নতুন বছরের প্রথম দিন বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট খুলতেই চক্ষু চড়কগাছ। তিন রঙের উপর মুষ্টিবদ্ধ হাতের ছবি। তার উপর লেখা রয়েছে ‘পরীক্ষামূলক ভাবে ওয়েবসাইটটি হ্যাক’ করা হয়েছে। ঠিক নীচে দেওয়া হয়েছে একটি কোড –‘জিএইচ০এস৭’।
আবার গুগল সার্চে আলাদা করে বর্ধমান ইউনিভার্সিটি লিখে সার্চ দিলে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব ওয়েবসাইটের (www.buruniv.ac.in) নীচে নীল অক্ষরে লেখা রয়েছে, ‘সাইট ইজ আন্ডার মেনটেনেন্স’। সঙ্গে সবুজ রঙে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞপ্তি, অনলাইন ফর্ম পূরণ ও মানবসম্পদ বিভাগের তথ্য ওই সাইট থেকে জানা যাবে। তবে চার-পাঁচ ঘণ্টা পরে ওয়েবসাইটটি পুরনো অবস্থায় ফেরত আসে। বুধবার বর্ধমান থানায় তাঁদের ওয়েবসাইট হ্যাক হয়েছে বলে অভিযোগ দায়ের করছেন রেজিস্ট্রার দেবকুমার পাঁজা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সিস্টেম ম্যানেজার বিপ্লব সরকার বলেন, ‘‘বিষয়টি আমাদের চিন্তায় ফেলেছে। এর আগে রাজ কলেজের ওয়েবসাইট হ্যাক হয়েছে। এ বার আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট হ্যাক হল। এমন সময়ে হল, যখন বিশ্ববিদ্যালয়ের অনলাইন ফর্মপূরণ চলছে।’’
কয়েক দিন আগেই কালনা থেকে হোয়াটস অ্যাপের মাধ্যমে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের বিএডের প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়ে যায়। ওই দিনের পরীক্ষাও বাতিল হয়ে যায়। গত জানুয়ারিতে রাজ কলেজের ওয়েবসাইটও ‘হ্যাক’ হয়ে গিয়েছিল। সাইট খুললেই দেখা যাচ্ছিল পাকিস্তানের পেশোয়ারের এক স্কুলে জঙ্গিহানার প্রতিবাদে সাইটটি হ্যাক করা হয়েছে। হ্যাকারের নামও দেওয়া ছিল জালিম। জেলা পুলিশে অভিযোগও করেছিলেন কলেজের অধ্যক্ষ। তবে কীভাবে হয়েছিল, কারা করেছিল তা জানা যায়নি। এ দিন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ থানায় অভিযোগ করার পাশাপাশি সিআইডি (সাইবার দমন শাখা)-কেও বিষয়টি চিঠি দিয়ে জানিয়েছে। বর্ধমান জেলা পুলিশও জানিয়েছে, তাঁরা বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের সাইট হ্যাকের বিষয়টি সিআইডিকে জানিয়েছেন।
কিন্তু সপ্তাহ পেরিয়ে যাওয়ার পরেও সিআইডি বা পুলিশ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে জানাতে পারেনি, কার বা কোন সংস্থা এই ওয়েবসাইটটি হ্যাক করেছে। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার সন্ধ্যায় কেন্দ্রীয় সরকারের সাইবার-সুরক্ষা শাখার এক কর্তা ই-মেল মারফত বেশ কিছু তথ্য জানতে চেয়েছেন। তার মধ্যে ওয়েবসাইটটি ‘লগ-ইন’ কারা, কারা করত, ‘লগ-ইন’ অবস্থায় কতক্ষণ সাইটটি খোলা থাকত তা জানতে চাওয়া হয়েছে। বিপ্লববাবু বলেন, “কেন্দ্রের ওই সংস্থাকে আমরা চিঠি দিয়ে কিছুই জানাইনি। তাঁরাই জানতে পেরে আমাদের বিস্তারিত জানতে চেয়েছেন। সব তথ্য আমাদের কাছে নেই। সে জন্য ওয়েবসাইটির প্রস্তুতকারক সংস্থার সাহায্য চাওয়া হয়েছে।”
ওয়েবসাইটটির পুরো প্রক্রিয়াতে চালু হত এখনও কতদিন সময় লাগবে? বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই কর্তা বলেন, “ফের হ্যাক হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে, সে কথা মাথায় রেখে আমরা ধীরে চলো নীতি নিয়েছি।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy