Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

খোলা রেলগেট পেরিয়ে লাইনে লোক, ছুটছে ট্রেন

পরে রেল সূত্রে জানা যায়, ওই দিন বিকেল সওয়া পাঁচটা নাগাদ এমনই ঘটনা ঘটেছে মেমারির দেবীপুর স্টেশনে। বর্ধমান-হাওড়া মেন লাইনের ওই স্টেশনে এক দিকের রেল গেট খারাপ হয়ে পড়েছিল।

ছড়িয়ে পড়া ভিডিয়োর একটা অংশ। নিজস্ব চিত্র

ছড়িয়ে পড়া ভিডিয়োর একটা অংশ। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
মেমারি শেষ আপডেট: ১৬ অক্টোবর ২০১৯ ০০:৩১
Share: Save:

রেললাইনের উপরে দাঁড়িয়ে বাস, একাধিক গাড়ি পথচারীরা। পাশের রেললাইন দিয়ে ছুটছে শিয়ালদহগামী মা তারা এক্সপ্রেস। সোমবার রাত থেকে এমনই একটি ভিডিয়ো ছড়িয়ে পড়ে সোশ্যাল মিডিয়ায়।

পরে রেল সূত্রে জানা যায়, ওই দিন বিকেল সওয়া পাঁচটা নাগাদ এমনই ঘটনা ঘটেছে মেমারির দেবীপুর স্টেশনে। বর্ধমান-হাওড়া মেন লাইনের ওই স্টেশনে এক দিকের রেল গেট খারাপ হয়ে পড়েছিল। ফলে নির্দিষ্ট নিরাপদ দূরত্ব পেরিয়ে লাইনে পৌঁছে যায় বাস, লোকজন। ভিডিয়োয় দেখা যাচ্ছে, বাসটির প্রায় কান ঘেঁষে চলছে ট্রেনটি।

এলাকার লোকজনের ক্ষোভ, যে কোনও মুহূর্তে বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারত। রেলের তরফে কোনও পাহারা বা অস্থায়ী ব্যারিকেডের ব্যবস্থাও ছিল না, অভিযোগ তাঁদের। পূর্ব রেলের জনসংযোগ আধিকারিক দফতরের এক কর্তা যদিও দাবি, “রেলের নিয়ম মেনেই ট্রেন চালানো হয়েছে। গেট ম্যান ও রেল কর্মীরাই বাস ও অন্যান্য যাত্রীদের সতর্ক করে আটকে দিয়েছেন। তবে যে ভিডিয়ো ছড়িয়েছে, সেটা সত্যিই ভয়ঙ্কর!”

ভিডিয়োয় দেখা যাচ্ছে, বাস, মোটর বাইক-সহ একাধিক গাড়ি ডাউন লাইনের উপরে দাঁড়িয়ে রয়েছে। মধ্যে খান দিয়ে যাওয়া লাইন (‌রেলের পরিভাষায় রিভার্স লাইন) দিয়ে শিয়ালদহগামী মা তারা এক্সপ্রেস যাচ্ছে। বাসের ভিতর থেকে আওয়াজ আসছে, “এ তো অবাক কান্ড! এ কী গো, গেট খোলা আর গাড়ি পার হচ্ছে।’’ পরে বাসের চালক বলেন, “বরাত জোরে বেঁচে গেলাম। ভাবতেই পারছি না, এ রকম ঘটনা ঘটছিল।’’

রেলের দাবি, বিকেল ৫টা নাগাদ গেটটি বিকল হয়ে পড়ে। ফলে ‘ইন্টারলকিং’ পদ্ধতিতেও গোলমাল দেখা দেয়। সে জন্য সিগন্যাল ‘লাল’ হয়ে যায়। গেটটি বিকল হয়ে যাওয়ার কথা নির্দিষ্ট সময়ে আগের স্টেশন বাগিলাতে খবর দেয় গেট ম্যানরা। রেলের এক কর্তা বলেন, “নতুন নিয়মে রেল গেটের সিগন্যাল না পেলে যে কোনও ট্রেন আগের সিগন্যালে দিনের বেলা ১ মিনিট ও রাতে ২ মিনিট অপেক্ষা করে। রেল গেট পার হওয়ার সময় ঘন্টায় ১৫ কিলোমিটার গতি থাকতে হয়। যাত্রী সুরক্ষার স্বার্থে গেট ম্যান ও রেল কর্মীরা গেটে দাঁড়িয়ে থাকেন। দেবীপুরের ঘটনায় সবটাই নিয়ম মেনে হয়েছে।’’

মঙ্গলবার ওই বাসের যাত্রী কৌশিক মুখোপাধ্যায়, রাজু দাসরা যদিও দাবি করেন, “আমরা এখনও রীতিমত আতঙ্কে। কয়েক সেকন্ডের তফাৎ আমাদের প্রাণে বাঁচিয়ে দিল।’’ তাঁদের অভিযোগ, “এক দিকে গেট খোলা, সতর্ক করার জন্য কোনও কর্মী নেই, এ ভাবে ট্রেন চালানোর মানে কী? এই সুরক্ষা কী রেলের কাছে প্রত্যাশিত?” একই কথা বলছেন স্থানীয় লোকজনও। তাঁরা প্রশ্ন তুলেছেন, ‘ম্যানুয়াল-গেট’ লাগিয়ে দিলে ওই পরিস্থিতি হত না।

রেলের তরফে জানানো হয়েছে, ম্যানুয়াল-গেট লাগানোর কোনও পদ্ধতি আর নেই। সে জন্যই রিভার্স লাইন থেকে নির্দিষ্ট দূর থেকে গাড়ি ও যাত্রীদের আটকানো হয়েছে। তবে এ নিয়ে সচেতনতা বাড়ানোর প্রয়োজন রয়েছে রেলের আধিকারিকরা মনে করেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Rail Gate Indian Railway Bardhaman
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE