প্রথম বার ক্ষমতায় এসে কাজী নজরুল ইসলামের নামে বিশ্ববিদ্যালয় তৈরিতে উদ্যোগী হন তিনি। দ্বিতীয় বার জিতে ফের মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছ থেকে আরও একটি সুখবর পেলেন নজরুল গবেষকেরা। এ বার আসানসোলের কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘নজরুল সেন্টার ফর সোশ্যাল অ্যান্ড কালচারাল স্টাডিজ’ গড়ে তোলার কথা ঘোষণা করলেন তিনি।
সোমবার নারায়ণগড়ের সভা থেকে মুখ্যমন্ত্রী এই কেন্দ্র গঠনের কথা ঘোষণা করেছেন বলে প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে। সেই উপলক্ষে মঙ্গলবার থেকে আসানসোলের রবীন্দ্রভবনে তিন দিনের একটি বিশেষ অনুষ্ঠানেরও আয়োজন করা হয়েছে। সেখানে থাকবেন বাংলাদেশের নজরুল গবেষকেরা। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন শিল্পাঞ্চলের নজরুল গবেষক থেকে শুরু করে সাহিত্যপ্রেমী ও শিক্ষাবিদেরা।
নজরুলের জন্মভিটে চুরুলিয়ায় তাঁর নামে একটি গবেষণা কেন্দ্র তৈরির দাবি ছিল অনেক দিনের। নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে ওঠার পরে সেই দাবি আরও জোরালো হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সাধন চক্রবর্তী বলেন, ‘‘এই উদ্যোগে শুধু গবেষকেরা নন, শিল্পাঞ্চলের সাহিত্যপ্রেমীরাও উপকৃত হবেন।’’ তিনি জানান, বাংলাদেশের কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে সামনের মাসে তাঁরা একটি মৌ সই করবেন। এর ফলে দুই দেশের গবেষকেরা যৌথ গবেষণা করতে পারবেন। সাধনবাবুর মতে, নজরুল সংক্রান্ত এমন কিছু উল্লেখযোগ্য তথ্য দুই দেশের গবেষকদের কাছে আছে যা আদানপ্রদান হলে দু’পক্ষই উপকৃত হবেন। বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে নজরুলের একটি সংগ্রহশালাও তৈরি হবে। সেখানে কবির পাণ্ডুলিপি থেকে শুরু করে তাঁর ব্যবহৃত নানা জিনিসপত্র থাকবে। সে সব দেখে নজরুল নিয়ে আগ্রহ বাড়বে মানুষের।
সাধনবাবুর দাবি, নজরুল নিয়ে অনেক গবেষণা হয়েছে। কিন্তু তাঁর সাহিত্য, সংস্কৃতি ও সমাজদর্শন আন্তর্জাতিক স্তরে ছড়িয়ে দেওয়ার আরও অনেক সুযোগ রয়েছে। সে দিকেই তাঁদের লক্ষ্য বলে দাবি উপাচার্যের। তিনি জানান, তাঁদের এই পরিকল্পনা সরকারকে জানাতে মুখ্যমন্ত্রী আগ্রহ দেখান। সব রকম সাহায্যেরও প্রতিশ্রুতি মেলে। ইতিমধ্যে এই কেন্দ্রের জন্য ডিরেক্টর, ডেপুটি ডিরেক্টর ও এক জন রিসার্চ অ্যাসোসিয়েট নিয়োগ করা হয়েছে। শীঘ্র আরও কিছু পদও তৈরি করে নিয়োগ হবে। আপাতত বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা কেন্দ্রটি চালাতে সাহায্য করবেন। পরে নজরুলের সমাজ-দর্শন বিষয়ে একটি পাঠ্যক্রমও শুরুর পরিকল্পনা আছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের। এই কেন্দ্রের নবনিযুক্ত ডেপুটি ডিরেক্টর তথা ইংরেজির অধ্যাপক শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, কেন্দ্রটি শুধুমাত্র গবেষণা বা চর্চাকেন্দ্র নয়, শিল্পাঞ্চলের সাহিত্য ও সংস্কৃতি প্রসারেও কাজ করবে। একটি প্রেক্ষাগৃহ তৈরি করে নিয়মিত অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে।
‘আসানসোল বাংলা অ্যাকাডেমি’র সভাপতি তথা প্রাক্তন অধ্যক্ষ রামদুলাল বসু বলেন, ‘‘এই উদ্যোগকে স্বাগত। তবে মনে রাখতে হবে, এ জন্য উপযুক্ত আধিকারিক ও কর্মী নিয়োগ, উন্নত পরিকাঠামোর ব্যবস্থা করতে হবে।’’ সাহিত্যিক নন্দদুলাল আচার্য বলেন, ‘‘আমরা তো শিল্পাঞ্চলে নজরুলকে নিয়ে এই রকম একটি কেন্দ্র চেয়েছিলাম। তা হচ্ছে শুনে ভাল লাগছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy