Advertisement
০৩ মে ২০২৪

পাখিদের জন্য কলেজেই বাসা তৈরি ছাত্রীদের

গত কয়েক দিন ভীষণ ব্যস্ততায় কেটেছে কলেজের ছাত্রীদের। আগাছা পরিষ্কার, মাটির কলসি কেনা, কলেজের গাছগুলিতে নিয়মিত জল দেওয়ার মতো কত্ত কাজ। সেই সব কাজ শেষে, আন্তর্জাতিক বনদিবস উপলক্ষে, মঙ্গলবার দুর্গাপুর উইমেনস কলেজের মধ্যেই পাখিরালয় তৈরি করলেন ছাত্রীরা।

গাছে বাসা বাঁধা। নিজস্ব চিত্র

গাছে বাসা বাঁধা। নিজস্ব চিত্র

অর্পিতা মজুমদার
দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ২২ মার্চ ২০১৭ ০০:৩৬
Share: Save:

গত কয়েক দিন ভীষণ ব্যস্ততায় কেটেছে কলেজের ছাত্রীদের। আগাছা পরিষ্কার, মাটির কলসি কেনা, কলেজের গাছগুলিতে নিয়মিত জল দেওয়ার মতো কত্ত কাজ। সেই সব কাজ শেষে, আন্তর্জাতিক বনদিবস উপলক্ষে, মঙ্গলবার দুর্গাপুর উইমেনস কলেজের মধ্যেই পাখিরালয় তৈরি করলেন ছাত্রীরা।

কী ভাবে শুরু হল এমন উদ্যোগ? স্বপ্না প্রামাণিক, লতিকা দাসদের মতো কয়েক জন ছাত্রী জানান, কলেজে রয়েছে প্রচুর গাছ। সকাল, বিকেল— ক্লাস আর আড্ডার মাঝেই কানে আসে পাখিদের কলরব। কেউ কেউ টিফিনে খাবারের দু-এক টুকরো ছুড়ে দিতেন পাখিদের দিকে। দীর্ঘ দিন ধরেই ছাত্রীদের একাংশ ভাবতেন, কলেজেই যদি পাখিদের থাকার জন্য যদি স্থায়ী বাসা বানানো যায়, তবে বেশ হয়।

ছাত্রীদের দীর্ঘদিনের এই ভাবনা সফল করতে এগিয়ে এলেন কলেজের ইতিহাসের শিক্ষক শেখ ওয়াদেব রহমান। কী রকম? ওয়াদেব জানান, আগে তিনি বর্ধমানের কাঞ্চননগরের দীননাথ হাইস্কুলে শিক্ষকতা করতেন। সেই স্কুলের প্রধান শিক্ষক সুভাষচন্দ্র দত্ত স্কুলেরই একটি পুরনো বট গাছে পাখিদের বাসা, খাওয়ার জায়গা প্রভৃতি তৈরি করেছিলেন নিজ উদ্যোগে। পাখিদের বাসা বানানোর পরিকল্পনা ও পদ্ধতিটা সেখানেই শেখা। তার পরে এই কলেজে এসে ওয়াদেব লক্ষ করলেন ছাত্রীদের পাখি-প্রেম। ওয়াদেব বলেন, ‘‘পাখিরালয় তৈরির জন্য কলেজের অধ্যক্ষা মধুমিতা জাজোদিয়াকে প্রস্তাব দিয়েছিলাম। উনি এক কথায় রাজি হয়ে যান।’’

ছাত্রী-শিক্ষক মিলে শুরু হয় কর্মদ্যোগ। কী কী কাজ হয়েছে? ছাত্রীরা জানান, প্রথমেই কয়েকটি গাছের তলার আগাছা পরিষ্কার করা হয়। মাটি খুঁড়ে জৈব সার, জল দেওয়ার কাজও চলেছে নিয়ম করে। পাখিদের বাসা তৈরির জন্য বাজার থেকে কিনে আনা হয়েছে মাটির কলসি। হাড়ির মুখ সিমেন্ট দিয়ে বন্ধ করে উল্টো দিকে গোল করে কেটে দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার গাছে মই লাগিয়ে সেই বাসা টাঙিয়ে দেওয়া হয়েছে ডালে ডালে। এই বাসা-বাঁধায় সাহায্য করেছে কলেজের এনসিসি দলও। আপাতত ৪০টি গাছে এমন বাসা-বাঁধার কাজ শেষও হয়েছে।

মঙ্গলবার বাসা-বাঁধার পরেই আর যেন তর সইছিল না কলেজ ছাত্রী দেবদুর্বা ভট্টাচার্য, সীমা লোহারদের। খুব সন্তর্পণে বারবার ঘাড় উঁচু করে তাঁরা দেখছেন, বাসায় পাখি এল কি না। দেবদুর্বা বলেন, ‘‘কলেজের নিজস্ব পাখিরালয় তৈরির স্বপ্ন সত্যি হল। এর ফলে পরিবেশের ভারসাম্যও রক্ষিত হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Nest College Students Girl
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE