সবে সন্ধ্যা নেমেছে। ঝুপঝাপ বন্ধ হতে শুরু করল বাড়ির দরজা-জানলা। ধুপ দিতে দিতে এক দোকানি বলছেন, ‘দেখছেন না, যা মশা।’
বাসিন্দাদের দাবি, কাঁকসা পঞ্চায়েত এলাকায় বাড়ছে অজানা জ্বরের প্রকোপের আশঙ্কা। ইতিমধ্যেই বুদবুদে এক বধূর ডেঙ্গিতে মৃত্যু হয়েছে। অথচ মশা নিধনে স্থানীয় প্রশাসন উদ্যোগী হয়নি বলে অভিযোগ বাসিন্দাদের।
বাসিন্দাদের দাবি, এলাকায় বেহাল নিকাশি ও ঝোপ-জঙ্গল বাড়তে থাকাতেই এই হাল। কী রকম? স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কাঁকসার রেলপাড়ের একাংশে সব বাড়ির নিকাশি জল একটি জলাভূমিতে পড়ে। অথচ ওই জলাভূমিটির সংস্কার বা সেখানে মশা মারার তেল, ব্লিচিং পাউ়ডার ছড়ানো হয়নি বলে অভিযোগ স্থানীয় বাসিন্দা সন্দীপ মণ্ডল, হারাধন রায়দের। তাঁদের দাবি, ‘‘গত বছর প্রশাসন সাফাই করেছিল। এ বছর সেরকম কিছুই নজরে পড়েনি।’’ এই পরিস্থিতিতে বাসিন্দাদের একাংশ নিজেরাই বাড়ির চারপাশে স্প্রে করছেন, ব্লিচিং ছড়াচ্ছেন।
একই হাল কাঁকসার ত্রিলোকচন্দ্রপুর, গোপালপুর, বনকাটি-সহ নানা গ্রামেও। গ্রামবাসীদের দাবি, নালাগুলি সাফাই না হওয়ায় গ্রামে বাড়ছে মশার উপদ্রব।
এ ছাড়া পানাগড় বাজারে পুরনো গাড়ির বাজারটিকে কেন্দ্র করেও সমস্যা তৈরি হয়েছে। বাসিন্দাদের দাবি, যেখানে-সেখানে গাড়ির টায়ার বা অন্য যন্ত্রাংশ পড়ে থাকে। ফলে সেখানেও জল জমে। বাড়ে মশার উপদ্রবও। প্রশাসনের সূত্রে জানা যায়, গত বছর ব্লক প্রশাসন, কাঁকসা থানার পুলিশ যৌথ ভাবে এই এলাকায় অভিযান চালায়। তাঁরা স্থানীয় ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলোচনা করেছিলেন। আবেদন করা হয়েছিল, পড়ে থাকা গাড়ির যন্ত্রাংশগুলি সরিয়ে নেওয়ার জন্যও। এ বছর তেমন কিছুই হয়নি বলে দাবি স্থানীয়দের।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, পানাগড় বাজারের এই অংশে গাড়ির প্রচুর যন্ত্রাংশ পড়ে রয়েছে। টায়ারের ভিতরে জলও জমছে। সেগুলি পরিস্কার করা হচ্ছে না। এলাকার বাসিন্দা দীপক মণ্ডল, সরোজ দাসরা বলেন, ‘‘মশার উপদ্রবে ব্যাপক ভোগান্তি হচ্ছে। মশা নিধনে প্রশাসন দ্রুত উদ্যোগী না হলে সমস্যা আরও বাড়বে। ছড়াবে বিভিন্ন রোগও।’’
কাঁকসার বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দারা জানান, মশার উপদ্রবে বর্তমানে দিনের বেলাতেও মশারি টাঙিয়ে বসে থাকতে হচ্ছে। অপেক্ষাকৃত ফাঁকা জায়গা হলে সমস্যা আরও বাড়ে। এ ছাড়া বর্তমানে মাঝেসাঝে বৃষ্টি শুরু হওয়ায় এলাকায় ঝোপ-জঙ্গল দ্রুত বাড়ছে বলেও দাবি। অথচ সে সব পরিষ্কারে কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি বলে অভিযোগ। যদিও কাঁকসার বিডিও অরবিন্দ বিশ্বাস জানান, ‘‘মশা নিধনে দ্রুত পদক্ষেপ করা হবে। সে বিষয়ে পরিকল্পনাও করা হয়েছে। প্রতিটি এলাকাতেই মশার উৎপাত কমাতে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy