চলছে বৈঠক। নিজস্ব চিত্র
পর্যটন শিল্পের জন্য অজস্র উপকরণ থাকলেও তার প্রভাব মহকুমার অর্থনীতিতে সে ভাবে পড়েনি বলেই অভিযোগ কালনার নানা এলাকার ব্যবসায়ীদের। আবার পর্যটকদের অভিযোগ, রাতে থাকারও তেমন সুবন্দোবস্ত নেই কালনায়। এই পরিস্থিতিতে ‘হেরিটেজ হোটেল’ তৈরির বিষয়ে প্রস্তাব দিলেন মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ। পাশাপাশি, কালনাকে ‘হেরিটেজ শহর’ হিসেবে ঘোষণা করার জন্য তদ্বির করার কথাও জানান তিনি।
বৃহস্পতিবার পূর্বস্থলী ১ ব্লকে পর্যটন বিষয়ে একটি বৈঠক হয়। সেখানে মন্ত্রী স্বপনবাবু, জেলা পরিষদের সভাধিপতি শম্পা ধাড়া, মহকুমাশাসক (কালনা) সুমন সৌরভ মোহান্তি, মহকুমার পাঁচটি ব্লকের বিডিও, কালনা ও মন্তেশ্বরের বিধায়ক-সহ জেলা ও মহকুমা প্রশাসনের নানা আধিকারিকেরা যোগ দিয়েছিলেন। প্রশাসন সূত্রে খবর, সেখানেই মন্ত্রী বলেন, ‘‘কালনা ১০৮ শিবমন্দির লাগোয়া রাজবাড়িতে মহকুমা ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরের কার্যালয় রয়েছে। সেটিকে কিসান মান্ডিতে স্থানান্তরিত করে কার্যালয়ের বর্তমান জায়গায় ‘হেরিটেজ হোটেল’ তৈরি করা যেতে পারে। এ বিষয়ে জেলাশাসকও আগ্রহী।’’ মহকুমাশাসক জানান, প্রস্তাবটি জেলায় পাঠানো হবে।
এ ছাড়া দেশ-বিদেশের পর্যটকদের জন্য মহকুমার বিভিন্ন দ্রষ্টব্য স্থানগুলির ছবি ও বর্ণনা-সহ ‘ওয়েবসাইট’ তৈরি, ‘গাইড’ নিয়োগ-সহ নানা বিষয়েও আলোচনা হয়েছে। বৈঠকে কালনা পুরসভার পুরপ্রধান দেবপ্রসাদ বাগ ভাগীরথীর পাড়ের জমিতে পর্যটকদের জন্য কিছু পরিকল্পনা নেওয়ার প্রস্তাব দেন। তা ছাড়া জেলা পরিষদের কাছে ১০৮ শিবমন্দির ও রাজবাড়ি চত্বরের খারাপ হয়ে যাওয়া আলোগুলি মেরামতির জন্য পরামর্শ দেন মন্ত্রী।
পাশাপাশি, নবীন প্রজন্মকে এলাকার ঐতিহ্য সম্পর্কে সচেতন করতে স্কুলগুলি যাতে পরিদর্শনের ব্যবস্থা করে সে বিষয়েও প্রস্তাব দেন বিডিও (মন্তেশ্বর) বিপ্লব দত্ত। চুপি পাখিরালয়ে পানা সরানো, বুড়োরাজ মন্দির চত্বরে আলোর ব্যবস্থা করা দরকার বলে জানান বিডিও (পূর্বস্থলী ২) সৌমিক বাগচী।
বৈঠকে যোগ দেওয়া পর্যটন দফতরের এক প্রতিনিধি অবশ্য জানান, জেলায় ‘ওয়েবসাইট’ তৈরির কাজ চলছে। পর্যটন বিষয়ক ক্যালেন্ডার বিডিও-দের পাঠানো হবে। তাঁর আরও প্রস্তাব, বিজ্ঞাপনের জন্য সরকারি নানা অনুষ্ঠান মঞ্চ এলাকার দ্রষ্টব্য স্থানগুলির আদলে তৈরি করা হোক।
পাশাপাশি, মন্ত্রী মহকুমাশাসকের কাছে প্রস্তাব দেন, ‘‘নবদ্বীপের মতো কালনাকে যাতে ‘হেরিটেজ শহর’ ঘোষণা করা হয়, সে জন্য পর্যটন দফতরে তদ্বির করতে হবে। সরকারি আধিকারিকেরা নিজেদের পরিবার নিয়ে নানা দ্রষ্টব্য স্থানগুলি ঘুরলে এলাকাবাসীর মধ্যে আগ্রহ তৈরি হবে।’’ সেই সঙ্গে তিনি জানান, বাঁশদহ বিলে ‘হাউজ় বোট’ নামানোর চেষ্টা চলছে।
তবে এ সবের সঙ্গে একটি বিষয়ে আক্ষেপও প্রকাশ করেন কালনার বিধায়ক বিশ্বজিৎ কুণ্ডু। তাঁর কথায়, ‘‘রাজ্য পর্যটন দফতর প্রতি বছর নানা পর্যটন কেন্দ্রগুলির ছবি প্রকাশ করে। সেখানে কালনার ছবি ঠাঁই পায় না কেন জানি না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy