Advertisement
০৫ মে ২০২৪
Kalna Sub Divisional Hospital

সিঁড়ি বেয়ে রোগীর ট্রলি ঠেলে তোলেন পরিজনেরাই, ক্ষোভ

হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, দৈনিক ১৭০ থেকে ১৯০ জন রোগী মহকুমা হাসপাতাল এবং সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে ভর্তি হন।

কালনা মহকুমা হাসপাতাল।

কালনা মহকুমা হাসপাতাল। — ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কালনা শেষ আপডেট: ২৫ এপ্রিল ২০২৩ ০৯:৫৯
Share: Save:

জরুরি বিভাগে চিকিৎসককে দেখানোর পরে অসুস্থ রোগীদের বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই ট্রলিতে বিভিন্ন ওয়ার্ডে ভর্তি করাতে নিয়ে যেতে হয়। কিন্তু হাসপাতালের কোনও কর্মী নন, এ কাজ করেন রোগীর আত্মীয়েরাই। কালনা মহকুমা হাসপাতালে আকছারই দেখা যায় এই দৃশ্য। রোগীর আত্মীয়দের দাবি, হাসপাতালে মহিলা মেডিসিন বিভাগটি রয়েছে দোতলায়। গুরুত্বপূর্ণ এই বিভাগে রোগীদের নিয়ে যেতে আত্মীয়দের চরম সমস্যায় পড়তে হয়। র‌্যাম্প না থাকায় খাড়া সিঁড়ি দিয়ে অসুস্থ রোগীকে স্ট্রেচারে নিয়ে যেতে হয়। রোগীর আত্মীয়দের দাবি, সিঁড়ি দিয়ে ওঠার সময়ে যে কোনও দিন স্ট্রেচার থেকে পড়ে গিয়ে বিপদ ঘটতে পারে রোগীর।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, দৈনিক ১৭০ থেকে ১৯০ জন রোগী মহকুমা হাসপাতাল এবং সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে ভর্তি হন। বিভিন্ন ওয়ার্ডে নিয়ে যাওয়া তো বটেই রক্ত-সহ বিভিন্ন পরীক্ষার জন্যও রোগীদের নানা স্থানে নিয়ে যেতে স্ট্রেচার লাগে। হাসপাতালের ১৮টি ট্রলি প্রয়োজনের তুলনায় বেশ কম। বহু ক্ষেত্রে পরীক্ষা করাতে নিয়ে যাওয়া রোগীদের ট্রলি দীর্ঘ সময় আটকেও থাকে। তখন অসুবিধা বাড়ে আরও। বর্তমানে ‘ট্রলি বয়’ পদে সরকারি নিয়োগ নেই। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তরফে এক জন কর্মীকে সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত রোগীদের নিয়ে যাতায়াত করা ট্রলিগুলি দেখাশোনার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

মূলত দুই হাসপাতালের কোন কোন জায়গায় ট্রলিগুলি পড়ে রয়েছে, সেগুলি কোথায় রাখতে হবে, কারা ট্রলি নিয়ে যাওয়ার পরে ফেরত দেননি, সে সবেরই হিসেব রাখেন তিনি। ফলে ওয়ার্ডে ভর্তির জন্য ট্রলি নিয়ে যাতায়াত করতে হয় রোগীর পরিজনেদেরই।

এক রোগীর আত্মীয় রহিম মোল্লা বলেন, ‘‘জরুরি বিভাগ বলে দেয় রোগীকে কোন ওয়ার্ডে নিয়ে যেতে হবে। কেউ না থাকায় নিজেদেরই ট্রলি ঠেলে নিয়ে যেতে হয়। দূরে ওয়ার্ড হলে বেশ সমস্যা হয়। হাসপাতালের এ ব্যাপারে আলাদা পরিকাঠামোগড়া উচিত।’’

সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল থেকে বেশ কিছুটা হেঁটে মহকুমা হাসপাতালে যেতে হয়। দোতলায় মহিলা মেডিসিন বিভাগে ভিড় থাকে ভালই। রোগীর আত্মীয়েরা জানিয়েছেন, চাকা লাগানো ট্রলি করে বেশ কিছুটা পথ রোগীকে ঠেলে আনার পরে সিঁড়ি দিয়ে উঠতে হয়। তখন স্ট্রেচার হাতে বা কাঁধে নিয়েই যেতে হয়। তাঁদের দাবি, কোনও ভাবে পা পিছলে গেলে বা নিয়ন্ত্রণ হারালে রোগী স্ট্রেচার থেকে পড়ে যেতে পারেন। বহু সময় যন্ত্রণায় কাতরাতে থাকা রোগীও এমন ছটফট করেন যে পড়ে যাওয়ার ভয় থাকে।

হাসপাতালের এক কর্তা বলেন, ‘‘আমরা ২০১৭ সাল থেকে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি মহিলা মেডিসিন বিভাগে যাওয়ার পথে একটি র্যা ম্প তৈরির। এখনও টাকা বরাদ্দ হয়নি।’’

হাসপাতালের সহকারী সুপার গৌতম বিশ্বাস জানিয়েছেন, সমস্যাটি সমাধানের জন্য মহকুমা হাসপাতালে একতলা ভবনে থাকা শিশু বিভাগটি দোতলায় এবং মহিলা বিভাগটি একতলায় নিয়ে যাওয়ার ভাবনা রয়েছে। তবে শিশু বিভাগে শয্যা সংখ্যা কম। সংলগ্ন চারটি দেওয়াল ভেঙে শয্যা সংখ্যা বাড়ানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘আরও কিছু ট্রলি যাতে পাওয়া যায় সে চেষ্টাও করা হচ্ছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Kalna Sub Divisional Hospital Kalna
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE