Advertisement
৩০ এপ্রিল ২০২৪

মাশরুমেই লাভ দেখছে মন্তেশ্বর

চাষ বলতে শুধুই ধান। কিন্তু তাতে লাভের নিশ্চয়তা প্রায় নেই বললেই চলে। এই পরিস্থিতিতে নিশ্চিত লাভের আশায় মাশরুম চাষে উদ্যোগী হল প্রশাসন। এই চাষের জন্য বীজের সরবরাহ ঠিক রাখতে একটি পরীক্ষাগারও তৈরি করা হবে বলে মন্তেশ্বর পঞ্চায়েত সমিতির দাবি।

কেদারনাথ ভট্টাচার্য
মন্তেশ্বর শেষ আপডেট: ০৫ এপ্রিল ২০১৭ ০০:৪৫
Share: Save:

চাষ বলতে শুধুই ধান। কিন্তু তাতে লাভের নিশ্চয়তা প্রায় নেই বললেই চলে। এই পরিস্থিতিতে নিশ্চিত লাভের আশায় মাশরুম চাষে উদ্যোগী হল প্রশাসন। এই চাষের জন্য বীজের সরবরাহ ঠিক রাখতে একটি পরীক্ষাগারও তৈরি করা হবে বলে মন্তেশ্বর পঞ্চায়েত সমিতির দাবি।

কৃষি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, এলাকার ১৩টি পঞ্চায়েতের ১৬ হাজার মানুষের একমাত্র জীবিকা চাষাবাদ। গতানুগতিক চাষে তেমন লাভ নেই দেখে সম্প্রতি ব্লক প্রশাসন ঠিক করে, মাশরুমের (পল ছাতু) বিকল্প চাষকে জনপ্রিয় করতে হবে। বাজারে এর চাহিদাও রয়েছে ব্যাপক। পঞ্চায়েত সমিতির দাবি, ওড়িশার ভুবনেশ্বরে এই চাষ অত্যন্ত সফল। প্রযুক্তি, উন্নত বীজ-সহ নানা বিষয় বুঝতে সমিতির পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ তড়িৎ রায়ের নেতৃত্বে একটি দল ভুবনেশ্বর কৃষি বিদ্যালয়ে ঘুরে আসেন। সেখান থেকে নিয়ে আসা হয়, দু’শো বোতল পল ছাতুর উন্নত বীজ। সমিতির দাবি, মন্তেশ্বরের বিভিন্ন এলাকার সঙ্গে ভুবনেশ্বরের আবহাওয়ারও সাদৃশ্য রয়েছে।

প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, এই চাষের জন্য ভাগরামূলগ্রাম, মামুদপুর ১, বাঘাসন, জামনা, মন্তেশ্বর ও দেনুড় পঞ্চায়েতের ৩১টি স্বয়ম্ভর গোষ্ঠীকে বেছে নিয়ে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়। প্রশিক্ষণের কাজে সাহায্য করে নিমপীঠ রামকৃষ্ণ কৃষি বিদ্যালয়। প্রশিক্ষণ নিয়ে গোষ্ঠীর সদস্যরা নিজেদের বাড়ি, আটচালা, গাছতলা-সহ নানা ছায়াযুক্ত স্থানে পল ছাতুর চাষ শুরু করেন।

কী ভাবে হয় এই চাষ? চাষিরা জানান, ‘বেড’ তৈরির জন্য প্রায় ন’ঘণ্টা জলে ভিজিয়ে রাখতে হয় খড়। পরে জল ঝরিয়ে খড় বিছিয়ে দেওয়া হয় মেঝেই। তিন ধাপে ছড়িয়ে দেওয়া হয় মাশরুমের বীজ। শেষে তা ঢেকে দেওয়া হয় পলিথিনের আচ্ছাদন দিয়ে। ন’দিন পরে আচ্ছাদন খুলে অল্প জল ছড়াতে হয়। একটি দু’ফুট বাই দু’ফুট বেড তৈরির খরচ ২৫-৩০ টাকা। এক একটি বেড থেকে পল ছাতু মেলে অন্তত এক কিলোগ্রাম, যার বাজারদর প্রায় দু’শো টাকা। ইতিমধ্যেই ভাগরামূল গ্রামের ভারতী স্বয়ম্ভর গোষ্ঠীর শেড-সহ কয়েকটি যায়গা ঘুরে দেখেন মন্তেশ্বরের বিডিও, তড়িতবাবু। পর্যবেক্ষণ শেষে তাঁদের দাবি, খুব শীঘ্রই এই ছাতু বাজারে আসবে।

এই ছাতুর বাজার কোথায়? পঞ্চায়েত সমিতি জানায়, প্রাথমিক ভাবে এলাকার ১৪৮টি প্রাথমিক স্কুলে তা মিড-ডে মিলের খাবার হিসেবে দেওয়া হবে। এই চাষ অন্তত একশোটি স্বয়ম্ভর গোষ্ঠীর মধ্যে ছড়িয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানায় সমিতি। বীজের জন্য আপাতত ওড়িশার উপর নির্ভর করতে হলেও এলাকায় দ্রুত একটি বীজ উৎপাদন কেন্দ্র তৈরি করা হবে বলে জানান তড়িতবাবু।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Mushroom Manteswar
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE