Advertisement
E-Paper

বীজতলা নষ্ট, সমস্যা পেঁয়াজ চাষে

পূর্ব বর্ধমান জেলায় দীর্ঘদিন ধরে সুখসাগর জাতের পেঁয়াজের চাষ হয়। চাষের এলাকা প্রায় সাড়ে তিন হাজার হেক্টর। সব থেকে বেশি পেঁয়াজ চাষ হয় কালনা মহকুমায়।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৭ অক্টোবর ২০২২ ০৯:০৯
পেঁয়াজের বীজতলা তৈরি করছেন চাষি। নিজস্ব চিত্র।

পেঁয়াজের বীজতলা তৈরি করছেন চাষি। নিজস্ব চিত্র।

মূল জমিতে পেঁয়াজ চাষ এখনও শুরু হয়নি। তার আগে বীজতলাতেই চারা গাছ শুকিয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ পূর্ব বর্ধমানের বহু চাষির। চাষিদের একাংশের দাবি, বীজতলায় পেঁয়াজ চারা যা বেরিয়েছিল তার এক-তৃতীয়াংশ ইতিমধ্যে নষ্ট হয়ে গিয়েছে। কী ভাবে চারা বাঁচানো যাবে, তা নিয়ে উদ্বিগ্ন পেঁয়াজ চাষিরা। কৃষি ও উদ্যানপালন বিভাগের দাবি, ছত্রাকঘটিত চারা ধসা রোগের হামলার কারণেই জমিতে নিস্তেজ হয়ে মরে যাচ্ছে পেঁয়াজ চারা। ঠিকমতো ওষুধ দিলে লাভ হবে।

পূর্ব বর্ধমান জেলায় দীর্ঘদিন ধরে সুখসাগর জাতের পেঁয়াজের চাষ হয়। চাষের এলাকা প্রায় সাড়ে তিন হাজার হেক্টর। সব থেকে বেশি পেঁয়াজ চাষ হয় কালনা মহকুমায়। অক্টোবরের শেষ থেকে শুরু হয়ে যায় চাষ। তার আগে চাষিরা বীজতলায় চারা তৈরি করেন। আবার অনেকে বীজতলায় চারা তৈরি করে তা বিক্রি করেন। কালনা ১ ব্লকের নান্দাইয়ে পেঁয়াজ চারা বিক্রির একটি বড় বাজার বসে। চাষিরা জানান, এক বিঘা জমির চারা তৈরির জন্য লাগে ৮০০ গ্রাম থেকে এক কেজি পেঁয়াজের বীজ। জমিতে বীজ ফেলার ২৫ দিন পরে চারা তুলে মূল জমিতে পোঁতা যায়। বীজ ছড়ানোর পরে জমিতে চাষিরা পাটকাঠি বিছিয়ে দেন।

নান্দাই, দক্ষিণ দুর্গাপুর, ধাত্রীগ্রাম, নাগরগাছি, বেলকুলি, পিণ্ডিরা, বোয়ালিয়া, কুশডাঙা, রাহাতপুর, কেলনই-সহ বেশ কিছু এলাকার চাষিদের দাবি, সম্প্রতি বীজতলায় পাটকাঠির আস্তরণ সরিয়ে দেখা যায়, নষ্ট হয়ে গিয়েছে বহু চারা। আরও বহু চারা নষ্ট হতে বসেছে। ২০ কেজি বীজ ফেলে বীজতলা তৈরি করা নাগরগাছি এলাকার প্রভাত বাইল, পিণ্ডিরার সুদীপ মণ্ডলেরা বলেন, ‘‘বীজতলায় বহু চারা মারা গিয়েছে। যত দিন যাচ্ছে, চারা নষ্টের পরিমাণ বাড়ছে। তা বন্ধ না হলে মূল জমিতে পোঁতার সময়ে চারার সঙ্কট দেখা দেবে।’’ কুশডাঙার অশোক দাস, কদমপুরের বাসুদেব মণ্ডল, বোয়ালিয়ার অমর মণ্ডল, নান্দাইয়ের পরি দাসেরা জানান, নানা ওষুধ প্রয়োগ করলেও চারা মৃত্যু কমানো যাচ্ছে না।

কৃষি দফতর জানায়, মাঝেমধ্যে বৃষ্টির কারণে মাটির তলায় জল জমছে। তবে তার পরেই দ্রুত বাড়ছে তাপমাত্রা। রাতের তাপমাত্রাও এখনও তেমন কমছে না। ফলে, গুমোট আবহাওয়ায় মাটিবাহিত ছত্রাকঘটিত চারা ধসা রোগের প্রকোপ বাড়ছে পেঁয়াজের বীজতলায়। জমিতে চারা বেরোনোর পরে প্রথমে জলে ভেজা একটা দাগ তৈরি হচ্ছে। তার পরে ক্রমশ সরু হয়ে বীজতলায় মরে যাচ্ছে চারা। জেলার এক সহ-কৃষি আধিকারিক পার্থ ঘোষ বলেন, ‘‘এই ধরনের রোগের প্রকোপ থেকে রক্ষা পেতে বীজতলার মাটি শোধন করে নিতে হবে গোড়াতেই। জল যাতে না দাঁড়ায়, এমন জমি বীজতলার জন্য বাছতে হবে। বীজ ফেলার পরে কপার অক্সি-ক্লোরাইড জাতীয় ওষুধ ৪ গ্রাম প্রতি লিটার জলে গুলে মাঝেমধ্যে স্প্রে করলে এই রোগ তেমন ছড়ায় না।’’ জেলা উদ্যানপালন আধিকারিক রাহুল চক্রবর্তী বলেন, ‘‘পেঁয়াজের চারা মারা যাচ্ছে বলে কালনা, পূর্বস্থলী থেকে বেশ কিছু অভিযোগ পেয়েছি। মাটি ও বাতাসে জলীয় বাষ্পের আধিক্যের জন্য এই ধরনের রোগের প্রাদুর্ভাব ঘটে। যে সমস্ত জমিতে এই রোগের প্রাদুর্ভাব ঘটেনি, সেখানে বিঘা প্রতি জমিতে দেড় কেজি করে ট্রাইকোডার্মাভিরিডি জীবাণু ছত্রাকনাশক জমিতে ছড়াতে হবে। যে সমস্ত জমিতে রোগের প্রাদুর্ভাব ঘটেছে, সেখানে রাসায়নিক ছত্রাকনাশক প্রয়োগ করতে হবে।’’

Farmers Onion
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy