Advertisement
E-Paper

হকার উচ্ছেদে বাধার নালিশ

রোগী কল্যাণ সমিতির বৈঠকে বারবার আলোচনা হয়েছে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল চত্বর থেকে হকার উচ্ছেদ নিয়ে। কিন্তু কাজ হয়নি। অভিযোগ, গত ছ’মাস ধরে উচ্ছেদ নিয়ে আলোচনা হলেই আপত্তি জানিয়ে বাধা দিয়েছেন স্থানীয় তৃণমূল কাউন্সিলর ও তাঁর দাদা।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৫ ডিসেম্বর ২০১৬ ০০:৪০
হাসপাতাল চত্বরে দিব্যি চলছে দোকান। নিজস্ব চিত্র।

হাসপাতাল চত্বরে দিব্যি চলছে দোকান। নিজস্ব চিত্র।

রোগী কল্যাণ সমিতির বৈঠকে বারবার আলোচনা হয়েছে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল চত্বর থেকে হকার উচ্ছেদ নিয়ে। কিন্তু কাজ হয়নি। অভিযোগ, গত ছ’মাস ধরে উচ্ছেদ নিয়ে আলোচনা হলেই আপত্তি জানিয়ে বাধা দিয়েছেন স্থানীয় তৃণমূল কাউন্সিলর ও তাঁর দাদা।

হাসপাতাল সূত্রেই খবর, কখনও হকারদের রোগীর পরিজনদের সাহায্য করার কারণ দেখিয়ে, কখনও অন্য অজুহাতে বিষয়টি চাপা দিতে চেয়েছেন কাউন্সিলর সুশান্ত প্রামাণিক। দু’দিন আগে ওই বৈঠকে ভাইয়ের দোসর হয়েছেন দাদা, প্রাক্তন বিধায়ক উজ্জ্বল প্রামাণিকও। তিনি আবার হাসপাতাল চত্বরে হকার-নিয়ন্ত্রণের কথা তুলেছেন।

যদিও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সাফ জবাব, নিয়ন্ত্রণের কোনও ব্যাপার নেই, হাসপাতাল চত্বরে হকার রাখা যাবে না। রোগী কল্যাণ সমিতির সভাপতি স্বপন দেবনাথও ওই বৈঠকে বলেন, ‘‘আলোচনা করে মীমাংসা করার জন্য জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে সব পক্ষকে একটি বৈঠক ডাকা দরকার।’’ ওই প্রস্তাব মতো অতিরিক্ত জেলাশাসক (স্বাস্থ্য) প্রণব রায় জেলা পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে বৈঠক করবেন বলেও জানা গিয়েছে।

শুধু হকারদের পাশে থাকা নিয়ে নয়, রোগী কল্যাণ সমিতির সদস্য না হয়েও সভায় থাকার অনুমতি জামালপুরের প্রাক্তন বিধায়ক উজ্জ্বলবাব পেলেন কী করে তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, উজ্জ্বলবাবুকে রোগী কল্যাণ সমিতির সভায় রাখার জন্য হাসাপাতাল সুপারকে নির্দেশ দেন খোদ স্বপনবাবু। সেই জন্যই আমন্ত্রণ জানিয়ে চিঠি পাঠানো হয়। কিন্তু এ ভাবে হাসপাতাল পরিচালনায় সর্বোচ্চ পর্যায়ের একটি বৈঠকে সভাপতির ইচ্ছায় কাউকে আমন্ত্রণ জানানো যায় কি না, তা নিয়েও বিতর্র দেখা দিয়েছে। স্বপনবাবুর অবশ্য দাবি, “উজ্জ্বল আগে সদস্য ছিল। হাসপাতালের উন্নয়ন নিয়ে ভাবে। সে জন্য ডাকা হয়েছিল।”

স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, স্বাস্থ্য সচিব আর এস শুক্লা বেশ কয়েক মাস ধরে হাসপাতাল চত্বর থেকে হকার সরানোর জন্য সমস্ত জেলার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল সুপারদের নির্দেশ দিয়েছেন। গত মাসে একটি বৈঠকে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজের হকার-রাজ ও উচ্ছেদের পরের ছবিও দেখান তিনি। স্বাস্থ্য সচিবের জিজ্ঞাসা, ‘মুর্শিদাবাদ সফল হয়েছে, সেখানে আপনারা এক কদম এগোতে পারছেন না কেন?’ স্থানীয় প্রশাসন সহযোগিতা না করলে তাঁকে জানানোর কথাও বলেন তিনি। বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষও ঠিক করেন, এ মাসের মধ্যে হকার উচ্ছেদ নিয়ে পদক্ষেপ না করা গেলে স্থানীয় কাউন্সিলর থেকে বর্ধমান থানার ভূমিকা নিয়ে চিঠি দেওয়া হবে। ওই চিঠিতে হকারেরা কী ভাবে হাসপাতালের দৈনন্দিন কাজে ব্যাঘাত ঘটাচ্ছেন, কী ভাবে দালালি করছেন, জায়গা দখলের পাশাপাশি হাসপাতাল নোংরা করছেন, তা জানানো হবে।

উজ্জ্বলবাবুর যদিও দাবি, “মুর্শিদাবাদের সঙ্গে তুলনা করলে চলে! ওখানে তো হাজার খানেক হকার ছিল, আর বর্ধমানে তিরিশ-চল্লিশটা।” পাশে দাঁড়ানো সুশান্তবাবুও বলে ওঠেন, “ওঁদের জন্য পুনর্বাসন চাই।” এই দাবি অবশ্য ঝেড়ে ফেলে দিয়েছেন প্রশাসনের কর্তারা। বর্ধমানের জেলাশাসক সৌমিত্র মোহন বিষয়টিতে সদর্থক ভূমিকা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। আর দলের দুই নেতার নাম জড়ানো নিয়ে মন্ত্রী স্বপনবাবু বলেন, “সে জন্যই তো সবাইকে নিয়ে বৈঠক ডাকার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে অতিরিক্ত জেলাশাসককে।”

hawkers Burdwan medical college
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy