Advertisement
E-Paper

‘জাহের থানে’র পাট্টা কবে, প্রশ্ন

এই স্থানটি অত্যন্ত পবিত্র। কিন্তু রক্ষণাবেক্ষণের স্থায়ী বন্দোবস্ত না হওয়ায় এর চারপাশে ঘুরে বেড়াচ্ছে গবাদি পশুরা। কিন্তু আদিবাসীদের পুজোর স্থান, ‘জাহের থান’-এর পাট্টা দেওয়ার কাজ এখনও শেষ হয়নি বলে অভিযোগ। এ ছাড়া, ‘থান’গুলি ঘেরারও বন্দোবস্ত করা হচ্ছে না বলেও অভিযোগ উঠেছে।

সুব্রত সীট

শেষ আপডেট: ১৪ জানুয়ারি ২০১৮ ০২:২৩

এই স্থানটি অত্যন্ত পবিত্র। কিন্তু রক্ষণাবেক্ষণের স্থায়ী বন্দোবস্ত না হওয়ায় এর চারপাশে ঘুরে বেড়াচ্ছে গবাদি পশুরা। কিন্তু আদিবাসীদের পুজোর স্থান, ‘জাহের থান’-এর পাট্টা দেওয়ার কাজ এখনও শেষ হয়নি বলে অভিযোগ। এ ছাড়া, ‘থান’গুলি ঘেরারও বন্দোবস্ত করা হচ্ছে না বলেও অভিযোগ উঠেছে।

জেলার নানা প্রান্তের প্রবীণদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, প্রতিটি আদিবাসী গ্রামেই এই পবিত্র স্থানটি থাকে। কিন্তু অভিযোগ, লাগাতার বন কেটে বসতি স্থাপন, শিল্পায়ন, পাথর খাদানের রমরমায় সেই নির্দিষ্ট জায়গা হারাতে বসেছে। ফলে এক বছর এক জায়গায় পুজো করলে, পরের বার অন্য জায়গা খুঁজতে হয় পুজো দেওয়ার জন্য।— এমন ঘটনাও ঘটে।

এমনই নানা অভিযোগ সামনে আসার পরে রাজ্য সরকার আদিবাসীদের মোড়ল বা পুরোহিতের নামে জাহের থানের জায়গার পাট্টা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। কিন্তু জাহের থানের অধিকাংশ জায়গা বন দফতরের আওতাধীন। কারণ, জাহের থানের অন্যতম শর্তই হল, তা হতে হবে লোকালয়ের বাইরে ও যেখানে শাল গাছ রয়েছে। বেশ কিছু জায়গায় জাহের থানের জায়গা আবার অন্য কোনও সরকারি সংস্থার হাতে রয়েছে। ফলে নানা জায়গাতেই জাহের থানের পাট্টা দেওয়ার কাজ শেষ হয়নি বলে অভিযোগ। আদিবাসী গাঁওতার বীরভূম জেলার নেতা সুনীল সোরেন বলেন, ‘‘আগে থানের জমির কোনও রেকর্ড আমাদের হাতে ছিল না। ফলে বহু জায়গায় বেদখল হয়ে গিয়েছে থানের জমি। এখনও যেগুলি আছে, সেগুলিও অরক্ষিত থাকায় সমস্যা হয়।’’

এই মুহূর্তে ‘বাঁধনা পরব’ চলছে। হুগলি, মেদিনীপুর, বাঁকুড়ার দক্ষিণাঞ্চল ও পূর্ব বর্ধমানের সাঁওতাল সমাজ কালীপুজোর সময়ে এই উত্‍সব পালন করে। তবে পুরুলিয়া, বাঁকুড়ার উত্তরাঞ্চল, পশ্চিম বর্ধমান, বীরভূমে তা পালিত হয় পৌষ মাসে। শুধু বাঁধনা পরব নয়, জাহের থানকে ঘিরে ‘বাহা পরব’ও অনুষ্ঠিত হয়। ধর্মীয় ও সামাজিক কারণে এমন গুরুত্বপূর্ণ স্থানটির দ্রুত পাট্টা দেওয়া দরকার বলে দাবি বাসিন্দাদের। সুনীলবাবুর দাবি, ‘‘আমাদের হিসাবে পশ্চিম বর্ধমানে মাত্র ১৫ শতাংশ ক্ষেত্রেই জাহের থানের জমির পাট্টা দেওয়া হয়েছে। পাট্টা দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সেই জায়গা ঘিরে দেওয়ার আর্জি রয়েছে আমাদের। তা হলে ভবিষ্যতে যেমন সেই জায়গা ফের বেদখল হওয়ার ভয় থাকবে না তেমনই গরু, ছাগল গিয়ে জায়গাটি নোংরা করতে পারবে না।’’

জেলা প্রশাসন জানায়, অনগ্রসর শ্রেণিকল্যাণ দফতর জেলার বেশ কিছু জাহের থান ঘিরে দেওয়ার প্রক্রিয়া হাতে নিয়েছে। কাঁকসা আদিবাসী অধ্যুষিত ব্লক। সেখানকার মোট ৩৭টি জাহের থান ঘিরে দেওয়া হবে। এ ছাড়া দুর্গাপুর-ফরিদপুর ব্লকের সাতটি জাহের থানও ঘেরা হবে। মোট ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ২৫ লক্ষ টাকা। এমন খবরে খুশি কাঁকসার নিমাই টুডু, সুরেশ মাড্ডিরা বলেন, ‘‘এমন উদ্যোগে আমরা খুশি। জাহের থানের পবিত্রতা রক্ষা পাবে।’’

Jaher Than
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy