•প্রচার: আলু সংগ্রহ করতে সরকারি প্রচার। নিজস্ব চিত্র
গত বৃহস্পতিবার থেকে সহায়ক মূল্যে আলু কেনা শুরু করেছে সরকার। কিন্তু তার পরেও মেমারি ও কালনায় দু’জন আলু চাষির অপমৃত্যু হয়েছে। দু’টি ক্ষেত্রেই পরিবারের দাবি, আলু চাষে লোকসানের জেরে ঋণ শোধ না করতে পেরেই আত্মঘাতী হয়েছেন দুই চাষি। এই ঘটনাগুলিকে সামনে রেখে চাষিদের একটি বড় অংশের দাবি, এত দেরিতে আলু কেনা শুরু হওয়ায় তেমন লাভ হচ্ছে না। তাই ঋণ মকুবের ব্যবস্থা করুক সরকার।
কৃষি দফতর জানায়, জেলায় প্রায় ৭০ হাজার হেক্টর জমি থেকে ২১ লাখ মেট্রিক টন আলুর ফলন হয়। এ বার মাঠ থেকে আলু উঠেছে অন্তত এক মাস আগে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই আলু মজুত করাও হয়ে গিয়েছে হিমঘরে। হিমঘরগুলিও বর্তমানে দরজা বন্ধ করে দিয়েছে। এমনকী, কালনা ও মেমারির কিছু এলাকায় চাষিরা কুমড়ো চাষও শুরু করে দিয়েছেন। ফলে, সরকার আলু কেনা শুরু করলেও তার লক্ষ্যমাত্রা আদৌ পূরণ হবে কি না, তা নিয়ে সংশয়ে চাষি ও প্রশাসনের কর্তাদের একাংশ। সম্প্রতি প্রশাসনিক বৈঠকে কালনার বাঘনাপাড়া, বেগপুর, ধাত্রীগ্রামের মতো বেশ কয়েকটি পঞ্চায়েত জানিয়েও দিয়েছে, তাদের এলাকা থেকে আলু মিলবে না।
সহায়ক মূল্যে কুইন্ট্যাল প্রতি আলুর দর, ৪৬০ টাকা। এক জন চাষির থেকে সর্বোচ্চ এক বস্তা (৫০ কেজি) আলু কেনা হবে। আলু পরিবহণের জন্য কেজি প্রতি গাড়ি ভাড়া বরাদ্দ হয়েছে এক টাকা। মেমারির আলু চাষি মইনুদ্দিন শেখের দাবি, ‘‘বাজারে আলুর বন্ডের বস্তা পিছু দর সরকারি দরের থেকে মাত্র ৩০ টাকা কম। কিন্তু আলু বিক্রি করতে গেলে বস্তা কেনা ও গাড়ি ভাড়া বাবদ চলে যাচ্ছে আরও ২০ টাকা।’’ এই পরিস্থিতিতে বিঘা প্রতি জমিতে প্রায় সাত, আট হাজার টাকা লোকসান হচ্ছে। এ বছর আলু চাষে ব্যাপক লোকসান রুখতে চাষিদের দাবি, ‘‘ব্যাঙ্ক ও সমবায় ঋণ মকুবের ব্যবস্থা করুক সরকার।’’
এ ছাড়়া সরকার যে পরিমাণ আলু কিনবে, তাতেও বিশেষ লাভ দেখছেন না চাষিরা। প্রশাসন সূত্রে খবর, জেলা জুড়ে প্রাথমিক পর্যায়ে দু’হাজার মেট্রিক টন আলু কেনার লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে। এই হিসেবে যে সব ব্লকে আলু চাষের এলাকা বেশি, সেখানেও মাত্র এক-দেড় হাজার বস্তা আলু কেনা হবে। অথচ এই পরিমাণ আলু এক জন সম্পন্ন চাষি একাই অথবা তিন থেকে চার জন মাঝারি মাপের চাষি নিজেদের জমিতে উৎপাদন করেন। এ ছাড়া জেলায় এমন ব্লকও রয়েছে, যেখানে আলুচাষির সংখ্যা ১০ হাজারেরও বেশি। অর্থাৎ তাঁদের অধিকাংশই এক বস্তা করেও সহায়ক মূল্যে বিক্রি করতে পারবেন না।
যদিও কালনার মহকুমাশাসক নীতিন সিংহানিয়ার দাবি, ‘‘কৃষি দফতর জানিয়েছে মোট উৎপাদনের ৫ শতাংশ আলু এখনও রয়েছে। লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হবে। ঋণ মকুবের বিষয়টি চাষিরা আমাকে জানালে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy