Advertisement
৩০ এপ্রিল ২০২৪

ইন্টারনেট সংযোগ নেই, জেলায় জমি রেজিস্ট্রি বিপাকে

কয়েকদিন ধরে টানা ইন্টারনেট সংযোগ না থাকায় কাজকর্ম শিকেয় উঠেছে জেলার বেশ কয়েকটি অবর নিবন্ধক কার্যালয়ে। ফলে কালনা, গুসকরার মতো জেলার একাধিক কার্যালয়ে জমি, বাড়ি-সহ নানা সম্পত্তি রেজিস্ট্রি করতে এসে খালি হাতে ফিরে যাচ্ছেন সাধারণ মানুষ। থমকে রয়েছে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ কাজও।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কালনা শেষ আপডেট: ১৯ জুন ২০১৫ ০১:৪৭
Share: Save:

কয়েকদিন ধরে টানা ইন্টারনেট সংযোগ না থাকায় কাজকর্ম শিকেয় উঠেছে জেলার বেশ কয়েকটি অবর নিবন্ধক কার্যালয়ে। ফলে কালনা, গুসকরার মতো জেলার একাধিক কার্যালয়ে জমি, বাড়ি-সহ নানা সম্পত্তি রেজিস্ট্রি করতে এসে খালি হাতে ফিরে যাচ্ছেন সাধারণ মানুষ। থমকে রয়েছে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ কাজও।

বৃহস্পতিবার কালনার ওই কার্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, লোকজনের তেমন ভিড় নেই। দূরদূরান্তের গ্রাম থেকে যাঁরা এসেছেন তাঁরাও ফিরে যাচ্ছেন। কার্যালয়ের ভিতরে দলিল লেখকদের ঘরে অন্যদিন তিল ধারণের জায়গা না থাকলেও এ দিন খালি বসেছিলেন তাঁরা। তাঁরা বলেন, ‘‘সোমবার কার্যালয় খোলার পর থেকে কোনও দলিলই আর রেজিস্ট্রি হচ্ছে না। কারণ যে পদ্ধতিতে অনলাইনে দলিল রেজিস্ট্রি হয় তা অকেজো হয়ে পড়েছে।’’ তাঁরাই জানান, মাস চারেক আগে কালনায় অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন শুরু হয়। নিয়ম অনুযায়ী, যাঁর নামে জমি রেজেস্ট্রি হবে তাঁকে জমির সরকারি মূল্য কম্পিউটার থেকে তুলতে হয়। সরকারি কম্পিউটারে এলাকার বিভিন্ন মৌজার সরকারি দর নথিভুক্ত থাকে। দরপত্র বেরোনোর পরে সাব-রেজিস্টার তা পরীক্ষা করেন। এরপর রেজিস্ট্রেশন ফি, সরকারি স্ট্যাম্প,কোর্ট ফি জমা দিয়ে দলিল রেজিস্ট্রি করা হয়। এক দলিল লেখক জগবন্ধু মুখোপাধ্যায়ের দাবি, ‘‘এক একটি দলিল রেজিস্ট্রির জন্য সাক্ষী-সহ আট-দশ জন করে লোক আসেন। অনেকেই প্রত্যন্ত গ্রামগঞ্জ থেকে গাড়ি ভাড়া করে আসেন। ইন্টারনেট সংযোগ না থাকায় তাঁদের ব্যর্থ হয়ে ফিরে যেতে হচ্ছে। এতে হয়রানি যেমন বাড়ছে, তেমনি টাকাও খরচ হচ্ছে। পাশাপাশি, কার্যালয়ে কাজ না হওয়াই ক্ষতির মুখে পড়েছে দলিল লেখকেরা।’’ এ দিন জমি রেজিস্ট্রি করাতে এসেছিলেন কালনা ১ ব্লকের হাতিপোতা গ্রামের সাহেব আলি শেখ। তাঁর অভিযোগ, ‘‘দু’দিন এসে ফিরে গেলাম। জানি না কবে জমি রেজিস্ট্রি হবে।’’ হুগলির গুপ্তিপাড়া এলাকার সাইফুদ্দিন শেখও বলেন, ‘‘সমুদ্রগড় এলাকায় বিঘেখানেক জমি কিনেছি। বারবার রেজিস্ট্রি অফিসে এসেও ওই জমি নিজের নামে করাতে পারছি না।’’ সমস্যার কথা মেনে নিয়েছেন কালনার সাব রেজিস্টার সুব্রতকুমার মাইতি। তিনি বলেন, ‘‘অনলাইনে রেজিস্ট্রি করতে একটি বেসরকারি সংস্থার ইন্টারনেট ব্যবহার করা হয়। সোমবার থেকে সেটি কাজ না করায় এই সমস্যা। বিষয়টি ওই সংস্থা ও উচ্চ আধিকারিকদের জানানো হয়েছে।’’

গুসকরা এলাকার কার্যালয়টিও একই সমস্যায় পড়ে রয়েছে। সেখানে ভোগান্তির দিন আরও বেশি। দলিল লেখকদের দাবি, দিন দশেক ধরে সমস্যা চলছে। মাঝে কয়েকদিন অল্প সময় অনলাইনে কাজ করা গেলেও গত পাঁচ দিন রেজিস্ট্রি অফিসে কোনও কাজ হয়নি। বেশির ভাগ মানুষকেই ফিরিয়ে দিতে হচ্ছে। খুব জরুরি থাকলে দু’একটি দলিল জেলা সদর থেকে রেজিস্ট্রি করে আনা হচ্ছে। খোঁজ নিয়ে জানা গিয়েছে, ভাতার, মানকর, মঙ্গলকোট এলাকার কার্যালয়গুলি এই সমস্যা চলছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

kalna village land internet
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE