Advertisement
১১ মে ২০২৪
potato farmers

খরচ বেশি, তবু অন্য রাজ্যের আলুবীজই ভরসা

পূর্ব বর্ধমানে প্রায় ৭২ হাজার হেক্টর জমিতে আলু চাষ হয়। কৃষি দফতরের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে হেক্টর প্রতি জমিতে আলু চাষ করতে খরচ হয় ১ লক্ষ ৮৪ হাজার ১৫ টাকা।

ভাল ফসলের জন্য ভরসা সেই ভিনরাজ্যের বীজ।

ভাল ফসলের জন্য ভরসা সেই ভিনরাজ্যের বীজ। — ফাইল চিত্র।

কেদারনাথ ভট্টাচার্য
কালনা শেষ আপডেট: ২৪ মার্চ ২০২৩ ০৭:৪৫
Share: Save:

চড়া দামে ভিন্‌ রাজ্যের আলু বীজ কিনতে হয়‌ পূর্ব বর্ধমানের চাষিদের। বাড়ে চাষের খরচ। আবার ভিন্‌ রাজ্যে বীজ কিনতে গিয়ে প্রতারণার শিকারও হতে হয় অনেককে। চাষিদের দাবি, এ জেলায় চাহিদার তুলনায় উন্নত মানের বীজ তৈরি হয় অনেক কম। বাধ্য হয়ে তাঁদের ঝুঁকতে হয় ভিন্‌ রাজ্যের শংসাপত্র পাওয়া বীজের দিকে। কৃষি দফতরের অবশ্য দাবি, উন্নত আলু বীজ চাষে জোর দেওয়া হচ্ছে।

পূর্ব বর্ধমানে প্রায় ৭২ হাজার হেক্টর জমিতে আলু চাষ হয়। কৃষি দফতরের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে হেক্টর প্রতি জমিতে আলু চাষ করতে খরচ হয় ১ লক্ষ ৮৪ হাজার ১৫ টাকা। বিঘে প্রতি হিসেবে যা প্রায় ২৯ হাজার টাকা। চুক্তিতে অন্যের জমি চাষ করলে খরচের অঙ্ক বাড়ে আরও। সাধারণত বিঘা প্রতি জমিতে দুই থেকে আড়াই কুইন্টাল আলু বীজ লাগে। আলু চাষের আগে ভিন্‌ রাজ্য থেকে বিশেষ করে পাঞ্জাব থেকে ৫০ কেজি ওজনের আলু বীজের বস্তা নিয়ে আসে কৃষি সমবায়-সহ বিভিন্ন ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান। সেখান থেকেই বেশির ভাগ চাষি আলু বীজ কেনেন। কেউ কেউ একবার আলু বীজ কিনে সেই আলু হিমঘরে রেখে আরও দু’বার বীজ হিসাবে ব্যবহার করেন। চাষিদের দাবি, এ বার বস্তা পিছু দুই থেকে সাড়ে তিন হাজার টাকা দরে আলু বীজ কিনতে হয়েছে। কোনও কোনও বছর দাম বেড়ে যায় আরও। ২০২০ সালে ভিন্‌ রাজ্যের আলু বীজের দর ছিল চার হাজার টাকার আশেপাশে। তবে জেলার কৃষি খামারেও উন্নত মানের বীজ তৈরি হয়। এ বার কালনা, মেমারির কৃষি খামারে পলি হাউসে তৈরি হয়েছে উন্নত আলু বীজ। কালনা ২ ব্লকের সামগ্রিক অঞ্চল উন্নয়ন পর্ষদও (সিএডিসি) বড়ধামাস, বৈদ্যপুর এবং অকালপৌষ পঞ্চায়েতের চাষিদের নিয়ে বহু বছর ধরে আলু বীজ তৈরি করে। বেসরকারি উদ্যোগেও কিছু কিছু এলাকায় তৈরি হয় আলু বীজ। চাষিদের দাবি, জেলায় শংসাপত্র পাওয়া যে বীজ তৈরি হয়, তা প্রয়োজনের তুলনায় পাঁচ থেকে সাত শতাংশ কম। কালনা ২ ব্লকের আলু চাষি গোলাম শেখ বলেন, ‘‘ভিন্ রাজ্য থেকে আলু বীজ আনতে এক দিকে যেমন পরিবহণ খরচ বাড়ে, তেমনি নানা হাত ঘুরে সেই বীজ আসায় দাম বেড়ে যায় অনেকটাই।’’ সরকারি উদ্যোগে পর্যাপ্ত আলু বীজ তৈরি করে সমবায়ের মাধ্যমে তা চাষিদের দিলে খরচ কম হয়, দাবি তাঁর। আলু বীজ সংরক্ষণের জন্য আলাদা হিমঘরেরও দাবি করেছেন চাষিরা।

কৃষি বিশেষজ্ঞদের মতে, এ রাজ্যে শীত খুব বেশি দীর্ঘ হয় না। ফলে অশোকা, চন্দ্রমুখীর বীজ তৈরিতে সমস্যা না হলেও জ্যোতি আলুর বীজ তৈরিতে মুশকিল হয়। ভাইরাসের হামলা দেখা দেয়। ভাল মানের বীজও মেলে কম। অথচ বেশির ভাগ চাষি জ্যোতি আলুর চাষ করেন। তাই বীজের ব্যাপারে ভিন্‌ রাজ্যের উপরে নির্ভর করতে হয়। জেলার এক সহ কৃষি অধিকর্তা সুকান্ত মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমরা নিজেরা ভাল মানের বীজ উৎপাদন করি। চাষিরা যাতে শংসিত বীজে চাষ করেন এবং নিজেরাও ভাল বীজ উৎপাদন করতে পারেন, সে ব্যাপারে সারা বছর ধরে উৎসাহ দেওয়া হয়।’’

a

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

potato farmers Kalna
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE