়া ১২৬৯.৭০ কিলোমিটার দীর্ঘ ১৯ নম্বর জাতীয় সড়ক। ফলে, সড়কপথেও দেশের নানা প্রান্ত থেকে অন্ডালে দ্রুত আসা-যাওয়া সম্ভব। সময়ের বিষয়টি উঠে আসছে ফেডারেশন অব সাউথ বেঙ্গল চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ড্রাস্টিজের সভাপতি রাজেন্দ্রপ্রসাদ খেতানের কথাতেও। তাঁর মতে, যাত্রিবাহী ট্রেনের লাইনে পণ্য আমদানি-রফতানির জন্য অনেক সময় লাগে। পণ্য করিডর হলে, অনেকটাইসময় বাঁচবে। তৃতীয়ত, উত্তর-পূর্ব ভারতে পৌঁছনোর অন্যতম প্রধান মাধ্যম অন্ডাল। অন্ডাল থেকে সাঁইথিয়া-রামপুরহাট হয়ে সেখানে দ্রুত পৌঁছনো যায় সড়ক ও রেল, উভয় পথেই। ফলে, শিল্প-সামগ্রীর পাশাপাশি, জরুরি প্রয়োজনে দ্রুত দেশের সে প্রান্তে অন্ডাল হয়ে রসদ পৌঁছনো যাব। চতুর্থত, অন্ডাল স্টেশন থেকে সড়ক পথে মাত্র দশ কিলোমিটারের মধ্যে কাজী নজরুল ইসলাম বিমানবন্দর থাকায় দক্ষিণ ও পূর্ব-সহ ভারতের নানা প্রান্তের শিল্পোদ্যোগীদের আসা-যাওয়ার ক্ষেত্রেও সমস্যা হবে না। শিল্পে প্রাধান্যের বিষয়টি জানাচ্ছেন কৌশিকও। তাঁর দাবি, “রেলমন্ত্রীর অন্ডাল করিডর ঘোষণার পরে প্রচুর শিল্পপতি, শিল্প সংস্থা থেকে ব্যাপক সাড়া মিলেছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy