ছটের জন্য তৈরি বর্ধমানের সদরঘাট। নিজস্ব চিত্র।
মশার আক্রমণে রাজ্য জুড়েই জ্বরের আতঙ্ক। ছট পুজোতেও যাতে সেই মশার দল যাতে বিপত্তি না ঘটাতে পারে, তার প্রস্তুতিতে বর্ধমানের শিল্পাঞ্চলের বিভিন্ন ঘাটে স্প্রে করা হয়েছে। কোথাও বা আবার পুজো উপলক্ষে মেলার প্রস্তুতিও সারা। পুজোর আগের দিন, শনিবার জেলার বিভিন্ন বাজারে ভিড়ও ছিল নজরে পড়ার মতো। আলো, পানীয় জল, পুলিশি পাহার-সহ প্রশাসনের তরফেও বিভিন্ন ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
মূলত হিন্দিভাষীদের এই উৎসবে চতুর্থী থেকে সপ্তমী পর্যন্ত ব্রতপালন করা হয়। এই ক’দিনে লাউভাত, ‘খাড়না’ (আতপ চালের ভাত) খাওয়ার রীতি রয়েছে। আজ, রবিবার বিকেলে উপোস করে নদী বা জলাশয়ের ধারে সূর্যাস্তের সময় সূর্যদেবকে অর্ঘ্য নিবেদন করেন বাড়ির মহিলারা। পুজোর উপাচারের অন্যতম উপাদান ‘ঠেকুয়া’। গত কয়েক দিন থেকেই ছটের ভিড় নজরে পড়েছে দুর্গাপুর, কাঁকসা, পানাগড়, গলসি, বুদবুদের বিভিন্ন সব্জি ও ফলের বাজারে। বছরের অন্য সময়ের তুলনায় জিনিসপত্রের দামও বেশ চড়া বলে জানান ক্রেতারা।
পুজোর প্রস্তুতি উপলক্ষে দুর্গাপুর পুরসভার তরফে দামোদর, শহরের বড় বড় পুকুর ও জলাশয়ের পাড় কয়েক দিন ধরেই সাফাই করা হচ্ছে। বেশ কয়েকটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ও ব্যক্তিগত উদ্যোগে ঘাটে আলোর ব্যবস্থা করা হয়েছে। থাকছে চা, জলের ব্যবস্থাও। প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, দামোদরের বেশ কয়েকটি বিপজ্জনক এলাকায় থাকছে কড়া পাহারা। দুর্গাপুরের মধ্যে কুমারমঙ্গলম পার্কের জলাশয়টি বাঁশ দিয়ে ঘিরে দিয়েছে পুজো কমিটি। এ ছাড়াও শহরের অর্জুনবাঁধ পুকুর, বেনাচিতির ধর্মপুকুর, সগড়ভাঙা, মায়াবাজার-সহ বিভিন্ন এলাকাতেই প্রস্তুতি প্রায় শেষ হয়ে গিয়েছে বলে খবর।
রাজ্য জুড়ে বিভিন্ন জ্বরের প্রকোপের কারণে এ বার সাফাইয়ে বেশি নজর দেওয়া হয়েছে বলে জানান উদ্যোক্তারা। দুর্গাপুরের দু’টি পুজো কমিটির তরফে রাজেশ কুমার, বিপিন কুমার বলেন, ‘‘ডেঙ্গির প্রকোপে চিন্তায় রয়েছেন রাজ্যবাসী। তাই বাড়তি যত্ন নিয়ে সাফাই করা হয়েছে। সকলে যাতে নিশ্চিন্তে পুজো করতে পারেন, তার জন্য বেশি পরিমাণে মশার স্প্রে’ও ছড়ানো হয়েছে।’’
পুজোর প্রস্তুতি সারা হয়ে গিয়েছে বর্ধমান শহরেও। প্রশাসনের সূত্রে জানা গেল, শহরের জিটি রোড, মেহেদি বাগান, লক্ষ্মীপুর মাঠ, জোড়া মন্দির প্রভৃতি এলাকার মানুষেরা সদরঘাটে দামোদরের পাড়ে ছট-উৎসবে মাতবেন। পুজো উপলক্ষে বের হবে শোভাযাত্রা। বসেছে মেলাও। প্রশাসনের তরফে পর্যাপ্ত আলো, পানীয় জল ও পুলিশি পাহারার ব্যবস্থাও করা হয়েছে। বর্ধমান থানার পুলিশ জানায়, রবিবার জিটি রোড লাগোয়া এলাকায় পুলিশের ক্যাম্প থাকবে। এ ছাড়া বাঁকা নদীর পাড়ে শহরের রথতলা, ভাতশালা প্রভৃতি এলাকাতেও শনিবার ছটের প্রস্তুতি ঘিরে মানুষের উৎসাহ নজরে পড়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy