Advertisement
৩০ এপ্রিল ২০২৪
Juice of Date

শীতে ভাটা, খেজুর রসের মান কমায় আক্ষেপ

শিউলিরা জানান, ঠান্ডা যত বেশি হয় রসের পরিমাণ ও স্বাদ তত ভাল হয়। তাঁদের আক্ষেপ, কিন্তু সেই শীত কই! ডিসেম্বরে মাঝে কয়েক দিন শীত পড়লেও, চলতি বছরের জানুয়ারির এখনও পর্যন্ত খুব একটা ঠান্ডা নেই।

পাটালি বিক্রি। বুদবুদের পন্ডালী এলাকায়।

পাটালি বিক্রি। বুদবুদের পন্ডালী এলাকায়। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কাঁকসা শেষ আপডেট: ০৯ জানুয়ারি ২০২৪ ০৮:৪৮
Share: Save:

শীত পড়লেই কদর বাড়ে খেজুর গুড়ের। বাজার ছেয়ে যায় নলেন গুড়ের নানা মিষ্টিতে। ঘরে ঘরে তৈরি হয় নানা ধরনের পিঠে। সময় মতো বাজারে এই গুড় পৌঁছে দিতে শীতের শুরুর অনেক আগে থেকেই প্রস্তুতি শুরু করে দেন শিউলিরা। তবে এ বছর কড়া শীত না পড়ায়, রসের পরিমাণ, গুণগত মান— সবই কম হচ্ছে বলে দাবি কাঁকসা, বুদবুদ এলাকার শিউলিদের। ক্রেতারাও জানাচ্ছেন, আগের মতো গুড়ের স্বাদ-গন্ধ নেই।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কাঁকসা, বুদবুদ এলাকায় খেজুর রস সংগ্রহ করতে মূলত আসেন মুর্শিদাবাদ, নদিয়া, বীরভূম থেকে। এ ছাড়া পূর্ব বর্ধমান থেকে কাঁকসায় কয়েক জন শিউলি আসেন। সাধারণত কার্তিক মাসের শেষ দিক থেকে তাঁরা এলাকায় চলে আসেন। শিউলিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গিয়েছে, ডিসেম্বর মাসের শুরু থেকে শীত যখন পড়তে শুরু করে তখন থেকে খেজুর রস সংগ্রহের কাজ শুরু করেন তাঁরা। সেই কাজ চলে মার্চের প্রথম দিক পর্যন্ত। মূলত এই চার মাস ঘরবাড়ি ছেড়ে থাকেন।

শিউলিরা জানান, ঠান্ডা যত বেশি হয় রসের পরিমাণ ও স্বাদ তত ভাল হয়। তাঁদের আক্ষেপ, কিন্তু সেই শীত কই! ডিসেম্বরে মাঝে কয়েক দিন শীত পড়লেও, চলতি বছরের জানুয়ারির এখনও পর্যন্ত খুব একটা ঠান্ডা নেই। ঠান্ডা কম হলে খেজুর রস সাদা ফ্যানার মতো হয়ে যায়, যা গুড় তৈরির পক্ষে আদর্শ নয়। কাঁকসার পাথরডিহা এলাকায় প্রায় ১০০টি গাছ থেকে খেজুর রস সংগ্রহ করছেন বুদবুদের কলমডাঙা গ্রামের হাসিবুল মণ্ডল। তিনি জানান, গাছ লিজ়ে নিতে হয়। প্রতিটি গাছের জন্য মালিকপক্ষকে এক কেজি করে খেজুর গুড় দেওয়া হয়। আবার অনেক জায়গায় প্রতি গাছ পিছু ১০০ টাকা করে দিতে হয় মালিকপক্ষকে। একটি গাছ থেকে ১৫ থেকে ২০ বার রস সংগ্রহ করা যায়। গড়ে প্রতিদিন প্রায় ২০ কেজির মতো খেজুর গুড় বিক্রি করেন তিনি। কেজি প্রতি ১২০ টাকা করে খেজুর গুড় বিক্রি করা হয়। তা ছাড় পাটালিও তৈরি করেন তিনি। পাটালি কেজি ১০০ টাকা। তবে এখনও পর্যন্ত খুব ঠান্ডা না পড়ায় খেজুর রসের পরিমাণ কমে যাচ্ছে বলে দাবি তাঁর। তিনি বলেন, “চার মাসের এই কাজে অনেক পরিশ্রম করতে হয়। কাজেই আবহাওয়া অনুকূল না থাকলে আমাদের রুজি-রোজগারেও টান পড়বে।” বুদবুদের সোঁয়াই এলাকায় নদিয়া থেকে এসেছেন শেখ লালন। তিনিও বলেন, “ডিসেম্বরের মাঝে এক বার ভাল ঠান্ডা ছিল। সে সময়ে খেজুর রসের পরিমাণ ভাল মিলছিল!”

শিউলিরা জানান, আবহাওয়া অনুকূল থাকলে সব খরচ বাদ দিয়ে এই চার মাসে গড়ে এক লক্ষ টাকার মতো লাভ হয়। তাঁদের দাবি, এখনও পর্যন্ত খুব একটা লাভের মুখ দেখতে পাননি। তবে এখনও ঠান্ডা পড়ার সময় রয়েছে। সেই অপেক্ষায় রয়েছেন হাসিবুল মণ্ডল, শেখ লালনদের মতো আরও অনেক শিউলি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Kanksa jaggery
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE