E-Paper

অবৈধ ভাবে বালি তোলায় এই হাল, দাবি সেলিমের

পূর্ব বর্ধমানে অতিবৃষ্টি আর দামোদরের ছাড়া জলে জামালপুর, রায়না ছাড়াও বেশ কয়েকটি ব্লক জলমগ্ন হয়েছে। প্রশাসনের রিপোর্টে, ৪৩ হাজার হেক্টর জমি জলের তলায় ছিল।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১০:১৭
বর্ধমানে পার্টি অফিসে মহম্মদ সেলিম (ডান দিকে)।

বর্ধমানে পার্টি অফিসে মহম্মদ সেলিম (ডান দিকে)। —নিজস্ব চিত্র।

বৃষ্টি হয়নি। জল ছাড়া বাড়ায়নি ডিভিসিও। কিন্তু এখনও রায়না-জামালপুরের বেশ কিছু জায়গা ডুবে রয়েছে। বৃহস্পতিবারই রাজ্যের সেচমন্ত্রী মানস ভুঁইঞা ও বিদ্যুৎমন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস ডিভিসির জল ছাড়ায় কেন্দ্র চক্রান্ত করছে বলে অভিযোগ করেছিলেন। শুক্রবার ডিভিসির জলছাড়া-সংক্রান্ত বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লেখা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর সমালোচনা করেন সিপিএমের জেলা সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। তাঁর প্রশ্ন, “২০২১ সালেও মুখ্যমন্ত্রী একই রকম চিঠি দিয়েছিলেন। তার পরেও তিন বছর ঘুমিয়ে থাকলেন কেন?” তিনি মনে করেন, সরকার কোনও প্রস্তুতি নেয়নি। দৃষ্টিভঙ্গি ঘোরানোর জন্যই মুখ্যমন্ত্রী এই চিঠি লিখেছেন।

পূর্ব বর্ধমানে অতিবৃষ্টি আর দামোদরের ছাড়া জলে জামালপুর, রায়না ছাড়াও বেশ কয়েকটি ব্লক জলমগ্ন হয়েছে। প্রশাসনের রিপোর্টে, ৪৩ হাজার হেক্টর জমি জলের তলায় ছিল। একাধিক জলমগ্ন এলাকা বিদ্যুৎ-বিচ্ছিন্ন করা হয়। জামালপুর, রায়না, খণ্ডঘোষে দামোদর ও মুণ্ডেশ্বরী নদীর বাঁধে ফাটল দেখা দিয়েছে। ভাঙনও শুরু হয়েছে। কেতুগ্রাম, পূর্বস্থলীতেও ভাগীরথীর ভাঙন দেখা গিয়েছে। শুক্রবারের রিপোর্ট অনুযায়ী, জেলার সব নদীরই জলস্তর প্রাথমিক বিপদসীমার অনেকটা নীচ দিয়ে বইছে। সেচ দফতরের দাবি, সব নদীরই জল কমছে। এ দিন রায়না ২ ব্লকের দামিন্যা গ্রামে গিয়ে বন্যা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখেন পঞ্চায়েত মন্ত্রী প্রদীপ মজুমদার।

বৃহস্পতিবার রাজ্যের বিদ্যুৎমন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস রায়না ও জামালপুরে জলমগ্ন এলাকা পরিদর্শন করেন। পরে জেলা প্রশাসনের দফতরে সেচমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেন। অরূপের দাবি, “বাংলাকে বঞ্চনা করা কেন্দ্র সরকার অভ্যাসে পরিণত করে ফেলেছে। আর কয়েক দিন পরে বাংলার বড় উৎসব। সারা বাংলার মানুষ যখন উৎসবে শামিল হবেন, সেই সময় জলে ডুবিয়ে দেওয়া কেন্দ্র সরকারের চক্রান্ত ছাড়া আর কিছু নয়।” এ দিন প্রধানমন্ত্রীকে লেখা চিঠিতে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, ডিভিসি পরিচালিত মাইথন এবং পাঞ্চেত জলাধার থেকে অপরিকল্পিত জল ছাড়ার কারণে দক্ষিণবঙ্গের প্রায় সব জেলাতেই বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। এর ফলে পূর্ব বর্ধমান, পশ্চিম বর্ধমান, হাওড়া, হুগলি, পূর্ব মেদিনীপুর, পশ্চিম মেদিনীপুর, বীরভূম এবং বাঁকুড়ার মানুষ বিপর্যস্ত।

জেলা প্রশাসনের রিপোর্টে, ক্ষুদ্র ও সেচ দফতরের হাতে থাকা ১৫টি আরএলআইয়ের ক্ষতি হয়েছে। জেলা পরিষদের হাতে থাকা ১৯৩টি রাস্তার ক্ষতি হয়েছে। এ ছাড়ও পূর্ত দফতরের আওতায় থাকা গুসকরা-কাশেমনগর, অগ্রদ্বীপ-দেয়াসিন, এসটিকেকে-সহ জেলার ছ’শো কিলোমিটারের মতো রাস্তা ক্ষতি হয়েছে। নষ্ট হয়েছে ফুল, মাছ, মুরগি খামার।

এ দিন সেলিম দাবি করেন, “বাম সরকারের আমলে প্রত্যেক বছর প্রশাসন সর্বোচ্চ পর্যায়ে উদ্যোগ নিত। ব্লক, পঞ্চায়েতকে নামানো হত। জেলা প্রশাসন নামত।” ডিভিসির সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন মানে কী, এই প্রশ্ন তুলে সেলিম বলেন, “সবাই জানে, আইন অনুযায়ী, ঝাড়খণ্ড, পশ্চিমবঙ্গ ও কেন্দ্র সরকারের যৌথ উদ্যোগ। সেখানে প্রতিনিধিরা কী করছিলেন? বিজেপি ও তৃণমূল সংসদে এ সব নিয়ে আলোচনা করেছে।” তাঁর দাবি, “পাঞ্চেত ও মাইথনের জল ধারণ ক্ষমতা বাড়াতে হবে। অবৈজ্ঞানিক ভাবে বালি তোলার জন্য জল ধারণ ক্ষমতা কমে গিয়েছে। এটা সরকারের ব্যর্থতা।”

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Mohammed Salim CPM sand smuggling

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy