Advertisement
E-Paper

ধানে ক্ষতি,ফের চাষির মৃত্যু ভাতারে

ফের এক চাষির অস্বাভাবিক মৃত্যু হল ভাতারে। দিলীপ ঘোষ (৫৬) নামে ওই ধানচাষির পরিবারের দাবি, দফায় দফায় কালবৈশাখী ঝড়-বৃষ্টিতে ধানের বিপুল ক্ষতি হয়। দেনা শোধ করতে না পারার আশঙ্কাতেই আত্মঘাতী হয়েছেন তিনি।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৫ মে ২০১৭ ০২:২২
মৃত চাষির বাড়িতে। নিজস্ব চিত্র

মৃত চাষির বাড়িতে। নিজস্ব চিত্র

ফের এক চাষির অস্বাভাবিক মৃত্যু হল ভাতারে। দিলীপ ঘোষ (৫৬) নামে ওই ধানচাষির পরিবারের দাবি, দফায় দফায় কালবৈশাখী ঝড়-বৃষ্টিতে ধানের বিপুল ক্ষতি হয়। দেনা শোধ করতে না পারার আশঙ্কাতেই আত্মঘাতী হয়েছেন তিনি। ভাতারের বিডিও প্রলয় মণ্ডলও জানান, এলাকার ৯২ শতাংশ জমির ধান নষ্ট হয়ে গিয়েছে। এ দিন কেতুগ্রামের ন’পাড়ার এক চাষিও ধানে ক্ষতির ধাক্কা সামলাতে না পেরে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। তাঁর জমির অর্ধেক ধানই ঝড়ে ঝরে গিয়েছে বলে জানিয়েছেন ব্লক কৃষি আধিকারিক।

পুলিশ ও পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার ভোরে বাড়ির পাশে গোয়ালঘরের পিছনে একটি তেঁতুল গাছে গলায় দড়ি দিয়ে আত্মঘাতী হন কুলনগর গ্রামের দিলীপবাবু। পড়শিরাই মৃতদেহ উদ্ধার করে ভাতার গ্রামীণ স্বাস্থ্যকেন্দ্র, পরে ময়না-তদন্তের জন্য কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যান। বাড়ির দাওয়ায় বসে মৃতের ছেলে রণজিৎবাবু দাবি করেন, গত মরসুমেও প্রাকৃতিক দুর্যোগে বোরো ধান নষ্ট হয়ে গিয়েছিল। এ বছরও ২০ বিঘা জমিতে বোরো চাষ করা হয়। তার মধ্যে ৯ কাঠা নিজেদের, বাকিটা ঠিকে। তাঁর দাবি, ‘‘জমির মালিককে আগাম টাকা দেওয়া, চাষের খরচ সবটা ধারে করতে হয়েছে। সব মিলিয়ে দেড়-দু’লক্ষ টাকা ধার হয়ে গিয়েছিল। তার উপর কালবৈশাখীতে ধান ঝরে যাওয়া ও টানা বৃষ্টিতে ধানগাছে পচন, সবমিলিয়ে মাথা ঠিক রাখতে পারেননি বাবা।’’

ওই গ্রামের পাশে কাঁটারি গ্রামের চাষি সম্রাট রায় গত সপ্তাহে চাষে ক্ষতির জেরে আত্মঘাতী হন। তার আগে ভাতারেরই নবাবনগরের চাষি রাধারমণ সরকার জমিতে ঝরে যাওয়া ধান দেখে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। এলাকার চাষি শ্রীধর হাজরা, ভুবন পালদের দাবি, জমি থেকে অর্ধেক ফসল ঘরে তুলতে পারলেও চাষিদের দাঁড়ানোর জায়গা থাকত।

কেতুগ্রামের বছর আটচল্লিশের চাষি স্বপন গড়াইও কাটোয়া হাসপাতালে শুয়ে দাবি করেন, ‘‘সাত বিঘা ভাগের ও দেড় বিঘা নিজের জমিতে বোরো ধান লাগিয়েছিলাম। সব নষ্ট হয়ে গিয়েছে।’’ তাঁর ভাই পিন্টুবাবু জানান, চাষের জন্য ৫০ হাজার টাকা ধার করেছিলেন দাদা। খেতমজুরদের মজুরি বাবদ আরও ১৫ হাজার টাকা খরচ হয়। সেই ধাক্কাতেই এই ঘটনা। জানা গিয়েছে, জমিতে ব্যবহৃত কীটনাশক পান করেই ভোরে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন স্বপনবাবু। গোঙানির আওয়াজ পেয়ে পড়শিরা তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যান। পরে ওই কৃষকের বাড়িতে যান প্রশাসনের কর্তারা। ব্লক কৃষি আধিকারিক বিপ্লব বিশ্বাস বলেন, ‘‘ওঁর ৫০ শতাংশ ধান জমিতে ঝরে গিয়েছে। বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।’’

জেলা সিপিএমের কৃষক সভার সম্পাদক সৈয়দ হোসেন বলেন, ‘‘খোঁজ নিয়ে জেনেছি, ওই চাষির ২০ বিঘা জমির ধানই নষ্ট হয়ে গিয়েছে। জেলা জুড়েই চাষিদের শঙ্কার মধ্যে দিন কাটাতে হচ্ছে।’’ এ দিন ভাতারের বিডিও এবং কৃষি উন্নয়ন আধিকারিক ওই চাষির বাড়ি যান। ফিরে বিডিও বলেন, ‘‘বাড়ি করতে গিয়ে ওই চাষির বাজারে প্রচুর ধার করেছিলেন শুনছি। আমাদের আরও খতিয়ে দেখতে হবে।’’

Farmer Suicide
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy