Advertisement
১৭ জুন ২০২৪

প্রস্তাব সার, বিক্রি নেই শোলা-হাবে

ওঁদের কেউ শিল্পকর্মের জন্য রাষ্ট্রপতি পুরষ্কার পেয়েছেন। সম্প্রতি প্রস্তাবিত ‘সার্কিট ট্যুরিজম’-এ পর্যটকদের মঙ্গলকোটের বনকাপাশিতে তাঁদেরই বানানো শিল্পের প্রদর্শনী করার পরিকল্পনার কথা জানিয়েছে ব্লক প্রশাসন।

বন্ধ পড়ে শোলা-হাব। নিজস্ব চিত্র

বন্ধ পড়ে শোলা-হাব। নিজস্ব চিত্র

সুচন্দ্রা দে
কাটোয়া শেষ আপডেট: ২০ এপ্রিল ২০১৭ ০১:৪২
Share: Save:

ওঁদের কেউ শিল্পকর্মের জন্য রাষ্ট্রপতি পুরষ্কার পেয়েছেন। সম্প্রতি প্রস্তাবিত ‘সার্কিট ট্যুরিজম’-এ পর্যটকদের মঙ্গলকোটের বনকাপাশিতে তাঁদেরই বানানো শিল্পের প্রদর্শনী করার পরিকল্পনার কথা জানিয়েছে ব্লক প্রশাসন। কিন্তু ওই এলাকাতেই ‘শোলা-হাবে’র অধিকাংশ দোকানে শোলা-শিল্পের বিকিকিনি প্রায় হয়ই না। এমনকী অনেক শিল্পী দোকানও পাননি। এই পরিস্থিতিতে প্রশাসনের নয়া উদ্যোগ কতখানি সফল হবে, তা নিয়ে সংশয়ে শিল্পীরাই।

প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১৪-১৫ আর্থিক বর্ষে এমএসডিপি প্রকল্পে ৪০ লাখ টাকা খরচে দেড় বিঘে জমির উপরে তৈরি হয় হাবটি। মাস দুয়েক পরে ওই ভবনেই তৈরি হয় সব্জি মান্ডি। পুরো ভবনটির পরিচালনায় রয়েছে মঙ্গলকোট পঞ্চায়েত সমিতি। তত্ত্বাবধান করে ‘মা-মাটি-মানুষ কর্মতীর্থ’ নামে একটি কমিটি। হাবের ভবনে দোকানঘর রয়েছে মোট ৪৩টি।

হাবে গিয়ে দেখা গেল, ওই কটি ঘরের মধ্যে মাত্র সাতটিতে রয়েছে শোলার দোকান। তা-ও খোলে বিকেলে, মাত্র ঘণ্টা চারেক জন্য। হাবের অধিকাংশ দোকানই স্টেশনারি, জামা-কাপড় বা বৈদ্যুতিন জিনিসপত্রের। কেন? স্থানীয় বিক্রেতা অলোক দাস, হেমন্তকুমার অধিকারীদের দাবি, ‘‘স্টেশনারি দোকান অনেক লাভজনক।’’

শোলার জিনিসপত্র বিক্রি করে লাভ যে তেমন হয় না, সেটা জানান শিল্পী প্রসাদ ঘোষ, মৃণালকান্তি পালরাও। তাঁদের ওই হাবে দোকান রয়েছে। প্রসাদবাবুদের আক্ষেপ, ‘‘ঘর ভাড়া ২০০ টাকা। বিদ্যুতের খরচ মাসে ৬৫০ টাকা। তার পরে মাস গেলে হাতে হাজার টাকাও আসে না।’’ অথচ, শোলার মুকুট, প্রতিমার সাজ তাঁরা বাড়ি থেকেই সরবরাহ করেন। এই এলাকায় শোলার দোকান না চলার কারণ হিসেবে, শিল্পীদের একাংশের দাবি, হাটটির বিষয়ে এলাকার বাইরে তেমন কোনও প্রচার করেনি প্রশাসন। তা ছাড়া সমস্যা রয়েছে পরিকাঠামো নিয়েও। তত্ত্বাবধানের দায়িত্বে থাকা কমিটির সভাপতি রাঘবচন্দ্র ঘোষেরও দাবি, ‘‘দোকানঘরগুলির সংস্কার দরকার।’’

ওই হাবে অনেক শিল্পী এখনও ঘরও পাননি বলে অভিযোগ। যেমন, বনকাপাশিরই একটি পরিবারের তিন জন রাষ্ট্রপতি পুরষ্কার পেয়েছেন। সেই পরিবারের সদস্য আশিস মালাকারের ক্ষোভ, ‘‘কেন্দ্রীয় সরকারের তথ্য-সংস্কৃতি দফতর থেকে প্রশিক্ষণ নিয়েছি। অথচ নিজের এলাকাতেই ‘মডেল’ বিক্রির ঘর পেলাম না।’’

কৈচর ২ পঞ্চায়েত প্রধান উজ্জ্বল শেখের আশ্বাস, ‘‘সংস্কারের কাজ, নতুন ডিসপ্লে বোর্ড বসানোর কাজ শুরু হবে। বিক্রি বাড়াতে পঞ্চায়েত পরিকল্পনাও নিচ্ছে।’’ বিডিও সায়ন দাশগুপ্তের দাবি, ‘‘শোলা হাবের সামগ্রী ‘সার্কিট ট্যুরিজমে’র পর্যটকদের কাছে বিক্রি করার ব্যবস্থা করা হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Fertilizers
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE