Advertisement
০২ মে ২০২৪

ভরসা বেশি ভাড়ার ট্রেকার, ভ্যান

আশঙ্কা ছিলই, তৃণমূলের শহিদ দিবস উপলক্ষ্যে জেলা থেকে শ’য়ে শ’য়ে বাস কলকাতা যাওয়ায় সেই আশঙ্কায় প্রায় সত্যি হয়ে গেল। বাস না পেয়ে দুর্ভোগে পড়েন নিত্যযাত্রী থেকে সাধারণ মানুষ। কোথাও বেশি ভাড়া দিয়ে ট্রেকার, কোথাও মোটরভ্যান, পিক-আপ ভ্যান হয় সঙ্গী। ভোগান্তি হতে পারে ভেবে তৃণমূল নেতারা অবশ্য আগেই ক্ষমা চেয়েছিলেন।

কাটোয়ায় ভিড় বাসের ছাদে। নিজস্ব চিত্র।

কাটোয়ায় ভিড় বাসের ছাদে। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ২২ জুলাই ২০১৬ ০১:১৫
Share: Save:

আশঙ্কা ছিলই, তৃণমূলের শহিদ দিবস উপলক্ষ্যে জেলা থেকে শ’য়ে শ’য়ে বাস কলকাতা যাওয়ায় সেই আশঙ্কায় প্রায় সত্যি হয়ে গেল। বাস না পেয়ে দুর্ভোগে পড়েন নিত্যযাত্রী থেকে সাধারণ মানুষ। কোথাও বেশি ভাড়া দিয়ে ট্রেকার, কোথাও মোটরভ্যান, পিক-আপ ভ্যান হয় সঙ্গী। ভোগান্তি হতে পারে ভেবে তৃণমূল নেতারা অবশ্য আগেই ক্ষমা চেয়েছিলেন।

বিসি রোড, বর্ধমান

কার্জন গেট থেকে রানিগঞ্জ মোড় পর্যন্ত ৫০০ মিটার রাস্তা পেরনোর জন্য কমপক্ষে আধ ঘন্টা সময় হাতে নিয়ে বেরোতে হয়। কিন্তু বৃহস্পতিবার বারবেলাতে সেই রাস্তা কার্যত ফাঁকা। হকারদের উৎপাত নেই। ফুটপাথ ধরে অনায়াসে হাঁটা যাচ্ছে। এক ব্যবসায়ী বলেন, “সব বাস তো কলকাতায়। লোকজন আসবে কী করে? আর হকাররা তৃণমূলের সভায়। তাই ফাঁকা বাজার।” পুলিশের দাবি, রাস্তায় টোটো কম, যানজটও হয়নি।

বাঁকুড়া মোড়, খণ্ডঘোষ

বর্ধমানের সঙ্গে হুগলি ও বাঁকুড়ার যোগাযোগে জরুরি রাস্তা বাঁকুড়া মোড়। প্রতি দিন ২৪৫টি করে বাস চলে। এ দিন দু’একটি বাস চলতে দেখা যায়। ঘন্টার পর ঘন্টা দাঁড়িয়ে ফিরে যান অনেকে। কিছু ট্রেকার, মালবাহী ছোট গাড়িই ছিল ভরসা। তার জন্য বাসের দু’গুন-তিন গুন ভাড়াও দিতে হয় যাত্রীদের। শিশু কোলে দাঁড়িয়েছিলেন সুনয়না দাস। তিনি বলেন, “সকাল থেকে দাঁড়িয়ে রয়েছি। ইন্দাস যাওয়ার কোনও গাড়িই নেই। ট্রেকারগুলিতে বাদুরঝোলা ভিড়। খণ্ডঘোষের বাদুলিয়া মোড়েও একই ছবি।

সগড়াই মোড়, রায়না

এক দিকে আরামবাগ, অন্য দিকে জামালপুর। অন্য দিনের ব্যস্ত মোড় এ দিন ফাঁকা। দোকানপাটে ভিড় নেই। মোটরচালিত ভ্যানে বিপজ্জনক ভাবে যাতায়াত করছেন যাত্রীরা। অনেক মহিলা বলেন, ‘‘এ ভাবে দুর্ভোগে ফেলার মানে হয়!” রায়না থেকে ১১০টি বাস কলকাতায় গিয়েছে।

মেমারি-মালডাঙা রোড

মেমারি বাসস্ট্যান্ডে দাঁড়িয়ে ছিলেন বৃদ্ধ শঙ্কর রায়। হুগলির পান্ডুয়া থেকে মন্তেশ্বরের একটি শ্রাদ্ধানুষ্ঠানে যাবেন তিনি। দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে বাসের দেখা না পেয়ে ক্ষোভ উগড়ে দিলেন, ‘‘একদমই বাস পাব না বুঝিনি। এ জানলে বাড়ি থেকে বেরোতামই না।” শেষ পর্যন্ত তিনটি ট্রেকার পাল্টে গন্তব্যস্থলে পৌঁছেছেন।

বর্ধমান-কাটোয়া রোড

প্রয়োজন ছাড়া রাস্তায় বেরোতে দেখা যায়নি কাউকে। বর্ধমান যেতেও দুর্ভোগে পড়েছেন অনেকে। ভাতার থেকে বর্ধমান যাওয়ার ট্রেন থাকলেও সংখ্যায় কম, ফলে বাস না পেয়ে নাকাল বহু মানুষ। ভাতার-কামারপাড়া, ভাতার-মালডাঙা রোডের যাত্রীদের অবস্থাও শোচনীয়।

কাটোয়া বাসস্ট্যান্ড

অন্য দিনের তুলনায় যাত্রী সংখ্যা কম ছিল। কিছু বাস চললেও দেরিতে চলেছে। বর্ধমান বা মেমারি রুটের যাত্রীরা দুর্ভোগে পড়েছেন। বাইরের লোকজন শহরে কম এসেছেন বলে ব্যবসায়ীদের দাবি। যদিও আইএনটিটিইসির কাটোয়া বাসস্ট্যান্ডের নেতা নারায়নচন্দ্র সেন বলেন, “বর্ধমান ও কাটোয়া রুট ছাড়া, অন্য রুটে বাস চলাচলে কোনও সমস্যা হয়নি।” ফেরিঘাটগুলিতেও যাত্রী কম ছিল। কাটোয়া আদালতে বিচারপ্রার্থী কম আসায়, আইনজীবী থেকে ল’ক্লার্করা টিভিতে মুখ্যমন্ত্রী ভাষণ শুনতে ব্যস্ত ছিলেন।

কালনা বাসস্ট্যান্ড

বেশির ভাগ বেসরকারি বাস ছিল না। সব থেকে বেশি বাস তুলে নেওয়া হয় কালনা-বর্ধমান রোড এবং কালনা-মেমারি রুটের। ফলে বর্ধমান যাওয়ার দুটি মাত্র বাস ছিল। মেমারি যাওয়ার জন্য ছিল একটি বাস। বেগপুরের বাসিন্দা বৃদ্ধ গোবিন্দ মণ্ডল জানান, ঘণ্টা দেড়েক ধরে অপেক্ষা করেও বাস মেলেনি। শেষমেশ, বেশি ভাড়া দিয়ে মোটরভ্যান এবং টোটোয় ভরসা হয় যাত্রীদের।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

fare raised 21stjuly
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE