এই প্রতিমারই আদল ফুটে উঠছে। নিজস্ব চিত্র।
পুজোয় কারও তুরুপের তাস ‘থ্রি-ডি’তে দেবী আরাধনা। কারও আবার থিম নোট বাতিল। আর এ সবের মাঝেই চলল স্কুলে স্কুলে আলপনা আঁকা, রাস্তায় হলুদ শাড়ি আর পাঞ্জাবী পরে ঠাকুর দেখা। প্রতি বছরের মতো এ বারও চেনা ছন্দেই সরস্বতী আরাধনা হল শিল্পাঞ্চলে।
দুর্গাপুরের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজির (এনআইটি) মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের শিক্ষক ও পড়ুয়ারা থ্রি-ডি প্রতিমার আদল তৈরি করেছেন। তাঁরা জানান, প্রথমে সিএডি প্রোগ্রামের মাধ্যমে কম্পিউটারের পর্দায় ফুটিয়ে তোলা হয় প্রতিমার আদল। পরে তা অনুসরণ করে যন্ত্রের মাধ্যমে তৈরি হয় থ্রি-ডি মডেল। সরস্বতী প্রতিমাটি প্লাস্টিকের তৈরি। বুধবার এই প্রতিমা দেখতেই ভিড় দেখা গেল পড়ুয়াদের।
ইস্পাতনগরীর বি-জোনের বিদ্যাসাগর ক্লাবের পুজোয় আবার নোট বাতিল ও মানুষের বিভিন্ন দুর্ভোগের কথা ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। সিটি সেন্টারের বিবেকানন্দ সাংস্কৃতিক মঞ্চের পুজোয় ছিল পাত পেড়ে খাওয়া-দাওয়ার আয়োজন। এখানেরই রানি রাসমনি পথের ৩০টি পরিবার মিলে প্রতি বছরের মতো এ বারও পুজো করেছে। রয়েছে দেওয়াল পত্রিকাও। দুর্গাপুর স্টেশন সংলগ্ন সুভাষপল্লির যুগের প্রতীক ক্লাবের ‘নাগলোক’, বুদবুদের সোঁয়াই কবিরাজপাড়ার কাল্পনিক মন্দিরের থিম ও মণ্ডপসজ্জাও নজর
কেড়েছে দর্শকদের।
থিমের দৌড়ে পিছিয়ে ছিল না রানিগঞ্জ-অন্ডালও। অন্ডালের ডাঙালপাড়ার একটি ক্লাব ট্রেন দুর্ঘটনা, রানিগঞ্জের বল্লভপুর হ্যাপি ক্লাব আধুনিক শিক্ষা সরঞ্জাম, বক্তারনগরের নবচেতনা সমিতি ‘স্বপ্নের অদ্ভূত দেশ’ থিমগুলিও ছিল উল্লেখযোগ্য।
এ সবের মধ্যে স্কুলের সাবেক পুজোতেও পড়ুয়াদের ভিড় ছিল নজরে পড়ার মতো। শহরের বিভিন্ন স্কুলে খোঁজ নিয়ে জানা গেল, পুজোর তোড়জোড় শুরু হয়েছে দিন কয়েক আগে থেকেই। বেশির ভাগ স্কুলেই দায়িত্বে ছিল নবম শ্রেণির ছাত্র-ছাত্রীরা। আলপনা, স্কুল চত্বর সাজানো, বাজার করা— সবেতেই পড়ুয়াদের উৎসাহ ছিল নজরে পড়ার মতো। সঙ্গে খিচুড়ি, পায়েস, সব্জির তরকারিরও দেদার আয়োজন ছিল অনেক স্কুলেই।
এমএএমসি মডার্ন স্কুলের নবম শ্রেণির অনুরাগ মিশ্র, শালিনী চক্রবর্তীরা বলে, ‘‘পুজোর দায়িত্ব নিয়ে মনে হল, হঠাৎ করে কেমন যেন ‘বড়’ হয়ে গিয়েছি।’’ সরস্বতী পুজোর সঙ্গে জড়িত চিরায়ত সাজ! শহরেরই এক ছাত্রী যেমন বলে, ‘‘মায়ের হলুদ শাড়িটা আগেভাগেই সরিয়ে রেখেছিলাম। কারণ বোনেরও নজর ছিল যে ওদিকে।’’ ছেলেরাও কম যায় না। তাদের অনেকেরই পরণে পাট ভাঙা পাজামা-পাঞ্জাবী।
শহরের বিভিন্ন স্কুলে গিয়ে দেখা গেল বন্ধু-বান্ধবীদের নির্ভেজাল আড্ডা। সেখানে চলছে ‘রইস’, ‘কাবিলে’র ফিল্মি আলোচনা। সেই দলেরই এক কিশোর বলে ওঠে, ‘‘সরস্বতী পুজোটা স্পেশ্যাল। কারণ ইন্টারনেটের যুগেও এই এক দিনই ভাল ভাবে আড্ডা দেওয়া যায় বান্ধবীদের সঙ্গে!’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy