Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
Migrant Labourers

শ্রমিকদের প্রশিক্ষণ দিয়ে জেলােতই কাজ

জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, পূর্ব বর্ধমানে এখনও পর্যন্ত ২৩ হাজার পরিযায়ী শ্রমিক ফিরে এসেছেন। তাঁদের একাংশের মধ্যে সমীক্ষা করে রিপোর্টও জমা পড়েছে।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বর্ধমান শেষ আপডেট: ০৬ জুন ২০২০ ০৩:৩৭
Share: Save:

জেলায় পরিযায়ী শ্রমিকদের কী রকম কাজ দেওয়া যাতে পারে, তার মানচিত্র তৈরি শুরু করল পূর্ব বর্ধমান জেলা প্রশাসন। ওই শ্রমিকেরা যাতে আর ভিন্ রাজ্যে কাজে যেতে বাধ্য না হন, সে জন্যই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, দাবি জেলা প্রশাসনের। মানচিত্র তৈরি শেষ হলে বিস্তারিত প্রকল্প রিপোর্ট পাঠানো হবে রাজ্যের ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প দফতরে। পরিযায়ীরা যাতে নির্দিষ্ট বিষয়ে প্রশিক্ষণ নিয়ে কাজ শুরু করতে পারেন, সে জন্য জেলার ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প দফতর, বিডিওদের তাঁদের সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য খুঁজে বার করার কথাও বলা হয়েছে।

রাজ্যের ক্ষুদ্র ও কুটিরশিল্প দফতরের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী চান, আমাদের জেলার মানুষ, রাজ্যের মানুষকে যাতে ভিন্ রাজ্যে কাজে যেতে না হয়। সে জন্য তাঁদের প্রশিক্ষণ দিয়ে কাজের উপযুক্ত করে তোলা হবে।’’ জেলাশাসক (পূর্ব বর্ধমান) বিজয় ভারতী বলেন, “আমরা পরিযায়ীদের কাজ দেওয়ার ব্যাপারে মডেল-জেলা হতে চাই। সেই লক্ষ্যেই পরিযায়ীরা ভিন্ রাজ্যে কী কী কাজ করতেন, তার বিশদ নিয়ে মানচিত্র বানানো হবে। ডিপিআর তৈরি করে ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প দফতরের কাছে আর্থিক অনুদানও চাওয়া হবে।’’

প্রশাসনের দাবি, এই মানচিত্র তৈরির ফলে, তিনটে গুরুত্বপূর্ণ দিক উঠে আসবে। প্রথমত, কোন কোন পরিযায়ী, কী কী কাজ করতে ভিন্ রাজ্যে পাড়ি দিয়েছিলেন, সেই ‘অজানা’ তথ্য লিপিবদ্ধ হবে। দ্বিতীয়ত, কারা জেলাতে থাকতে চান, তারও আঁচ মিলবে। তৃতীয়ত, খাবার, কাজ ছাড়া, পরিযায়ীদের আর কী কী প্রয়োজন, সেটাও পঞ্চায়েতের খাতায় উঠে আসবে।

জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, পূর্ব বর্ধমানে এখনও পর্যন্ত ২৩ হাজার পরিযায়ী শ্রমিক ফিরে এসেছেন। তাঁদের একাংশের মধ্যে সমীক্ষা করে রিপোর্টও জমা পড়েছে। সেই রিপোর্ট অনুযায়ী, সরাসরি সোনা-রুপো শিল্পের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছেন ৬৭৫ জন। এর বাইরে গয়না শিল্পের সঙ্গে রয়েছেন আরও ৫৪৭ জন। দর্জির কাজ করতে ভিন্ রাজ্যে পাড়ি দিয়েছিলেন আনুমানিক ৫৭৮ জন। জরি শিল্পের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন ১,১৬০ জন। এ ছাড়া, শ্রমিকদের একটা বড় অংশ নির্মাণ শিল্প, কলের পাইপ মিস্ত্রি, গাড়ির চালক-খালাসি হিসেবে কাজ করেন। জেলা ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প দফতরের অধিকর্তা অভিজিৎ করের দাবি, “গোটা দেশের চাল উৎপাদনকারী জেলার মধ্যে পূর্ব বর্ধমান প্রথম সারিতে। সেই জেলার লোক ভিন্ রাজ্যে গিয়ে চালকলে কাজ করছেন। ওঁদের এখানকার চালকলে কাজ দেওয়ার জন্য মালিক সমিতির সঙ্গে আলোচনা করা হবে।’’

প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, একটি বেসরকারি সংস্থার মাধ্যমে গয়না শিল্পের সঙ্গে যুক্তদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। জেলাশাসক বলেন, “স্বনির্ভর গোষ্ঠী বা ‘ক্লাস্টার’ তৈরি করে প্রতিটি ব্লকে একটি করে ‘হাব’ তৈরি করা হবে। উৎকর্ষ বাংলার মাধ্যমে প্রশিক্ষণ দিয়ে পরিযায়ীদের ‘মাস্ক’, ‘অ্যাপ্রন’, সদ্যোজাতদের জামা তৈরি করা শেখানো হবে। প্রতিটি জিনিসই সরকারের কাজে লাগার সম্ভাবনা রয়েছে।’’ প্রশাসনের একটি সূত্র জানাচ্ছে, তিন হাজারের মতো পরিযায়ী ১০০ দিনের কাজ করতে চেয়ে আবেদন করেছেন। জেলাশাসক জানান, এক সপ্তাহের মধ্যে তাঁদের জব-কার্ড তৈরি করে দেওয়া হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Migrant Labourers Coronavirus Lockdown
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE