Advertisement
E-Paper

সেতুর কাজ শুরুর নাম নেই, ক্ষোভ কালনায়

সেতুর জন্য কালনা ২ ব্লকের সাতগাছিয়া পঞ্চায়েতের বারাসত, হাঁসপুকুর, কুলিয়াদহ এবং পূর্ব সাহাপুর মৌজা থেকে ৪৭.৭৩ একর জমি কেনার কথা ঘোষণা করা হয়েছিল।

সেতুর জন্য জমি চিহ্নিত করে রাখার খুঁটি।

সেতুর জন্য জমি চিহ্নিত করে রাখার খুঁটি। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ০৯:১৪
Share
Save

ভাগীরথীর উপরে কালনা ও নদিয়ার শান্তিপুরের মধ্যে সেতু তৈরির কাজ এক সময়ে আটকে ছিল জমি-জটে। নদীর দু’পাড়ে বেশির ভাগ জমি কেনা হয়ে গেলেও, এখনও সেতু তৈরির কাজ শুরু হয়নি। বিষয়টিতে প্রশাসনিক উদ্যোগের অভাবের অভিযোগ তুলেছেন স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ। জেলা প্রশাসন যদিও তা মানতে চায়নি।

২০১৭ সালে এই সেতুটি তৈরির কথা ঘোষণা হয়। এর জন্য এক হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ ঘোষণা করা হয়। ২০১৮ সালে কালনা শহরে একটি কর্মসূচিতে এসে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, সব ঠিক থাকলে ২০২২ সালের মধ্যে সেতু তৈরি হয়ে যাবে। কিন্তু এখনও সেতু নির্মাণে
হাত পড়েনি।

সেতুর জন্য কালনা ২ ব্লকের সাতগাছিয়া পঞ্চায়েতের বারাসত, হাঁসপুকুর, কুলিয়াদহ এবং পূর্ব সাহাপুর মৌজা থেকে ৪৭.৭৩ একর জমি কেনার কথা ঘোষণা করা হয়েছিল। শুরুতে দর কম বলে অনেক জমিমালিক কিছুটা বেঁকে বসেচিলেন। দর বাড়লে জমি কেনার গতি বাড়ে। কালনা মহকুমা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, সাতগাছিয়া পঞ্চায়েতের চার মৌজায় প্রায় ৯৮ শতাংশ জমি কেনা শেষ। নদিয়ার শান্তিপুর এলাকাতেও ৯০ শতাংশের বেশি জমি কেনার কাজ হয়ে গিয়েছে। জমি পূর্ত দফতরের কাছে হস্তান্তরও হয়েছে। পূর্ব বর্ধমানের এক জনপ্রতিনিধির দাবি, ‘‘৯০ শতাংশ জমি কেনা হয়ে গেলে কোনও সংস্থা কাজ শুরু করে দিতে পারে। যা পরিস্থিতি, তাতে কালনার দিক থেকে অনায়াসে কাজ শুরু করা যায়। কেন কাজ হচ্ছে না, তার কোনও ব্যাখ্যা আমাদের কাছে নেই।’’

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ২০২২ সালের পরে কালনার চার মৌজায় আর জমি কেনা হয়নি। বছর দুয়েক আগে সেতু যে জমির উপর দিয়ে হবে, সেখানে খুঁটি পেতে চিহ্নিত করে দেওয়া হয়। ২০২৪ সালের জুলাইয়ে যাঁরা সেতুর জন্য জমি বিক্রি করেছেন, তাঁদের জমিতে থাকা ছোট-বড় নানা গাছ কেটে নিতে বলা হয়। কেউ কেউ সেতুর এলাকায় থাকা বাড়িও সরিয়ে নেন। তার পরে আর কোনও উদ্যোগ দেখা যায়নি বলে অভিযোগ। সেতুর জন্য জমি দেওয়া জগন্নাথ ঘোষের কথায়, ‘‘সেতু হলে যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত হবে। পর্যটকের আনাগোনা বাড়বে। ব্যবসা বাড়বে। সেতুর কাজ শুরু না হওয়ায় আমরা হতাশ।’’ স্থানীয় বাসিন্দা সফিক মণ্ডলের দাবি, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী জেলা সফরে এলে প্রশাসনিক কর্তারা এক বার এলাকায় ঘুরে যান। তাতে কাজ তেমন কিছু হয় না। সেতু নিয়ে আশা ছেড়ে দিয়েছি।’’

নানা সূত্রের দাবি, এখন কাজ শুরু হলে বরাদ্দ বেড়ে দ্বিগুণের বেশি হবে। বিপুল অর্থ এখন সেতু তৈরির প্রধান অন্তরায়। প্রশাসনের এক কর্তার দাবি, ‘‘সেতু তৈরির জন্য এক বার দরপত্র হয়েছিল। পরে তা বাতিল হয়ে যায়। নতুন করে দরপত্রের কথা শোনা যায়নি।’’ সম্প্রতি কালনায় এসে জেলাশাসক আয়েষা রানি এ বলেন, ‘‘শুনেছি উল্টো দিকে কিছুটা জমি কেনা বাকি রয়েছে। ক্রমে কাজ এগোবে।’’ মহকুমাশাসক (কালনা) শুভম আগরওয়াল জানান, চার মৌজায় প্রায় ৯৮ শতাংশ জমি কেনা হয়ে গিয়েছে। আইন জটিলতা-সহ কিছু কারণে বাকি জমি কেনা বাকি রয়েছে। জমি কেনার রিপোর্ট
জেলায় পাঠানো হয়েছে। সেতুর জন্য পরবর্তী কোনও নির্দেশ এলে দ্রুত পালন করা হবে।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Bhagirathi River Kalna

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}