লোভনীয়: দুর্গাপুরের হোটেলে চলছে খাদ্য উৎসব। —নিজস্ব চিত্র।
ঢিমে আঁচে রান্নার কৌশল এই এলাকার বাবুর্চিদেরই তৈরি বলে ইতিহাসবিদেরা দাবি করেন। শুধু তাই নয়, মুঘল আমলে লখনউয়ের এই বাবুর্চিদের রান্না ‘অওয়ধি কৌশল’ বলে পরিচিতি লাভ করে। সেই কৌশলে করা রান্নার স্বাদ চেখে দেখছেন দুর্গাপুরবাসী। সৌজন্যে, দুর্গাপুরের সিটি সেন্টারের একটি হোটেলে আয়োজিত খাদ্য-উৎসব।
‘অওয়ধি ঘরানে সে’ নামের সেই খাদ্য উৎসব শুরু হয়েছে ১৯ মে থেকে। চলবে দশ দিন ধরে। পাতে কী কী থাকছে? মুর্গ অওয়ধি কোর্মা, লখনউয়ের বিশেষ বিরিয়ানি, অওয়ালা মচ্ছি মশালা ইত্যাদি। নিরামিষ পদের তালিকাও নজরকাড়া। রয়েছে ‘কাবাব ই তস্তারি’, ‘পনীর আজওয়ানি টিক্কা’, ‘পনীর গুলজার’। একেবারে শেষ পাতে থাকছে ‘পারোয়াল কে মিঠাই’, ‘লেহসান কা ক্ষীর’, লস্যি ইত্যাদি। হোটেল কর্তৃপক্ষের দাবি, মোগলাই এই সব খানা চেখে দেখতে ভিড়ও হচ্ছে ভালই।
ভিড় যে হচ্ছে, তা মালুম পড়ে হোটেলে গিয়ে। ইঞ্জিনিয়ারিং, ম্যানেজমেন্ট কলেজের পড়ুয়া থেকে সপরিবার, সকলকেই দেখা গেল ‘নবাবি খানা’ চেখে দেখতে। নন কোম্পানি এলাকার বাসিন্দা প্রণয় বসু, পরিণীতা বসুরা বললেন, ‘‘শিল্প শহরে বসে নবাবি রান্না কী রকম, তা চেখে দেখব না, তা-ও হয় না কি।’’
মধ্যবিত্ত ক্রেতার চাহিদা বুঝে দামও নাগালের মধ্যে রাখা হয়েছে বলে দাবি হোটেল কর্তৃপক্ষের। কী রকম? উৎসবের দায়িত্বপ্রাপ্ত এক কর্মী জানান, আমিষ পদের আড়াইশো টাকা ও নিরামিষ খাবারের ১৭৫ টাকার মতো দাম রাখা হয়েছে। ‘স্টার্টারে’র দাম ১৫০ থেকে দুশো টাকা।
কেন এমন আয়োজন? হোটেল কর্তৃপক্ষের দাবি, মুঘল সম্রাট আকবরের আমলে এই নবাবি পদগুলির বেশির ভাগ তৈরি হয়। জেনিফার ব্রেনান, আর নাথের মতো বিশিষ্ট লেখকদের বইতেও উল্লেখ রয়েছে এই সমস্ত পদগুলির। ইতিহাস ও বইতে পড়া সেই সমস্ত পদের স্বাদই শহরে আনতে এমন আয়োজন বলে দাবি। হোটেলের তরফে কবি দত্ত বলেন, ‘‘দেশের নানা প্রদেশের পদ চেখে দেখার সুযোগ করে দিতে ধারাবাহিক ভাবে এমন খাদ্য উৎসবের আয়োজন করি আমরা। এর আগে রাজস্তানি খানা নিয়েও উৎসব হয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy